এমিলি ডিকিনসন (১৮৩০-১৮৮৬) প্রখ্যাত মার্কিন কবি। প্রায় আঠারোশো কবিতার মধ্যে মাত্র ডজনখানেক কবিতা তার জীবদ্দশায় মুদ্রিত হয়েছিল।
১.
বৃষ্টি যেমন শব্দ তুলে গলে পড়ে
তেমনি সুরে ঝরে গিয়ে থামল যখন
জানতে পারলাম বর্ষা নয়
সে বাতাস ছিল-
যখন এগিয়ে গেল যেন জলতরঙ্গ
উড়িয়ে নেওয়ার সময়ে সে শুকনা বালির ঝড় --
দূর সমতলে হারাল যেদিন
দিগন্ত জুড়ে ঝাঁকে ঝাঁকে
এগিয়ে যাওয়ার শব্দ ভেসে এল
উথলে উঠল কুয়ার জল, পুকুর-নদী উপচে পড়ল সুখে
মন্দমুধুর সুর-বাতাসে ভরে গেল পথ--
পাহাড় খুলে বানের জলে ভাসিয়ে দিল
মাঠের পরে মাঠ --
সমুদ্রতে উত্তাল করে ঢেউ
মধ্যখানে তুলল ভীষণ ঝড়
এরপর
মেঘে মেঘে ঘূর্ণি তুলে
চলে গেল দূরে খুব দূরে
যেন সে ইলিয়াস পয়গম্বর
২.
ঘরের চাল ধুয়ে গড়িয়ে পড়ছে
যে মধুর বৃষ্টিজল
উদাস করা চোখে সে হৃদয়হারা–
নিষ্পাপ, অবাক, নিষ্পলক
আমাদের মন থেকে কেড়ে নিল মন--
কণ্ঠজোড়া ঝড় তার
অনুভূতিগুলোকে নিভিয়ে দিয়ে
নি:শেষ করে বয়ে চলে গেল-
হার মেনে নিল জয়—
আর আবেগের মাথায় চড়ল হঠাৎ রঙিন মুকুট
৩.
বাতাস ঢেউ খেলে যায় ঘাসের বুকে
ভীষণ ভয়াল শব্দ তুলে ধীরে
সে একবার পৃথিবী আর একবার
আকাশের দিকে ছুড়ে ফেলে ভয়
গাছ থেকে খসে পড়া অজস্র পাতা
ছড়িয়ে ছিটিয়ে হারিয়ে যাচ্ছে
পথের ধুলারা নিজেদের দু’হাতে
নিজেদের তুলে ছুড়ে ফেলছে পথ
গাড়িগুলো যত তোড়জোড়ে চলে
তত ধীরে বিদ্যুত চমকায়
তার সে আলোয় ভাসে পাখির
হলুদ ঠোঁট আর ধূসর মলিন নখ
পাখিরা তাদের দুয়ার বন্ধ করে দেয়
ঘরের পশুরা ঘরে ফেরে
তারপর এক ফোঁটা দানব বৃষ্টি
যেন কোন হাত দিয়ে এতকাল বাঁধা ছিল
হঠাৎ খুলে তার স্রোতের জলে
আকাশ ভেসে গেছে
কেবল গাছের আড়ালে আমার পিতার ঘর
তার চোখে পড়েনি
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩২ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০১৭
এসএনএস