ঢাকা, রবিবার, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

‘৭৫’র মতো অপরাধ করার স্বপ্ন দেখলে চোখ উপড়ে ফেলা হবে: নৌ প্রতিমন্ত্রী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০২৩
‘৭৫’র মতো অপরাধ করার স্বপ্ন দেখলে চোখ উপড়ে ফেলা হবে: নৌ প্রতিমন্ত্রী নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী

ঢাকা: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। এই স্বাধীনতা অর্জন-বঙ্গবন্ধুর দোষ এটুকুই।

এ কারণেই ১৫ আগস্ট। এ কারণেই ১৫ আগস্টের রক্তাক্ত ইতিহাস। আমাদের পরিষ্কার কথা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করার জঘন্য অপরাধে সাম্রাজ্যবাদী শক্তিরা নেতৃত্ব দিয়েছিল। এ ধরনের জঘন্য অপরাধ সংঘটিত করার যদি মিনিমাম কোনো স্বপ্ন দেখা হয় তাহলে সে চোখ উপড়ে ফেলা হবে। সেই হাত ভেঙে দেওয়া হবে‌ সেই হাত কেটে ফেলা হবে।

শুক্রবার (১৮ আগস্ট) দিনাজপুরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে দিনাজপুর প্রেসক্লাব আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী এ হুঁশিয়ারি দেন।

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে ৷

দিনাজপুর প্রেস ক্লাবের সভাপতি স্বরূপ বকশী বাচ্চুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলতাফুজ্জামান মিতা, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক গোলাম নবী দুলাল, দিনাজপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইমদাদ সরকার, দিনাজপুর চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এর সভাপতি রেজা হুমায়ূন ফারুক চৌধুরী ও সিভিল সার্জন বোরহানুল হক চৌধুরী।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান ও ভারতের জাতির পিতার বিষয়ে সেসব দেশে কোনো দ্বিমত নেই। তারা 'মূল স্পিরিটে' এক জায়গায় আছে। বাংলাদেশের তিনটি খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আছে। একটি হলো স্বাধীনতার ইশতেহার-যেটি স্বাধীনতার সংগ্রাম পরিষদের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছিল মার্চের ২ তারিখে। দ্বিতীয়টি স্বাধীনতার ঘোষণা- যেটি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব গ্রেপ্তার হওয়ার আগেই বাংলাদেশের ঘোষণা দিয়েছিলেন। তৃতীয়টি স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র-যেটি ১৭ এপ্রিল মেহেরপুরের মুজিবনগর অধ্যক্ষ ইউসুফ আলী পাঠ করেছিলেন। এগুলো হচ্ছে বেসিক বিষয়। এ জায়গাটায় যদি আমরা এক হই। আমরাতো বলি না আওয়ামী লীগ করতে। ৭৫এর খুনিরা ঘোষণাপত্রকে হত্যা করেছে, স্বাধীনতার ঘোষণাকে হত্যা করেছে।  

তিনি আরও বলেন, আজকে আমরা যারা আওয়ামী লীগ করি, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে আছি, আমাদের লড়াইটা সেই জায়গায়। আর যারা এর বিরুদ্ধে তাদের লড়াইটা ওই জায়গায়। খুব পরিষ্কার। আমাদের এ সংগ্রামটা চালিয়ে যেতে হবে। বেসিক জায়গাগুলো তারা টেনে ধরতে চায়। জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে আমাদের সংবিধান পাল্টে ফেলতে চেয়েছিল, পারেনি। সব রাজনৈতিক দলের হাত পা তখন বাঁধা ছিল। সামরিক আইনের মধ্যেও তিনি তা করতে পারেননি। খন্দকার মোস্তাক ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করেছিলেন। পরবর্তীতে সংবিধান বাতিল করে নতুন সংবিধান করার স্বপ্ন দেখেছিলেন, তিনি তা পারেননি। সেই সংবিধানকে মেনে নিয়ে জিয়াউর রহমান ইনডেমনিটি অ্যাক্ট সংবিধানে পঞ্চম সংশোধনী অন্তর্ভুক্ত করেছেন। জিয়াউর রহমান যা পারেননি; তার সন্তানরা আজকে বলছে সংবিধান পাল্টে ফেলবে। কত বড় সাহস। বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধারা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মানুষেরা কি মরে গেছে? বাংলাদেশে ফয়েজ আহমেদ,  এবিএম মুসা, গাফফার চৌধুরীর উত্তরসূরিরা কি  মরে গেছে? মরে যায়নি। এখনও কলম আছে‌। এখনো কলমের কালি শুকিয়ে যায়নি‌। এখনো মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অস্ত্র গর্জে ওঠে, এখনো মুক্তিযুদ্ধের চেতনা গর্জে  ওঠে । কাজেই এ ধরনের দুঃস্বপ্ন দেখার যে চিন্তাভাবনা সেগুলো বাদ দিতে হবে।  

তিনি বলেন, এ দেশে থাকতে হলে ঘোষণাপত্র মানতে হবে, স্বাধীনতার ঘোষণা মানতে হবে। তারপরে এ বাংলাদেশে রাজনীতি করার সুযোগ আছে। এর ব্যত্যয় হলে কোনো সুযোগ নেই। যারা সামরিক আইন জারি করে দেশ চালিয়েছে, হ্যাঁ না ভোট দিয়ে বাংলাদেশের ভোটাধিকার হরণ করেছে-তারা এখন আমাদেরকে গণতন্ত্রের কথা বলে। যারা বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পুনর্বাসন করেছে, চাকরি দিয়েছে,  তারা এখন বলে দেশে সুশাসন চাই, আইনের শাসন চাই। যারা বঙ্গবন্ধুর খুনিদের রাজনীতি করার সুযোগ দিয়েছে, তারা এখন বলে রাজনীতি করার পরিবেশ নেই।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, মির্জা ফখরুলকে কেউ কেউ প্রশ্ন করেছিল এত হাসিখুশি কেন? উনি বললেন, আমি দিবালোকের মতো দেখতে পাচ্ছি আমরা ক্ষমতায় আসতেছি। উনি দিবালোকের মতো দেখতে পাচ্ছেন। ' আমি বলি কেন খুশি? কুখ্যাত রাজাকারের ছেলে আজকে জাতীয় রাজনীতিতে নেতৃত্ব দিচ্ছে। এর থেকে আর কি পাওয়া হতে পারে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের যে উন্নয়ন তা পৃথিবীর দেশে দেশে স্বীকৃতি মিলেছে। শেখ হাসিনা শুধু বাংলাদেশের নেত্রী নন, আমরা গর্ব করি বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের নেতা আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথিবীর রাজনীতির নেতৃত্ব দেওয়ার সক্ষমতায় চলে গেছেন। বিশ্ব নেতৃত্ব তাকে সেভাবেই দেখে এবং শেখ হাসিনাকে সেভাবে দেখে বলেই আজকে বাংলাদেশকে নিয়ে এত বেশি চিন্তা ভাবনা এত বেশি মাথাব্যথা। বাংলাদেশের মানুষ এ ভূখণ্ডে আর কোনো রক্তপাত চায় না।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০২৩
এসকে/জেএইচ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।