ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

নাটোরে মাইক্রোবাসে অগ্নিসংযোগ-গাড়ি ভাঙচুর-হামলা, আহত ২০

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৩
নাটোরে মাইক্রোবাসে অগ্নিসংযোগ-গাড়ি ভাঙচুর-হামলা, আহত ২০ ছবি: সংগৃহীত

নাটোর: নাটোরে মাইক্রোবাসে অগ্নিসংযোগ, প্রাইভেটকার ভাঙচুর এবং বিভিন্ন স্থানে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, বিয়ের কনে দেখার কথা বলে ভাড়া করা মাইক্রোবাস যাত্রী নিয়ে বগুড়া যাওয়ার সময় অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা। এছাড়া বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচি তারুণ্যর রোড মার্চে অংশগ্রহণ করতে যাওয়ার পথে নাটোর শহর ও সদরের বিভিন্ন স্থানে হামলায় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের ২০ থেকে ২৫ জন নেতাকর্মী আহতসহ প্রাইভেটকার ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করেছে জেলা বিএনপি। আহতদের বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।

রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকালে সদর উপজেলার ডাল সড়ক এলাকায় অগ্নিসংযোগ, তেবাড়িয়া এলাকায় প্রাইভেটকার ভাঙচুর ও সৈয়দ মোড়সহ বিভিন্ন স্থানে এসব হামলার ঘটনা ঘটে। এসব হামলার জন্য আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে দায়ী করেছে বিএনপি।  

এছাড়া ওই মাইক্রোবাসে বিএনপির নেতাকর্মী ছিল বলে তারা দাবি করলেও তাদের নেতাকর্মীদের নাম পরিচয় জানাতে পারেনি বিএনপি নেতারা।

অন্যদিকে এসব হামলা ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আওয়ামী লীগের কেউ জড়িত নয়, বরং বিএনপি নেতাকর্মীরাই এসব ঘটনা ঘটিয়ে দায় চাপানোর চেষ্টা করছে বলে দাবি করেছেন জেলা আ.লীগ।

অপরদিকে, পুলিশ মাইক্রোবাসে অগ্নিসংযোগের কথা স্বীকার করলেও কারা এই হামলা বা অগ্নিসংযোগ করেছে তা জানতে পারেননি। বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলার বিষয়ে তারা কিছুই জানে না। এ নিয়ে কেউ কোনো অভিযোগও করেননি।

নাটোর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম বাচ্চু অভিযোগ করে বাংলানিউজকে বলেন, বগুড়ায় তারুণ্যর রোড মার্চে অংশগ্রহণের জন্য লালপুর থেকে ছাত্রদল ও যুবদলের নেতাকর্মীরা গাড়ি নিয়ে যাচ্ছিল। পথে আওয়ামী লীগের লোকজন পথরোধ করে গাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে দিয়ে তাদেরকে মারপিট করেছে।  

তিনি আরও বলেন, আহত নেতা কর্মীরা প্রাণ বাঁচাতে প্রথমে স্থানীয় একটি মসজিদে আশ্রয় নিয়েছিল। পরে সেখান থেকে নিরাপদে যার যার এলাকায় চলে গিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এছাড়াও সৈয়দ মোড় ও তেবারিয়া এলাকায় দুইটি গাড়ি ভাঙচুর ও বিএনপি নেতাকর্মীদের পিটিয়ে জখম করা হয়েছে।

বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালকুদার দুলু বলেছেন, কোনো কারণ ছাড়াই ভোর থেকে জেলার বিভিন্ন স্থানে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা কর্মীদের ওপরে হামলা করা হয়েছে। হামলায় দলের ২০ থেকে ২৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা এসব হামলা করেছেন বলে তিনি দাবি করেন। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান।

তবে বিএনপির এই অভিযোগকে ভিত্তিহীন ও অসত্য দাবি করেছেন নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজান।  

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, যেখানে নাটোরে বিএনপির কোনো কর্মসূচি নাই। তাদের কর্মসূচি রয়েছে বগুড়া-রাজশাহী এলাকায়। সেখানে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের এ ধরনের কর্মকাণ্ডের কোনো সুযোগ নাই। আ.লীগের কোনো নেতাকর্মী এইসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন। তবে, পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে দেখলে পরিষ্কার বোঝা যাবে, এটি গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ নাকি বিএনপির নেতা-কর্মীরা নিজেরাই আগুন দিয়েছেন।  

এদিকে, পুড়িয়ে দেওয়া মাইক্রোবাস মালিক রফিকুল ইসলামের দাবি, নওগাঁয় বিয়ের জন্য কনে দেখার কথা বলে তার গাড়িটি ভাড়া করা হয়েছিল। রোববার সকালে বগুড়া হয়ে নওগাঁয় যাওয়ার সময় তার গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। এ সময় আগুনে তার গাড়িটি পুড়ে ছাই হয়ে যায়। যারা আগুন দিয়েছেন তাদের চিনতে পারেননি তিনি।

নাটোর ফায়ার স্টেশন কর্মকর্তা মো. আকতার হোসেন বাংলানিউজকে জানান, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মাইক্রোবাসে আগুন লাগার সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে তাদের লোকজন গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। কীভাবে গাড়িতে আগুন ধরেছে তার কোনো প্রত্যক্ষদর্শী খুঁজে পাওয়া যায়নি। গাড়িতে রাখা সিলিন্ডার অক্ষত রয়েছে। তাই প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এটি অগ্নিকাণ্ড।

নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাছিম আহমেদ বাংলানিউজকে জানান, গাড়িতে আগুন ধরেছে খবর পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। তবে গাড়িতে কীভাবে আগুন ধরেছে বা কারা ছিল এবং কারা আগুন দিয়েছে তা জানা যায়নি। কোনো প্রত্যক্ষদর্শীকে পাওয়া যায়নি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৩
আরএ/এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।