ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

শেখ হাসিনা আইয়ুব খানের পথ অনুসরণ করছেন: সাকি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০২৪
শেখ হাসিনা আইয়ুব খানের পথ অনুসরণ করছেন: সাকি

ঢাকা: ষাটের দশকে শেখ মুজিবুর রহমান যা ছিলেন শেখ হাসিনা তা অনুসরণ করছে না বরং আয়ুব খানের পথ অনুসরণ করছেন বলে মন্তব্য করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা এখন লুটেরা ব্যবসায়ীদের রক্ষাকারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন।

বুধবার (২৪ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের ৫৪তম বার্ষিকী উপলক্ষে গণসংহতি আন্দোলনের উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

জোনায়েদ সাকি বলেন, মওলানা ভাসানীর হাট হরতাল, শহীদ আসাদের শার্ট, সার্জেন্ট জহুরুল হক বা রাজশাহীর শামসুজ্জোহার জীবন দানের ভেতর দিয়ে অভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছিল এবং স্বাধীনতার বুনিয়াদ তৈরি হয়েছিল।

তিনি বলেন, ষাটের দশকে শেখ মুজিবুর রহমান যা ছিলেন শেখ হাসিনা তা অনুসরণ করছেন না বরং আইয়ুব খানের পথ অনুসরণ করছেন। শেখ হাসিনা এখন লুটেরা ব্যবসায়ীদের রক্ষাকারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। আইয়ুব খানের সময়ে ভয় ত্রাস সৃষ্টি করা হয়েছিল। আর আজ পুলিশ বাহিনীকে দলীয় বাহিনীতে পরিণত করা হয়েছে এবং পুলিশ বাহিনীর অধীনে গেস্টাপো বাহিনী বানিয়ে হেলমেট পরে ভয়ের রাজত্ব সৃষ্টি করে যাচ্ছে।

বিদেশিদের পদলেহন করে বাংলাদেশের ন্যূনতম মর্যাদা রক্ষা করা যাচ্ছে না। সীমান্তে সাধারণ মানুষ মরছে, এখন বিজিবি সদস্যও মরছে কিন্তু সরকারের তরফ থেকে প্রতিবাদ পর্যন্ত করতে পারছে না, বলেন জোনায়েদ সাকি।

তিনি বলেন, আইয়ুব খান তার শাসন আমলে মৌলিক গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে যেয়ে নিজের ভাইকে দিয়ে বিরোধী দল তৈরি করেছিলেন। আর এখন শেখ হাসিনা যাদের বিরোধী দল করছেন, তারা বের হয়ে যেতে চায় কিন্তু পারে না। তারা বিএনপিসহ সকল বিরোধী দলকে অনুগত বিরোধীদল বানাতে চায়।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমম্বয়কারী জোনায়েদ সাকির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম সংগঠক জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক মোস্তফা জামাল হায়দার, জাতীয় গণফ্রন্টের প্রধান সমন্বয়কারী টিপু বিশ্বাস, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের আহ্বায়ক ফয়জুল হাকিম লালা, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি-এনপিপি’র সভপতি ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান রিজু প্রমুখ। আলোচনা ও মতবিনিসয় সভা সঞ্চালনা করেন গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল।

মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, ১৯৬৯ সালের ২৪ জানুয়ারি আর ২০২৪ সালের ২৪ জানুয়ারি এক কথা নয়। অত্যন্ত শক্তিশালী প্রতিবেশী রাষ্ট্র গ্রাস করে বসে আছে। তাই আজকের লড়াই শুধু শেখা হাসিনার বিরুদ্ধে নয়। ভারতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হচ্ছে। রাজনৈতিক লড়াই, রুটি রুজির লড়াই এবং সার্বভৌমত্বের লড়াই এক ও অভিন্ন হয়ে গেছে।

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আমাদের গণমাধ্যমগুলো গণঅভ্যুত্থান দিবস ভুলে গেছে। ১৯৬৬ সালে ৬ দফার আন্দোলন বিজয়ী হতে পারেনি। ছাত্রদের সমর্থন ও মওলানা ভাসানীর প্রভাব ছাড়া এটা সম্ভব ছিল না। আমরা এখন যত দীর্ঘ সময় ধরে আন্দোলন করছি, ’৬৯ সালেও এত সময় লাগে নাই।

সাইফুল হক বলেন, মুক্তিযদ্ধের পরে এদেশের মানুষের সবচেয়ে বড় উত্থান হলো ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান। মুক্তিযুদ্ধের ভেতর দিয়ে সাম্য মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচারের ঘোষণা এসেছিল। আজ আওয়ামী লীগের অবস্থান একেবারেই তার বিপরীতে। তিনটি ভুয়া নির্বাচনের ভেতর দিয়ে দেশকে মাফিয়া ব্যবসায়ীদের হাতে তুলে দিয়েছে। কিছুটা অভ্যন্তরীণ উপনিবেশের মতো।

অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, ইতিহাস এখন নতুন করে লেখা হচ্ছে গণভবনে বসে। ইতিহাস লেখা শুরু হয়েছে ৫২ সাল থেকে। বিচার বিভাগ, রাষ্ট্র প্রশাসন বা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা আমরা মানব না। বিএনপির বাইরে যুগপৎ ধারায় যারা আন্দোলন করছেন তাদের আরও সংগঠিত হতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০২৪
এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।