ঢাকা, শনিবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

আগামী নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই হবে: দুদু

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৮ ঘণ্টা, আগস্ট ৩১, ২০২৩
আগামী নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই হবে: দুদু

ঢাকা: আগামী নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু।

তিনি বলেন, কেউ যদি মনে করে আগামী নির্বাচন আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর অধীনে হবে তাহলে তারা স্বপ্নের ঘোরে আছে।

রাস্তায় যান তাহলে বুঝতে পারবেন। মানুষ ভালো-মন্দ জিজ্ঞেস করে না। বলে এ সরকার যাচ্ছে তো।

বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরাম খা হলে বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরামের উগ্যোগে বিএনপি ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন উপলক্ষে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও শহীদ জিয়াউর রহমান শীর্ষক আলোচনা সভায় দুদু এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের অনন্য কৃতির মধ্যে একটি হচ্ছে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। এ দল তিনি এমন আদর্শিকভাবে তৈরি করেছেন যে মানুষের হৃদয়ে গেঁথে গেছে। এ দলকে মানুষ ভালোবাসে বলেই আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিতে ভয় পায়।

দুদু বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এমন একজন বরপুত্র যে সময় তাকে নিয়ে এসেছে। ১৯৭১ সালে শেখ মুজিবুর রহমান ছাড়াও আওয়ামী লীগের অনেক বড় বড় নেতা ছিল। কিন্তু কেউ স্বাধীনতার ঘোষণা দিতে সাহস করেনি। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে ঘোষণা করলেন আমি মেজর জিয়া বলছি, স্বাধীনতার ঘোষণা করছি। তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা করেছেন, যুদ্ধ করেছেন, আবার ফিরে এসে চাকরিতে জয়েন করেছেন। কিন্তু কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জাননি। তিনি রাজনীতির লোক না। কিন্তু তিনি যখন রাজনীতিতে এলেন তখন গণভোটের ব্যবস্থা করলেন, যা বর্তমান সরকার উঠিয়ে দিয়েছে। অনেকেই তাকে ইসলামি নেতা মনে করেন। তিনি ধর্মীয় মূল্যবোধের নেতা। তার সময় সংখ্যালঘুরা সবচেয়ে ভালো ছিল। তার ভালোবাসা সব ধর্মের লোকদের প্রতি ছিল। বাংলাদেশ যা কিছুর ওপর দাঁড়িয়ে আছে অর্থনীতি-শিক্ষা সবকিছু শহীদ জিয়ার হাতে গড়া।

ছাত্রদলের সাবেক এ সভাপতি বলেন, খালেদা জিয়া বিএনপির দ্বিতীয় পিলার। বাংলাদেশে দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে যদি কেউ নোবেল পায় সেটা খালেদা জিয়া পাওয়ার যোগ্য। কথাটি এ কারণে বলছি যে গণতন্ত্রের জন্য মানুষ কতটা ত্যাগ স্বীকার করতে পারে। তার (খালেদা জিয়া) স্বামী যখন যুদ্ধে গেলেন তাকে গ্রেপ্তার করে ক্যান্টনমেন্টে রাখা হলো। তখন তো অনেকেই ঘরে বসেছিল। কেউ কেউ পাকিস্তানি মেজরের গাড়িতে করে হসপিটালে গেছে, ভাতা নিছে। কিন্তু তাকে বন্দি করে রাখা হয়েছিল। তার স্বামীকে হত্যা করার পরে তিনি দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য রাস্তায় নেমে এসেছিলেন। তার প্রতি একটু শ্রদ্ধাবোধ থাকলে তাকে এভাবে মিথ্যা মামলায় জেলে আটক করে রাখতো না।  

তিনি বলেন, খালেদা জিয়া জনগণের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করেছিলেন। জনগণ কেয়ারটেকার চেয়েছিল বলে তিনি কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। অনেকেই বলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে জাদুঘরে রাখা হয়েছে। আমি বলি যারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য আন্দোলন করেছে, আবার তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করেছে, তাদের জাদুঘরে রাখা উচিত।  

বিএনপিকে ধ্বংস করার জন্যই ডিজিটাল আইন করা হয়েছে মন্তব্য করে কৃষকদলের সাবেক এ আহ্বায়ক বলেন, বিএনপি সত্য কথা বলে, মানুষের পাশে দাঁড়ায়, অন্যায়ের প্রতিবাদ করে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলা মানে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কথা বলা। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কথা বললেই তারা কেস করে। আর এগুলো বলা থেকে বিরত রাখতে, মুখ বন্ধ রাখতে ডিজিটাল আইন করা হয়েছে। তবে ডিজিটাল আইন করে নিজেদের রক্ষা করতে পারবে না।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছে গণতন্ত্রের জন্য, স্বাধীনতার জন্য, মানুষের অধিকারের জন্য। এ জায়গায় কোন আপস নেই। এটাই শহীদ জিয়া, খালেদা জিয়ার রাজনীতি। আর একজন আছেন যিনি আমাদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তারেক রহমান। তার নাম শুনলেই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মাঝরাতে ঘুম ভেঙে যায়। তিনি বাংলাদেশের রাজনীতিকে একটি জায়গায় নিয়ে এসেছেন। দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির বলেন, শেখ মজিবুর রহমান প্রথম পর্যায়ে বিশ্বের উচ্চতায় স্থান পেয়েছিল। কিন্তু স্বাধীনতার পরে তার রাষ্ট্র শাসনের ব্যর্থতার কারণে তার স্থান তলালিতে গিয়েছিল। তারপর এ ব্যর্থ রাষ্ট্রকে প্রতিষ্ঠা করে জিয়াউর রহমান। তিনি বিশ্ব নেতার স্থান নিয়েছিলেন। তিনি এ দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। জিয়াউর রহমানের জন্য শেখ হাসিনা এদেশে আসতে পেরেছে। কারণ জিয়াউর রহমান গণতন্ত্রকে বিশ্বাস করতেন। বলা যায় এদেশে আওয়ামী লীগ পুনরায় প্রতিষ্ঠা হয়েছে জিয়াউর রহমানের জন্য।

বিএনপির সহ-তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক কাদের গণি চৌধুরী বলেন, যারা নিজেদের জনগণের তৈরি দল বলে তারা গণতন্ত্রকে হত্যা করে পকেটে ঢুকিয়ে এক দলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করেছিল। আর বিএনপি যাদের আওয়ামী লীগ বলে ক্যান্টনমেন্ট থেকে তৈরি সেই বিএনপি দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছে। স্বাধীনতা যুদ্ধে অনেকে পালিয়ে গিয়েছিল, অনেকেই ধরা দিয়েছিল। যখন এ বাঙালি জাতি দিশেহারা তখন জিয়াউর রহমান স্বাধীনতা ঘোষণা করে মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে দেশ স্বাধীন করে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশকে অযোগ্য করে তুলেছে এ সরকার। মা-বোনের নিরাপত্তা নেই। বাসা থেকে বের হলে আর বাসায় ফিরা হয় না, গুম করা হয়। তাই এ দেশকে বাঁচাতে হলে এ ফ্যাসিস সরকারের পতন করতে হবে। এছাড়া এ জাতি মুক্তি পাবে না।

বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরামের সভাপতি মুহাম্মদ সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপি ও দলটির অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৪ ঘণ্টা, আগস্ট ৩১, ২০২৩
এইচএমএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।