সাভার (ঢাকা): ঢাকা জেলা উত্তর যুব মহিলা লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদ দিতে হত্যা চেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তার মেহনাজ তাবাচ্ছুম মিশুর জন্য সুপারিশ করেছিলেন দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান। এ তথ্য জানিয়েছেন ঢাকা জেলা উত্তর যুব মহিলা লীগের সভাপতি তাসলিমা আক্তার লিমা।
রোববার (২০ আগস্ট) রাতে মিশুর বিষয়ে বাংলানিউজের কথা হয় লিমার সঙ্গে। এ সময় তিনি যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে বহিষ্কৃত মিশু ও ডা. এনামের ব্যাপারে এ তথ্য দেন।
জানা গেছে, ঢাকা জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিএস মিজানের আপন বোনের মেয়ে (ভাগ্নি) হওয়ায় বিভিন্ন সময় আওয়ামী লীগের মিটিং ও কর্মসূচিতে যোগ দিতেন মিশু। এই সুযোগে তিনি ঢাকা জেলা উত্তর যুব মহিলা লীগের কমিটিতে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদ পান। অবশ্য তার এই পদ পাওয়া নিয়ে স্থানীয় নেতাকর্মীদের আপত্তি ছিল। কিন্তু ঢাকা-১৯ আসনের (সাভার-আশুলিয়া) দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমানের সুপারিশে টিকে যায় মিশুর অবস্থান।
ঢাকা জেলা উত্তর যুব মহিলা লীগের সভাপতি তাসলিমা আক্তার লিমা বলেন, আমাদের প্রথমে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেখানে মিশুকে যুগ্ম আহবায়ক পদে রাখা হয়। এর তিন মাস পর পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদনের সময় হলে ডা. এনাম ভাই (ডা.এনামুর রহমান) কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে মিশুকে চূড়ান্ত করতে সুপারিশ করেন। কমিটিতে তাকে রাখার ব্যাপারে আমাদের নেত্রীদের মধ্যে আপত্তি থাকলেও এনাম ভাইয়ের কারণে রাখতে হয়েছে। ওই সুপারিশেই কেন্দ্রীয় কমিটি তার পদটি বহাল রেখে অনুমোদন দেয়।
তিনি আরও বলেন, মিশুর সাথে আমি এখন পর্যন্ত দুটি প্রোগ্রামে অংশ নিয়েছি। তার সম্পর্কে বিস্তারিত এতো কিছু জানিও না। তবে তার পদ পাইয়ে দিতে এনাম ভাই সেন্ট্রালে সুপারিশ করেছিলেন। তিনি নিজেই মিশুকে কমিটির পদে রেখেছেন।
মিশুর কমিটিতে থাকা প্রসঙ্গে ঢাকা জেলা উত্তর যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক কনক চাপা কনা বলেন, মেয়েটি রাজনীতিতে আহামরি অ্যাকটিভ ছিল না। মাঝে মধ্যে মিটিং মিছিলে দেখা যেতো। তার পদ পাওয়া নিয়ে প্রতিমন্ত্রীর কোনো সুপারিশ ছিল কিনা প্রশ্নের উত্তরে কনা বলেন, আমি আসলে এ বিষয়ে কিছু জানি না।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের সাবেক সভাপতি নাজমা আক্তার বলেন, আমি দায়িত্বে নেই। নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি গঠিত হয়েছে। কমিটি এ বিষয়ে ভালো বলতে পারবে। কে কাকে সুপারিশ করেছে আমার মনে নেই।
মিশুকে কমিটিতে রাখতে সুপারিশের বিষয়টি সম্পর্কে সংসদ সদস্য ডা. এনামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন বাংলানিউজের এ প্রতিবেদক। তার মোবাইল নম্বরে বেশ কয়েকবার ফোনও করা হয়। কিন্তু এনাম কল রিসিভ করেননি। বার্তা পাঠালেও তিনি উত্তর দেননি।
উল্লেখ্য, সাভারের এক স্কুলছাত্রীকে বিবস্ত্র করে ছবি তুলে অনৈতিক কাজে বাধ্য করা, শরীরে সিগারেটের ছ্যাঁকা ও তাকে পাঁচতলা ছাদ থেকে ফেলে হত্যা চেষ্টাসহ নানা অভিযোগে ঢাকা জেলা উত্তর যুব মহিলা লীগের ১ নম্বর যুগ্ম সম্পাদক মেহনাজ তাবাসসুম মিশুকে গত শনিবার (১৯ আগস্ট) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাকে সাত দিনের রিমান্ডে নিতে চেয়ে আবেদন করে পুলিশ।
হত্যাচেষ্টার ঘটনায় মিশুর সহযোগী আতিকুর রহমান আতিককেও আসামি করা হয়। মিশুর বাড়ি সাভার উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন শাহানাজ গার্ডেন এলাকায়। তিনি গ্রেপ্তার হওয়ার রাতেই তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়। বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের সভাপতি ডেইজি সারোয়ার ও সাধারণ সম্পাদক শারমিন সুলতানা লিলির সই করা বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০২৩
এসএফ/এমজে