ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

যা রয়েছে ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার জীবনীতে 

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৫৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৩
যা রয়েছে ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার জীবনীতে 

ঢাকা : ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা ছিলেন একজন বাংলাদেশি আইনজীবী ও রাজনীতিবিদ।  

তার জন্ম ১৯৪৩ সালের ৬ জানুয়ারি, মৃত্যু ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩।

 

তিনি ২০১২ সালে বিএনপি থেকে পদত্যাগ করেন। পদত্যাগের সময় তিনি দলটির ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ সরকারের যোগাযোগ মন্ত্রী ও তথ্যমন্ত্রী ছিলেন। ১৯৯৭-৯৮ সালের সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ছিলেন তিনি।

রাজনীতিক নাজমুল হুদা

১৯৭৭ সালে জিয়াউর রহমান জাগো দল গঠন করলে নাজমুল হুদা জাগো দলে যোগ দেন। ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) গঠিত হলে প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হন এবং তিনি ছিলেন দলের সর্বকনিষ্ঠ স্থায়ী কমিটির সদস্য। ১৯৯১ সালে বিএনপি সরকার গঠন করলে তিনি তথ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ সরকারের যোগাযোগ মন্ত্রী ছিলেন। ১/১১ এর পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় তার বিরুদ্ধে তিনটি দুর্নীতির মামলা হয়েছিল। ২০১০ সালে ২১ নভেম্বর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া তাকে দল থেকে বহিষ্কার করেন। তখন তিনি বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। বহিষ্কৃত হলেও তিনি বিএনপির দলীয় কাজ করতে থাকেন এবং ২০১১ সালের ৫ এপ্রিল তার সদস্য পদ ফিরিয়ে দেওয়া হয়। অবশেষে ২০১২ সালে ৬ জুন নাজমুল হুদা বিএনপি থেকে পদত্যাগ করেন।

১০ আগস্ট ২০১২ সালে নাজমুল হুদা ও আবুল কালাম মিলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট (বিএনএফ) নামে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করেন। কিন্তু কয়েক মাস পরে আবুল কালাম তাকে বিএনএফ থেকে বহিষ্কার করেন। ২০১৪ সালের ৭ মে মাসে তিনি বাংলাদেশ জাতীয় জোট নামে একটি জোট গঠন করেন। ২১ নভেম্বর তিনি বাংলাদেশ মানবাধিকার পার্টি নামে দল গঠন করেন। ২০ নভেম্বর ২০১৫ সালে হুদা তৃণমূল বিএনপি নামে আরও একটি নতুন দল গঠন করেন।

পারিবারিক জীবন:

নাজমুল হুদা ব্যারিস্টার সিগমা হুদাকে বিয়ে করেছেন। তাদের দুটি মেয়ে অন্তরা সামিলা ও শ্রাবন্তী আমিনা রয়েছেন।

অভিযোগ এবং দোষী সাব্যস্ত

২১ মার্চ ২০০৭ তারিখে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) হুদাকে অভিযুক্ত করে একটি মামলা দায়ের করে, যখন তিনি ২০০১-২০০৬ সময়ে যোগাযোগ মন্ত্রী ছিলেন, ব্যবসায়ী মীর জহির হোসেনের কাছ থেকে ৩০ কোটি টাকার সরকারি কাজের চুক্তির বিনিময়ে ঘুষ হিসেবে ২.৪০ কোটি টাকা নিয়েছিলেন।

এ মামলায় তাকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আপিলের ভিত্তিতে, হাইকোর্ট ২০ মার্চ ২০১১ তাকে অভিযোগ থেকে খালাস দিয়েছিলেন, কিন্তু ১ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ খালাস বাতিল করেন। ২০১৭ সালের ৮ নভেম্বর, হাইকোর্ট কারাদণ্ডের মেয়াদ কমিয়ে চার বছর করেন। সুপ্রিম কোর্ট জানুয়ারি ২০১৮ সালে এ মামলায় হুদাকে আত্মসমর্পণ করতে বলেন। আত্মসমর্পণের পর হুদাকে ৭ জানুয়ারি ২০১৯ কারাগারে পাঠানো হয়। ২১ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট এ মামলায় তাকে জামিন দেন।

বিএনপির রাজনীতিবিদ এবং ক্যাব এক্সপ্রেস লিমিটেডের মালিক গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ ২৭ জুলাই ২০০৭ তারিখে হুদা এবং তার স্ত্রীর নামে ২০০৩ সালে দুটি মারুতি গাড়ির জন্য চাঁদাবাজি করার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন। ঢাকার একটি আদালত ১২ জুন ২০০৮ এ মামলায় হুদাকে ১২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন। কিন্তু ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে হাইকোর্ট নিম্ন আদালতের রায় বাতিল করে তাকে খালাস দেন।

৩ এপ্রিল ২০০৮-এ সম্পদের তথ্য গোপন করা এবং অবৈধভাবে সম্পদ আহরণের অভিযোগে হুদাকে ১২ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একটি আপিলের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট ২০১০ সালের আগস্টে এ মামলা থেকে তাকে খালাস দেন। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট সেপ্টেম্বর ২০১৫ সালে বেকসুর খালাসের রায় বাতিল করেন।

১৮ জুন ২০০৮-এ দুদক হুদা ও তার স্ত্রীর নামে একজন ঠিকাদারের কাছ থেকে ছয় লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে একটি মামলা করে। ২০১৬ সালে হাইকোর্ট মামলাটি বাতিল করলেও ২০১৭ সালে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় বাতিল করেন। একটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৮ জুলাই ২০১৯ হাইকোর্ট দুদককে চার মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে বলেন।

৯ জানুয়ারি ২০২০ দুদক হুদা এবং তার পরিবারকে অভিযুক্ত করে যুক্তরাজ্যে প্রায় ৬.৭৩ কোটি টাকা পাচারের জন্য দুটি দুর্নীতি মামলা দায়ের করে।

এসব অভিযোগে ১০ মার্চ তাদের জামিন দেওয়া হয়। তার আত্মজীবনীতে উঠে এসেছে এসব তথ্য।  

রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টার দিকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

বাংলাদেশ সময়: ০১৫০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৩
টিএ/এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।