ঢাকা, শুক্রবার, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

কাভার্ডভ্যানে অগ্নিসংযোগে বিএনপির ৩৫ নেতাকর্মীর নামে মামলা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০২৩
কাভার্ডভ্যানে অগ্নিসংযোগে বিএনপির ৩৫ নেতাকর্মীর নামে মামলা

বরিশাল: বরিশালের গৌরনদীতে বিস্কুটবাহী কাভার্ডভ্যানে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় বিএনপির নামধারী ৩৫ নেতাকর্মীসহ অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

শুক্রবার (১০ নভেম্বর) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করে গৌরনদী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হেলালউদ্দিন জানান, বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) রাতে গৌরনদী উপজেলার বাটাজোর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রেমন তালুকদার বাদী হয়ে মামলাটি করেন।

পরে ওই মামলায় শুক্রবার উপজেলার সরিকল এলাকা থেকে বিএনপিকর্মী মিরাজ হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

মামলার আসামিরা হলেন-গৌরনদী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ সরোয়ার আলম, সদস্য সচিব জহির সাজ্জাদ হান্নান, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক বদিউজ্জামান মিন্টু, যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন বাদল, পৌর বিএনপির আহ্বায়ক মো. জাকির শরীফ, সদস্য ফরিদ মিয়া, বরিশাল উত্তর জেলার সদস্য সচিব মিজানুর রহমান, বরিশাল জেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সাইদুল আলম সেন্টু, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মিনর হাওলাদার,  সদস্য সচিব মনির আকন, ছাত্রদলের উপজেলা আহ্বায়ক রুবেল গোমস্তা, যুগ্ম আহ্বায়ক আল আমিন, পৌর যুবদলের সদস্য সচিব মাহতাফ সরদার, যুগ্ম আহ্বায়ক জুয়েল সরদার, বাটাজোর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আক্তার হোসেন, উপজেলা বিএনপির সদস্য পান্না সরদার, আহসান হাবিব, সয়ন ফকির, রাজীব হাওলাদ্রা, জনি বেপারী, খলিল হাওলাদার, সাইফুল মীর, মোঃ বিপ্লব, মাকসুদ মৃধা, দেলোয়ার সরদার, মিরাজ খান, মো. আতিক,  সুমন বেপারী ও হৃদয় বেপারীসহ অজ্ঞাতনামা ৩৫ জন বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী ।

মামলার আসামি বরিশাল জেলা উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও গৌরনদী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক সরোয়ার আলম সাংবাদিকদের বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলা-মামলার কারণে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের একটি নেতাকর্মীরা এলাকায় থাকতে পারে না। এমন কি আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বিএনপি নেতাকর্মীর বাড়িতে হামলা করে নেতাদের না পেয়ে পরিবার পরিজনকে পিটিয়ে আহত করে এলাকা ছাড়া করেছে। গত ১৫ বছরে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা নিজেরা ঘটনা ঘটিয়ে মামলা দিয়েছে।

বিএনপি নেতাদের অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে গৌরনদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এইচএম জয়নাল আবেদীন বলেন, বিএনপির অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই। বিএনপি আগুন সন্ত্রাসীর একটি দল, জনগণকে পুড়িয়ে মারাই তাদের কাজ। বিএনপি সন্ত্রাসীরা অতীতেও এ ঘটনা ঘটিয়েছে এবারও সরকারকে বিব্রত করতে একই পথে হাঁটছে।

মামলার বরাতে পরিদর্শক হেলাল বলেন, বরিশাল শিল্প নগরী (বিসিক) থেকে বেঙ্গল বিস্কুট ভর্তি করে মৌলভীবাজারের উদ্দেশে কাভার্ডভ্যান (ঢাকা মেট্রো-ট ১৩-৩২৪৫) চালক মো. সিরাজুল ইসলাম বুধবার (৮ নভেম্বর) রাত সোয়া ১০টা রওনা দেন। রাত পৌনে ১২টায় মহাসড়কের গৌরনদীর বাটাজোর কবি বাড়ির দক্ষিণ পাশে পৌঁছালে একটি গাছের গুঁড়ি ফেলে ৬-৭  ব্যক্তি গতিরোধ করে।  এ সময় চালক গাড়ি ব্রেক করার সঙ্গে সঙ্গে দুইজন গাড়ি ভাঙচুর করে এবং দুইজন গাড়িতে পেট্রল দিয়ে আগুন দেয়। চালক প্রাণরক্ষায় দরজা খুলে বের হতে চাইলে দুইজন এসে তাকে গাড়ি থেকে নামতে বাধা দিয়ে বলে তোকেসহ আগুনে পুড়িয়ে মারা হবে। যখন আগুন চালকের কাছাকাছি এসে তখন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তিনি ও তার সহকারী আহাদ হোসেন (২৩) জানালা দিয়ে লাফ দিয়ে নিচে পড়ে আহত হন। সঙ্গে সঙ্গে দুই দুর্বৃত্ত এসে চালকের শরীরে এক বোতল পেট্রল ঢেলে দিয়ে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করে। চালকের শরীরে আগুন দেওয়ার আগেই দৌড়ে প্রাণ রক্ষা করেছে।

গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আফজাল হোসেন বলেন, নাশকতা সৃষ্টি করে জনমনে ভীতি সৃষ্টি ও ক্ষতিসাধন করা কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। এ ঘটনায় করা মামলার আসামি উপজেলার সরিকল এলাকা থেকে বিএনপিকর্মী মিরাজ হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০০ ঘণ্টা,  নভেম্বর ১০, ২০২৩
এমএস/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।