ঢাকা: নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রীর নিজের মালিকানাধীন বিজয় কিবোর্ড তার মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে চাপিয়ে দেওয়া অনৈতিক এবং বেআইনি।
বুধবার (১৮ জানুয়ারি) এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন গণতন্ত্র মঞ্চের এই সমন্বয়ক।
মান্না বলেন, মন্ত্রী সরকারের কাছে কত টাকায় এটি (বিজয়) বিক্রি করেছেন তা প্রকাশ করা হয়নি। এভাবে স্মার্টফোনে কোনো অ্যাপ প্রি–ইনস্টল থাকা ব্যবহারকারীর জন্য চরম নিরাপত্তা হুমকি।
আমদানিকৃত এবং স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত সব অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোনে বিজয় কি-বোর্ড ব্যবহার করার নির্দেশের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে মান্না বলেন, জনগণের তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যেই বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) দিয়ে এই নির্দেশনা দিয়েছে স্বৈরাচার সরকার।
তিনি বলেন, সরকার বিজয়ের সঙ্গে ইন্টিগ্রেটেড কোনো ম্যালওয়্যার ফোনে ঢুকিয়ে দিলে তা ফোনের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিতে পারে। এভাবে তারা ব্যবহারকারীর সব বিষয়ের ওপর নজরদারি করতে পারে। ফেসবুকের মতো সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড এমনকি ব্যক্তির ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, ক্রেডিট কার্ডের নিয়ন্ত্রণও চলে যেতে পারে তাদের হাতে। বিজয় কিবোর্ড ব্যবহার না করলেও ইনস্টল করলেই ম্যালওয়্যার ঢুকে যাবে।
মান্না বলেন, সরকার ইসরায়েলসহ বিভিন্ন দেশ থেকে নজরদারির প্রযুক্তি কিনছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে এক বছর আগে সরকার বিরোধীদের তথ্য হাতিয়ে নিতেই বিজয় ইনস্টল করার নির্দেশ জারি করেছে। এটি জনগণের সাংবিধানিক অধিকার পরিপন্থী। অসাংবিধানিক সরকার দেশের জনগণের সব সাংবিধানিক অধিকার হরণ করে ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছে। অবৈধ ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখতে এখন নানা ফন্দিফিকির করছে।
অবিলম্বে বিটিআরসির বিজয় ইন্সটলের নির্দেশনা বাতিল করার দাবি জানিয়ে মান্না বলেন, কোনো মতলববাজি করে লাভ হবে না। বর্তমান ক্ষমতাসীনদের দেশের জনগণ যেমন বিশ্বাস করে না, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও এই সরকার ঘৃণিত, স্বৈরাচার হিসেবে স্বীকৃত।
বিটিআরসি গত শুক্রবার এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দেয় মোবাইল ফোন আমদানিকারক ও স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত প্রতিষ্ঠানগুলোকে। এতে বলা হয়, আমদানিকৃত বা আমদানিতব্য ও স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত সব এন্ড্রয়েড স্মার্ট মোবাইল হ্যান্ডসেট কমিশন থেকে বাজারজাতকরণের অনুমতি নেওয়ার আগে সব অ্যান্ড্রয়েড/স্মার্ট মোবাইল হ্যান্ডসেটে সরবরাহকৃত বিজয় অ্যান্ড্রয়েড এপিকে ফাইল প্রি-ইনস্টল করে কমিশনে তা প্রদর্শন করতে হবে। অন্যথায় উক্ত মোবাইল হ্যান্ডসেটের বাজারজাতকরণের জন্য কমিশন থেকে অনাপত্তি দেওয়া হবে না।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০২৩
এমকে/আরএইচ