ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: বিএনপি বিদেশি প্রভুদের মদদে ক্ষমতায় যাওয়ার দুঃস্বপ্ন দেখছে বলে মন্তব্য করেছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
সোমবার (২৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিসন্ত্রাসের বিচার দাবিতে এ সভার আয়োজন করা হয়।
এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন- সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, সাবেক পররাষ্ট্রসচিব অলিউর রহমান প্রমুখ।
মন্ত্রী বলেন, মির্জা ফখরুল বলেছিলেন পাকিস্তান আমল ভালো ছিল। আমার প্রশ্ন কোন সূচকে পাকিস্তান ভালো ছিল? সেখানেতো কোনো গণতন্ত্রই ছিল না। বেসিক ডেমোক্রেসি ছিল। আরেকজন ভদ্রলোক গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, বাংলাদেশ বাই চান্স স্বাধীন হয়েছিল। এদেশে ভাষা আন্দোলন হয়েছে, ছয় দফার আন্দোলন হয়েছে, সেই সূত্র ধরে বঙ্গবন্ধুকে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দিয়ে ফাঁসি দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। এদেশে ৬৯-এ গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। এতো সব প্রমাণ কী সাক্ষ্য দেয় না স্বাধীনতার প্রস্তুতি কবে থেকে ছিল? তাদের আজ কষ্ট একটাই যে তাদের স্বাদের পাকিস্তান এখন একটি ব্যর্থ বিপর্যস্ত রাষ্ট্র।
তিনি বলেন, আজ তারা হঠাৎ ঘুম থেকে উঠে আন্দোলনের নামে যা করছে তা কখনোই কাজে আসবে না। বিদেশি শক্তিরা তাদের একটু বেশি মদদ দিচ্ছে। এই মদদে বেশি কিছু হবে না। কয়েকদিন একটু হাঁকডাক করা যায়। তারা যদি সংবিধান বিশ্বাস করে তাহলে তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ফিরে আসবে। সংবিধানের বাইরে কিছু করার সুযোগ নেই। এ সময় ট্রাইব্যুনাল গঠন করে অগ্নিসন্ত্রাসের বিচার করার দাবিকে সমর্থন করেন তিনি।
মোজাম্মেল হক বলেন, বাঙালি জাতির ইতিহাস গৌরবের ইতিহাস। যুগে যুগে বহু শাসক গোষ্ঠী বাঙালিদের শোষণ করেছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতিকে একত্রিত করেছিলেন এবং ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম’ ঘোষণা করে বাঙালি জাতির মুক্তির পথ রচনা করেছিলেন। এই ঘোষণার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে শিক্ষক, কৃষক, ছাত্র, কামার, কুমার থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী, আইনজীবীসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল মুক্তিযুদ্ধে।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সর্বোচ্চ জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছিল। তিনি যুদ্ধপরাধীদের বিচারের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। প্রায় ১২ হাজার যুদ্ধপরাধীকে বঙ্গবন্ধু কারাগারে বন্দি করেছিলেন এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে বিচারের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর হত্যার মধ্য দিয়ে খুনি মোশতাকের ও জিয়ার নেতৃত্বে সেই ধারা আর অব্যাহত থাকেনি। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে তারা আবার দেশে সাম্প্রদায়িকতার বিকাশ ঘটিয়ে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা ও অসাম্প্রদায়িক বাংলার স্বপ্ন ধূলিসাৎ করে দিয়েছিল। আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে জয়ী করতে তিনি আহ্বান জানান।
শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, বিএনপির ইতিহাস, প্রতিষ্ঠা সন্ত্রাস দিয়েই। জিয়া শুধু বঙ্গবন্ধুর খুনিই ছিলেন না, তিনি ছিলেন বঙ্গবন্ধু হত্যার চাবিকাঠি। এই জিয়ার নেতৃত্বে যে দল প্রতিষ্ঠা হয়েছিল সেই দল অগ্নিসন্ত্রাস করবে এটাই স্বাভাবিক। জিয়াকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তারাই বলে যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী। মুক্তিযুদ্ধে জিয়া একজন অনুপ্রবেশকারী। বিএনপির ইতিহাস হচ্ছে সন্ত্রাসের ইতিহাস, তাদের দলের মানুষরা সন্ত্রাস করবে না তো কী করবে।
ভুক্তভোগী সালাহউদ্দীন ভূঁইয়া বলেন, আমার চেহারাও আপনাদের মতো ছিল। আর এখন আমাকে দেখে অনেকে ভয় পায়। আজকের এদিনে যাত্রাবাড়ীতে বোমার বিকট শব্দে আমাদের গাড়ি মোমের মতো গলে যায়। আমার চেহারা পুড়ে যায়। আমি সাধারণ চাকরিজীবী ছিলাম। আমি বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিসন্ত্রাসীদের বিচার চাই।
বাংলাদেশ সময়: ২০০১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০২২
এসকেবি/আরবি