ঢাকা: ক্ষমতা ছাড়লে ‘মারধর’ করা হবে এমন একটা ভয় সরকারের মধ্যে রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
শুক্রবার (২৫ আগস্ট) বিকেলে দলটির নয়াপল্টন কার্যালয়ে সামনে খালেদা জিয়ার মুক্তি, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন ও সরকার পতনের একদফা দাবিতে কালো পতাকা মিছিলের আগের সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, সরকারের ভেতর ধারণা সৃষ্টি হয়েছে, তারা ক্ষমতা ছাড়লে তাদের মারধর করা হবে, তাদের বাড়িঘরে হামলা হবে। ভয়ের কারণ নেই। বিএনপি গণমানুষের দল। আপনাদের (আওয়ামী লীগ) মতো দানবের দল নয়। আমাদের বিবেক বুদ্ধি আছে। তবে, যে অন্যায় অত্যাচার করেছেন এর জন্য দেশের ১৮ কোটি মানুষ আপনাদের ক্ষমা করবে কি না জানি না।
তিনি বলেন, আমরা ভাগ চাই না। ভোটের অধিকার চাই। নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে জনগণ আপনাদের ভোট দেবে না, এ বিশ্বাস আপনাদের (সরকার) মনে এলো কি করে? কারণ, আপনারা দেশের টাকা লুট করেছেন। দেশের তরুণ সমাজ আজ বেকার। ১০ লাখ কোটি টাকা লুট করেছেন। তা লুট না করে যদি দেশে শিল্প কারখানা করতেন তাহলে উল্টো বিদেশিরা আমাদের দেশে কাজ করতে আসত।
তিনি আরও বলেন, দেশের মানুষ আজ অর্ধাহারে কিংবা অনাহারে দিন কাটাচ্ছে। তারা আরেক দিকে অধিকার হারা। পুলিশ দিয়ে টিয়ার শেল ও গুলি করে আপনাদের ক্ষমতা রক্ষা করতে পারবেন না। পুলিশের দায়িত্ব জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দেওয়া। অথচ পুলিশ আজ লুটেরাদের পাহারা দিচ্ছে। চোর ডাকাতদের পাহারা দিচ্ছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, আমরা এখন আর মৃত্যুকে ভয় পাই না। মরণের শপথ নিয়ে মাঠে নেমেছি। জেলে নিয়ে গুলি করে বিএনপিকে দমন করা যাবে না। আইয়ুব-ইয়াহিয়াও নিরস্ত্র জনগণের কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়েছিলেন। বন্দুক তাক করে লাভ নেই। আমার ওপরও বন্দুক তাক করেছিলেন। ভোট চুরির জন্য আজ সারাবিশ্ব আপনাদের ধিক্কার জানাচ্ছে। জনগণের ক্ষোভ চূড়ান্ত পর্যায়ের যাওয়ার আগে ক্ষমতা থেকে কেটে পড়ুন, না হলে জনগণ আপনাদের ছাড়বে না।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আয়োজিত এ কালো পতাকা মিছিলের আগের সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম। ঢাকা দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক লিটন মাহমুদ ও আনম সাইফুল ইসলামের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য আরও দেন ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, মোহাম্মদ শাহজাহান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল।
বৃষ্টি উপেক্ষা করে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী এ কালো পতাকা মিছিলে অংশ নেন। বিকেল সাড়ে চারটায় নয়াপল্টন থেকে এ কালো পতাকা মিছিল শুরু হয়। এটি মতিঝিল, ইত্তেফাক, টিকাটুলি হয়ে দয়াগঞ্জ মোড়ে গিয়ে শেষ হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৫, ২০২৩
টিএ/এসআইএ/এমজে