ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

রক্ত দিয়ে সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করতে শিক্ষা দেয় মহান একুশে: জি এম কাদের

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২৩
রক্ত দিয়ে সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করতে শিক্ষা দেয় মহান একুশে: জি এম কাদের

ঢাকা: জাতীয় পার্টি (জাপা) চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জি এম কাদের বলেছেন, একুশে ফেব্রুয়ারি আমাদের অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে শিক্ষা দিয়েছে। প্রয়োজনে ত্যাগ স্বীকার করতে হবে।

রক্ত দিয়ে সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করতে শিক্ষা দেয় মহান একুশে।

তিনি বলেন, সুশাসন ও ন্যায় বিচার ভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে অনুপ্রেরণা যোগায় একুশে ফেব্রুয়ারি। অন্যায়কে পরাজিত করতেই আমরা রাজনীতি করবো।

মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বনানীর কার্যালয় মিলনায়তনে জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টি আয়োজিত আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

জি এম কাদের বলেন, ১৯৫২ সালে অন্যায়ভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ভাষা বাংলাকে রাষ্ট্র ভাষার মর্যাদা দেওয়া হয়নি। এর প্রতিবাদে আমাদের রাষ্ট্র ভাষা আন্দোলন হয়েছিল। ভাষা আন্দোলনের সাফল্যই প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে। ভাষা আন্দোলনের অনুপ্রেরণায় আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় এসেছে। ভাষা আন্দোলনের অনুপ্রেরণায় আমরা একটি স্বাধীন ও স্বার্বভৌম রাষ্ট্র পেয়েছি। অন্যায়ের প্রতিবাদে রক্ত দেওয়ার শিক্ষাও আমাদের দিয়েছে একুশে ফেব্রুয়ারি। স্বাধীনতা সংগ্রাম হয়েছিল মুক্তির জন্য। আমরা স্বাধীন হয়েছি কিন্তু মুক্তি পাইনি।

তিনি বলেন, আমাদের সংবিধানে লেখা আছে রাষ্ট্রভাষা বাংলা। কিন্তু, দুর্ভাগ্যজনকভাবে তা দীর্ঘ সময়ে বাস্তবায়িত হয়নি। স্বাধীনতার পর যারা নির্বাচিত হয়েছেন, তারা সর্বস্তরে বাংলাকে বাস্তবায়িত করতে ব্যর্থ হয়েছে। পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ১৯৮৭ সালের ৮ মার্চ সংসদে সব ক্ষেত্রে বাংলা ভাষাকে প্রচলিত করতে আইন পাস করেন।  

তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশের নেতারা জনগণের প্রত্যাশার কথা বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় যান। ক্ষমতায় যাওয়ার পর আর জনগণের দিকে তাকায় না। জনগণের কাছে দেওয়া প্রতিশ্রুতি ভুলে যান। আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি হচ্ছে, নেতারা ক্ষমতার বাইরে থাকতে এক কথা বলেন আবার ক্ষমমতায় গিয়ে আরেক কথা বলেন। দেশের মানুষ যে প্রত্যাশা নিয়ে প্রতিনিধি নির্বাচন করেন, সেই প্রত্যাশা পূরণ হয় না। যারা পল্লীবন্ধুর বিরুদ্ধে আন্দোলন করে পরে রাষ্ট্র ক্ষমতায় গিয়েছে, তারা সত্যিকার অর্থে গণতন্ত্র ও সুশাসন দিতে ব্যর্থ হয়েছে।

জি এম কাদের বলেন, দেশে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। গণতন্ত্রের কথা বলে এক সরকার থেকে অন্য সরকার আসছে কিন্তু গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করতে কারো উদ্যোগ নেই। প্রজাতন্ত্র মানেই প্রজাদের তন্ত্র। প্রজারা নির্বাচনের মাধ্যমে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করবেন, প্রতিনিধিরা প্রজাদের ইচ্ছে মতো দেশ চালাবেন। তাই সাধারণ মানুষকে কথা বলার সুযোগ দিতে হবে। সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনা করা অধিকার নয়, এটা সাধারণ মানুষের দায়িত্ব। সাধারণ মানুষের ইচ্ছে মতো দেশ চালাতে ব্যর্থ হলে আবার নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিনিধি পরিবর্তন করবেন দেশের মানুষ। এটাই গণতন্ত্র।  

