ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

বিদেশ থেকে যত বড় শক্তি আসুক, নির্বাচন হবে: শামীম ওসমান

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০২৩
বিদেশ থেকে যত বড় শক্তি আসুক, নির্বাচন হবে: শামীম ওসমান ফতুল্লার কাশিপুর ইউনিয়নে নির্বাচনী প্রচারণায় শামীম ওসমান

নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান বলেছেন, আমাদের রক্ত কি রক্ত না। আমার ৫৯ জন ছেলেকে এই হাত দিয়ে দাফন করেছি।

আমরা তো কাউকে একটা থাপ্পরও দেইনি। আল্লাহ ওদের বিচার করেছে। যত বড় শক্তি বিদেশ থেকে আসুক না কেন, ৭ তারিখ নির্বাচন হবে।

বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) বিকেলে ফতুল্লার কাশিপুর ইউনিয়নে নির্বাচনী সভায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

শামীম ওসমান বলেন, আমরা একটা অদৃশ্য শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করছি। তারা পৃথিবীর অনেক বড় শক্তি। ওরা মানচিত্রে থাবা দিয়েছে। সমুদ্র চায়, সেন্টমার্টিন চায়। বলা হচ্ছে—আরব স্প্রিং; ইরাক-লিবিয়ার মতো হয়ে যাবে। যদি এটা হতে দিতে না চান, ভোট দিতে আসবেন। এটা আপনার দায়িত্ব। আমি বলি না আমাকেই ভোট দিন। যাকে খুশি ভোট দিন। নয়তো ওরা সুযোগ নেবে, এরপরে আর রক্ষা নেই। এই এক মহিলা সব ঠেকিয়ে রেখেছে।

ফতুল্লার কাশিপুর ইউনিয়নে নির্বাচনী প্রচারণা চালানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আজকে এখানে এসে যে আদর পেয়েছি। আমার মনে হয় আজকে যদি আমার মা বেঁচে থাকত, তাহলে ঠিক এভাবেই আদর করত। এই ওয়ার্ড থেকে যে ভালোবাসা পেয়েছি। আমি বাঁচি কি না ঠিক নাই। আমাকে মারার চেষ্টা চলছে। আপনারা দোয়া করবেন, আমি যেন আপনাদের ভালবাসার মূল্য দিতে পারি।

শামীম ওসমান আরও বলেন, আমি কোথাও ভোট চাই না। কারণ আপনি আমার চেয়ে কম বোঝেন না। আমি কেন ভোট চাইব। সমস্যা তো আমার না, আপনার সমস্যা। আমি নাটক করতে পারি না। লুঙ্গি দেব, শাড়ি দেব—এসব ভণ্ডামি আমি করি না। আমরা কাজ করেছি। আল্লাহর হুকুম হয়েছে, আমি করেছি। এই এলাকার চেয়ারম্যান আমার বড় ভাই সাইফুল্লাহ বাদল। তারা কাজ চেয়েছেন আর আমি সাথে সাথে ব্যবস্থা করেছি।

তিনি বলেন, আমাদের জীবন শেষ পর্যায়ে। আমরা এই বাচ্চাদের সুন্দর ভবিষ্যৎ চাই। আমি যে আপনাদের সাথে হাসছি, মিথ্যা বলব না। আমি নাটক করছি! মন থেকে করতে পারছি না। গত পরশু দিন একটা ঘটনা আমাকে ওলটপালট করে দিয়েছে। একটা মানুষ তার বাচ্চাকে কোলে নিয়ে বসে আছে, ওরা ট্রেনে আগুন দিয়ে দিল! আমার নাতি আছে চার বছরের। ওরা এত জঘন্য কাজ করতে পারে আমি ভাবতেও পারিনি। একটা বাচ্চা তার মায়ের কোলে, দুজনে আগুনে পুড়ে একসাথে ছাই হয়ে গেছে! এটার নাম কি রাজনীতি, এটা রাজনীতি হলে আমার বলার কিছু নেই। ২০১৩-১৪ সালে ওরা এতগুলো মানুষ পুড়িয়ে মারল। তখন ওদের বিচার করলে ওরা এগুলো করতে পারত না। এটা আমাদের ব্যর্থতা।

শামীম ওসমান, আল্লাহ বলেছে—যে অন্যায় করে আর যে অন্যায় সহে উভয় সমান অপরাধী। আপনারা তাদের ঘৃণা করেন। একজন পুলিশ সদস্য মারা গেছে, তখন তাকে ছাত্রদলের এক নেতা কোপাচ্ছে। এগুলো কী ধরনের রাজনীতি!

তিনি বলেন, আমরা ১২৫ কোটি টাকা দিয়ে শুধু প্রাইমারি স্কুল করেছি। ২২৫ কোটি টাকার হাইস্কুল করেছি। বঙ্গবন্ধু প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় পাস হয়ে গেছে। আমি হাসপাতাল চেয়েছিলাম। শেখ হাসিনা পাঁচশ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের অনুমোদন দিয়েছেন। এখানে শেখ কামাল আইটি ইনস্টিউট হবে, কাজ শুরু হয়ে গেছে।

আগামী নির্বাচন খুব বড় চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে শামীম ওসমান বলেন, নিজে ভোট দেবেন, মানুষকেও দেওয়াবেন। নাহলে আপনার এই মানচিত্র স্বাধীন থাকবে না। তার (শেখ হাসিনা) যদি কোনো ক্ষতি করতে পারে, তাহলে আর স্বাধীন থাকতে পারবেন না।

তিনি বলেন, বিএনপির ছেলেদের জন্য মায়া লাগে। লন্ডন থেকে বলে আগুন দাও। আগুন জ্বালিয়ে তারেক রহমান ভাইয়াকে পাঠায়। ওরাও তো আমাদেরই ছেলেমেয়ে। এসব মামলায় যখন চার্জশিট হয়ে যাবে, আদালতে দেখানো হবে ছবি-ভিডিও। সাজা হবে, কাঁদবে কারা। তার পরিবার কাঁদবে। তারেক রহমান কিন্তু কাঁদবে না। সমস্ত ভিডিও প্রশাসনের কাছে আছে। আমি জানি ওরা অপরাধী না। আমি চেষ্টা করব ওদের সেভ (রক্ষা) করতে। আমার কথাকে দুর্বলতা ভাববেন না, আমি দুর্বল না।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০২৩
এমআরপি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।