পঞ্চগড়: কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিপক্ষে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত সম্রাট। কিন্তু কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে পঞ্চগড়-২ আসনের নৌকার প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন ব্যক্তিগত স্বেচ্ছাচারীতায় তাকে সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন তিনি।
শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে পঞ্চগড় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
স্বতন্ত্র ট্রাক প্রতীকের প্রার্থী আনোয়ার সাদাত সম্রাট বলেন, সভানেত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণায় নির্বাচনের মাঠে এসেছি। গঠনতন্ত্রের বাইরে গিয়ে গত ২০ ডিসেম্বর রেলমন্ত্রী এমন একটি সিদ্ধান্ত নেওয়ায় দলের মধ্যে প্রকাশ্যে বিভেদ সৃষ্টি হয়েছে। এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে বহাল থাকার কথা জানান।
তিনি আরও বলেন, সারা দেশে কোথাও এমন নজির নেই। আমাদের সভানেত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়েছেন দলীয় প্রার্থীর বাইরে যে কেউ প্রার্থী হতে পারবেন। এদিকে গত বৃহস্পতিবারের (২১ ডিসেম্বর) ভার্চুয়াল সভাতেও তিনি দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থীদের উৎসাহিত করেছেন। সেখানে রেলমন্ত্রী সুজন কীভাবে এমন সিদ্ধান্ত দেন। বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ পরিচালিত হয় নিজস্ব গঠনতন্ত্র অনুযায়ী। আমি তার এই সিদ্ধান্ত মানি না। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আমি সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বে থাকা অবস্থায় কোনো কারণে অসুস্থ বা দেশের বাইরে গেলে আমি যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকদের মধ্যে কাউকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব প্রদান করব। সেখানে দলের সভাপতি আমাকে না জানিয়ে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। গঠনতন্ত্রের বাইরে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা কেবলমাত্র জননেত্রী শেখ হাসিনার। তার যে কোনো সিদ্ধান্ত আমি মাথা পেতে নেব। এর বাইরে আমি কারো গঠনতন্ত্রের বাইরে কোনো স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্ত মানি না।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, মন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তের ফলে গোটা জেলায় নেতাকর্মীদের মধ্যে বিচ্ছৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। হতাশা বিরাজ করছে। আমি তার এ ধরনের অগঠনতান্ত্রিক সিদ্ধান্তের জন্য নিন্দা ও তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলাম, এবং আছি, থাকব। আমি আমাদের নেত্রী, সাংগঠনিক নেত্রী, দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা যে কোনো মুহূর্তে যে কোনো সিদ্ধান্ত দিলে তাৎক্ষণিকভাবে আমি সেটা মানতে বাধ্য। এর বাইরে এমন সিদ্ধান্ত দেওয়ার ক্ষমতা জেলার কারোর নেই।
এর আগে গত বুধবার (২০ ডিসেম্বর) রাতে প্রধানমন্ত্রীর ভার্চ্যুয়ালি জনসভা সফল করতে পঞ্চগড় দলীয় কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে এক পথসভায় তার পরিবর্তে নির্বাচনের সময়ে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু সারোয়ার বকুলকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দিয়েছেন পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। এর পর থেকে স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভেদ শুরু হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিপেন চন্দ্র রায়, সাংগঠনিক সম্পাদক জুলফিকার আলী, দপ্তর সম্পাদক মাসুদ পারভেজ হিটলার, প্রচার সম্পাদক রবিউল ইসলাম চানু, কৃষি ও সমবায় সম্পাদক সপিয়ার রহমান, জেলা শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুজ্জামান, জেলা মৎস্যজীবী লীগের সভাপতি মতিয়ার রহমান।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০২৩
এসএম