ঢাকা, শুক্রবার, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

স্বাধীন-সার্বভৌম দেশে অন্যদের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া আনন্দের নয়, লজ্জার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৬ ঘণ্টা, জুন ৫, ২০২৩
স্বাধীন-সার্বভৌম দেশে অন্যদের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া আনন্দের নয়, লজ্জার

ঢাকা: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমেরিকা আমাদের ওপর ভিসা নীতি দেয়, স্যাংশন দেয়। এটা আমাদের জন্য আনন্দের নয়, লজ্জার কথা।

স্বাধীন-সার্বভৌম একটি রাষ্ট্রে অন্য দেশ নিষেধাজ্ঞা দেয় শুধুমাত্র সেই দেশের সরকারের দুঃশাসন, দুর্নীতির কারণে। তাদের দুর্বৃত্তায়নের কারণে। এটা আমেরিকা দিয়েছে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে।

সোমবার (৫ জুন) বিকেলে রাজধানীর গুলশানে এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ‘বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান’ শীর্ষক এই সেমিনারের আয়োজন করা হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, জিয়াউর রহমান বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তার আগে এই দেশে এক দলীয় বাকশাল কায়েম হয়েছিল। সব দলকে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছিল। দেশের সব পত্রিকা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। সরকার নিয়ন্ত্রিত শুধুমাত্র চারটি পত্রিকা রেখেছিল। মানুষের মৌলিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল।

তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান মানুষের মত প্রকাশের সিদ্ধান্ত, মৌলিক অধিকার ও ভোটাধিকার এই জিনিসগুলো নিয়েই বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তার যে দর্শন বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদ, তা তিনি এনেছিলেন। জিয়াউর রহমান বলেছিলেন ‘গণতন্ত্রকে যদি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া যায়, তাহলে রাজনীতিতে শক্তিশালী রাজনৈতিক দল পাওয়া যায়’।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান একবারে তৃণমূল পর্যায় থেকে কাজ শুরু করেছিলেন। গ্রাম সরকার, স্বনির্ভর বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছিলেন। তার উদ্দেশ্যই ছিল, জনগণকে ক্ষমতায়িত করা। আজকের এই অবস্থানের ক্ষেত্রে জিয়াউর রহমান কিন্তু অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক।

তিনি বলেন, যখন পাকিস্তানি সৈন্যরা এদেশের মানুষের ওপরে নির্মম অত্যাচার বর্বরতা শুরু করল, তখন দেশের জনগণ দিশেহারা হয়েছিল। রাজনৈতিক নেতৃত্ব তখন ব্যর্থ হয়েছিল সুনির্দিষ্ট পর্যায়ে গিয়ে। সেদিন কিন্তু পথ দেখিয়েছিলেন একজন সৈনিক। একজন অখ্যাত মেজর। আমি এখানে কাউকে ছোট করতে চাইনি। কিন্তু জিয়াউর রহমানকে তো অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। তিনি মুক্তিযুদ্ধের জন্য স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন। ইট ইজ ট্রুথ। এটাতো ধ্রুব তারার মতো। এটা মিথ্যা বলে কীভাবে? তাকে কীভাবে মন থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা করে!

তিনি আরও বলেন, দেশে যখন সামরিক শাসন আসলো, যখন গণতন্ত্রকে ধ্বংস করা হলো, স্বৈরাচারী এসে গেল, তখন কিন্তু তারই উত্তরসূরী, একজন গৃহবধু জাতীয়বাদের পতাকা, বাংলাদেশের পতাকা, শহীদ জিয়ার সেই আদর্শের পতাকা নিয়েই মাঠে-ঘাটে বেরিয়ে পড়েছিলেন। দীর্ঘ ৯ বছর লড়াই সংগ্রাম করেছিলেন। তিনি সফল হয়েছিলেন গণতন্ত্রকে আবার ফিরে এনেছিলেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, এ দেশে রাজনৈতিক দলের দাবির প্রেক্ষিতে আমাদের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা এনেছিলেন। কিন্তু ২০০৯ সালে এই আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে ২০১২ সালে এই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে। আদালত বলেছিলেন, আরও দুই বার এই ব্যাবস্থায় ভোট করা যেতে পারে। কিন্তু তারা তা গায়ের জোরে বাতিল করেছে। এককভাবে ক্ষমতায় থাকার জন্য, এক দলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করার জন্য। সেদিন কিন্তু খালেদা জিয়া প্রেস কনফারেন্সে বলেছিলেন, এই তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের মধ্য দিয়ে দেশে দীর্ঘ স্থায়ীভাবে অনিশ্চয়তা ও অস্থিতিশীলতা ও সহিংসতার জন্ম দেওয়া হল। তা প্রমাণ হয়েছে, প্রতিটা নির্বাচনের আগে আমাদেরকে লড়াই করতে হয়। কীভাবে নির্বাচনে যাব, নির্বাচনে যাব কিনা।

তিনি বলেন, আজকে আওয়ামী লীগ সম্পূর্ণরূপে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। জনগণের আশপাশে তারা নেই। জোর করে ক্ষমতায় থাকার জন্য তারা সব সাংবিধানিক ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সেমিনার কমিটির আহ্বায়ক মো. ইসমাইল জবিউল্লাহর সভাপতিত্বে এবং বিএনপির প্রচার সম্পাদক ও সেমিনার কমিটি সদস্য সচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানীর সঞ্চালনায় এতে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশারফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান ও বেগম সেলিমা রহমান বক্তব্য দেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১৫৫ ঘণ্টা, জুন ৫, ২০২৩
টিএ/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।