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জাতীয় পার্টি মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদই আইন করে সর্বস্তরে বাংলা ভাষা প্রচলনের ব্যবস্থা করেছিলেন।

তিনি বলেন, একুশের চেতনায় আমরা সব অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকবো। গণমানুষের জন্য আমরা সংসদে ও রাজপথে কথা বলবো। কোনো অন্যায়ের কাছে আমরা মাথা নত করবো না।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা বলেছেন, একুশের চেতনায় আমরা পল্লীবন্ধুর স্বপ্নের নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলবো।  

জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির সভাপতি ও জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা শেরিফা কাদেরের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন আহমেদের পরিচালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, প্রেসিডিয়াম সদস্য ফখরুল ইমাম, এস এম ফয়সল চিশতী, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, অ্যাডভোকেট মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, মোস্তফা আল মাহমুদ, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা হেনা খান পন্নি, নাজনিন সুলতানা, ভাইস চেয়ারম্যান আহসান আদেলুর রহমান আদেল, সালমা হোসেন, জাহাঙ্গীর আলম পাঠান, যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ রাজু।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মনিরুল ইসলাম মিলন, মাহমুদুর রহমান মাহমুদ, মাসরুর মাওলা, ভাইস চেয়ারম্যান নিগার সুলতানা রানী, নুরুন্নাহার বেগম, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মঞ্জুর হোসেন মঞ্জু, সাংগঠনিক সম্পাদক নির্মল চন্দ্র দাস, মো. হেলাল উদ্দিন, আনোয়ার হোসেন তোতা, মাহমুদা রহমান মুন্নি, কাজী আবুল খায়ের, মাখন সরকার, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মাসুদুর রহমান মাছুম, এম এ রাজ্জাক খান, মো. জহিরুল ইসলাম মিন্টু, আহাদ ইউ চৌধুরী শাহীন, গোলাম মোস্তফা, যুগ্ম সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মো. হেলাল উদ্দিন হেলাল, আজহারুল ইসলাম সরকার, জাকির হোসেন মৃধা, মাহমুদ আলম, সমরেশ মণ্ডল মানিক, ডা. সেলিমা খান, মীর সামছুল আলম লিপটন, কেন্দ্রীয় নেতা ফরিদা ইয়াসমিন, আব্দুস সাত্তার, মিনি খান, মোনাজাত চৌধুরী, ইলোরা ইয়াসমিন, মোতাহার হোসেন শাহীন, শামীম আহমেদ রিজভী, আলমগীর হোসেন, শাহিনারা সুলতানা রীমা, ইঞ্জিনিয়ার এলাহান উদ্দিন, মো. আসাদুল হক, নাজিম উদ্দিন ভূঁইয়া, মোহাম্মদ আলী।  

এছাড়া সভায় জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মোস্তফা জামান বাবু, জিয়াউর রহমান, রাজু চৌধুরী, মিরাজ মেহেদী, চম্পা মণ্ডল, সিরাজুম মনিরা, তামান্না চৌধুরী, লায়লাতুল কদর, লীন, বেলায়েত হোসেন সাজু, সালাউদ্দিন ববি, ওমর ফারুক সুজন, জাতীয় ছাত্র সমাজের সভাপতি আল মামুন, সাধারণ সম্পাদক মো. আশরাফ খান, মোটর শ্রমিক পার্টির সভাপতি মেহেদী হাসান শিপন, হকার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক রাশেদ মিজান, মহানগর নেতা রিয়াজ আহমেদ, আলাল আহমেদ ও খলিলুর রহমান খলিল।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২৩
এসএমএকে/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।