ঢাকা: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ‘তলে-তলে মীমাংসা’র বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, তলে তলের কোনো ঘটনা দেশের রাজনৈতিক সংকট মীমাংসা করবে না।
বুধবার (৪ অক্টোবর) গণতন্ত্র রক্ষায় সুশাসনের লক্ষ্যে নিরপেক্ষ নির্বাচনের বিকল্প নেই শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
সরকার নির্বাচনের তোড়জোড় করছে উল্লেখ করে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, সরকারি দল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বললেন, তলে তলে সব ঠিক হয়ে গেছে। আড়ালে আবডালে যা হয়, তা ষড়যন্ত্র। কিছুদিন আগে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এমন কিছু আমরা ভারতকে দিয়েছি, ভারত কখনোই তা ভুলতে পারবে না। কী দিয়েছেন তিনি বলেননি। যেহেতু বলেননি, তাহলে সেটি তলে তলের বিষয়। সেজন্য আমি বলি, তলে তলের কোনো ঘটনা বাংলাদেশের মুক্তির কারণ হবে না। তলে-তলের ঘটনা সংকট কাটাবে না। তলে তলের ঘটনা রাজনৈতিক সংকট মীমাংসা করবে না।
তিনি বলেন, তলে তলে না খেলে, যিনি বাংলাদেশের অহংকার, যিনি তিনবারের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, যিনি নির্বাচনে কখনো পরাজিত হননি, তাকে সামান্য চিকিৎসার সুবিধা দিন। তার পছন্দের জায়গায় চিকিৎসা নেওয়ার সুবিধা দিন। হাজী সেলিম, মায়া থেকে নিশ্চয়ই সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বড়, অনেক উঁচু দরের মানুষ। তারা (হাজী সেলিম, মায়া) যদি বিদেশে চিকিৎসা পেতে পারেন, জামিন পেতে পারেন, তাহলে বেগম জিয়া কেন পাবেন না?
দেশে দুটি আইন চলছে কি না, এমন প্রশ্ন রেখে বিএনপির এই ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, এক আইন বিরোধী দলের জন্য, আরেকটি সরকারি দলের জন্য। এমন দেশ পৃথিবীর আর কোথাও আছে বলে আমার জানা নেই। এত খারাপ সময়ে বাংলাদেশ আগে কখনো নিপতিত হয়নি। বাংলাদেশে এখন কথা বলা যায় না। সত্য কথা যদি আপনি বলেন, তাহলে বিপদে পড়ার সম্ভাবনাই বেশি। এবার তিনি সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবী, লেখক যে-ই হোক। এমনকি তিনি যদি দেশের বাইরেও থাকেন, তাহলেও বিপদে পড়তে পারেন, অর্থাৎ মামলা খেতে পারেন। তার স্বজন যারা দেশে আছেন, তারা গ্রেপ্তারও হতে পারেন। তাদের মালামাল ক্রোক হতে পারে।
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, এ এক বিচিত্র দেশ। এ দেশ গণতন্ত্রের জন্য যুদ্ধ করেছে, এক সাগর রক্ত দিয়েছে, মা-বোনেরা আবরু হারিয়েছেন। ৫২ বছর পরে এসে দেখা যাচ্ছে দেশে গণতন্ত্র, স্বাধীনতা, অধিকার নেই। আপনি চাইলেই পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন না। কেন্দ্রে গেলেই শুনবেন, আপনার ভোট দেওয়া হয়ে গেছে। যে নেত্রী ১৬ টাকার চাল ১০ টাকায় খাওয়াবেন বলেছেন, তিনি ক্ষমতায় এসে ৬০-৮০ টাকা দামে চাল খাওয়াচ্ছেন। এ কেমন দেশ, যেখানে তারা অবলীলায় নিজেদের ওয়াদা ভুলে যান! এ কেমন দেশ, যেখানে কোনো নিরাপত্তা নেই! আপনি ঘরে থাকেন বা বাইরে, আপনি ভালো থাকবেন, নিরাপদে থাকবেন এ নিশ্চয়তা নেই।
তিনি বলেন, উদ্যোগ যত ছোট বা ক্ষুদ্র হোক না কেন, লক্ষ্য যদি ভালো হয়, তাহলে সাফল্য অবধারিত। আসুন বিএনপিসহ যেসব বিরোধী দল এখন রাস্তায় দেশের মর্যাদা, রাজনীতি, সমস্যা নিরসন, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করছে, আন্দোলন করছে, সেই উদ্যোগে আমরা সবাই শরিক হই।
পিএনপির চেয়ারম্যান ফিরোজ মোহাম্মদ লিটনের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব আলহাজ্ব আহম্মেদুর রহমান খোকনের সঞ্চালনায় আয়োজিত আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম, কৃষক দলের নেতা রবিউল প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ৪, ২০২৩
এসসি/আরএইচ