এক.
দাদার কাছে শুনেছি, গাভিন বাঘের দুধ দুইয়ে-তবেই
পাহাড়ের পত্তন নিয়েছিল তার দাদা। অথচ আজ
আমি নাকি এই পাহাড়ের ওয়ারিশ নই।
ঘোষিত হয়েছে সরকারি ফরমার। পাহাড়ের ভূমিপুত্র নাকি
পাহাড় না দেখা অনিচপুরের কোনো জমিদার।
এই ঘোষণা মানতে পারেনি চলেশ আর পিরেন
তাইতো তাদের রক্ত শুষে পোয়াতি হলো আটখুড়ে বাইদ।
উৎস আর রাত্রি বাবার সমাধিতে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে
ভাবে, ইকোপার্ক কি মানুষের রক্তের চেয়ে লাল?
দুই.
তফনে গিঁট দিয়ে আনারস ক্ষেতের ভেতরে বসে
থোরা চুলকাতে চুলকাতে দাদা বলে, শহরে যাবে
আনারস আর লেবুর চালান। এবার ওয়ানগালা
জমবে খুব। আমি খুশিতে জিলজিলা হয়ে বলি,
আমিও শহরে যামু। হুকো টেনে খুকখুক কেশে
দাদা দেখায়, মিচিকশার বুকের মতো উঁচু ওই টিলা
শহর কি তার চেয়ে পেল্লাই আর সুন্দর?
শিয়ালমতি আর ধুতরা ফুলের ইশারায় শহর কি ডাকে?
ওই যে শুয়ে শুয়ে আছে শহর না দেখা তোর বাবা
কী তফাৎ হবে শহুরে বাবু যখন এসে শোবে তার পাশে?
কী তফাৎ করবি সাংসারেক আর অসাংসারেকে?
জীবন পাহাড়েও সবুজ। চোখ মেলে-না মেলে দেখে যা।
তিন.
শহুরে বাবুরা এসে সকাল থেকে রোদে ঘেমে টিলায় চড়ছে
সুখে থাকা মানুষগুলোও কি তবে টিলার মতো বুকে দুঃখ পুষে?
লেবুর চালানের সাথে আমি যে শহরে যেতে চেয়েছিলাম
সে মানুষগুলো তবে কি সুখে পাহাড়ে আসে?
ওয়াচ টাওয়ারে চড়ে কোন অচিন দুঃখ ছুঁতে চায়?
আলগোছে কোন দুঃখ ওড়ায় বাউলা বাতাসে?
ঝুলেপড়া গতরের চামড়ার মতো দাদির আফসোস ঝরে পড়ে।
খয়ে যাওয়া দালানে ত্যাকত্যাকে মাটি লেপতে লেপতে কয়,
ক্যামন করে শহুইর্যা মানুষেরা ঘর ছাইড়া পালায়?
বাংলাদেশ সময়: ১২২৯ ঘণ্টা, জুলাই ০৭, ২০১৭
এসএনএস