ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

নির্বাচন পদ্ধতিতে গলদ আছে: চুন্নু

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৯, ২০২৪
নির্বাচন পদ্ধতিতে গলদ আছে: চুন্নু জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু

ঢাকা: বর্তমান নির্বাচন পদ্ধতিতে গলদ আছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের চিফ হুইপ এবং জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু।  

তিনি বলেন, এই পদ্ধতিতে নির্বাচন শতভাগ সুষ্ঠু সম্ভব নয়।

এই গলদ দূর করতে আনুপাতিক পদ্ধতির নির্বাচন চালু করার অনুরোধ জানাই।  

বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, আমরা এই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনটা করলাম। এই নির্বাচন নিয়ে অনেক প্রশ্ন সারা দেশে। আমি জানি না আমরাও নির্বাচন করব কি না সে অবস্থায় ছিলাম, আমরা নির্বাচন করেছি। এই নির্বাচন নিয়ে অনেক প্রশ্ন বিশেষ করে বিএনপিসহ অনেকগুলো দল নির্বাচনে আসে নাই। আবার আওয়ামী লীগসহ আমরা অনেকগুলি দল নির্বাচনে এসেছি।  

তিনি বলেন, নির্বাচনে দেশের মানুষের মধ্যে অনেক কথা। আমাদেরকে অনেকেই বলেছেন নির্বাচনে না আসার জন্য। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে বিশেষ করে আওয়ামী লীগের বিরোধী যারা সেই দলগুলোর পক্ষ থেকে আমাদেরকে বলা হয়েছিলো নির্বাচনে যাবেন না। আমরা চিন্তা করলাম নির্বাচনে যদি আমরা না যাই এবং নির্বাচনে কেউ যদি না যায়, শুধু আওয়ামী লীগ থাকে, একক নির্বাচন হয়, সেই নির্বাচন যদি গ্রহণযোগ্য না হয় এবং সেই নির্বাচন যদি কোনো কারণে ভন্ডুল হয়, বর্তমান সংবিধানের আলোকে সংসদীয় পদ্ধতিতে একমাত্র নির্বাচনের মাধ্যমেই সরকার পরিবর্তন করার সুযোগ আছে। এর বাইরে সরকার পরিবর্তন করার সুযোগ নাই।  

জাপা মহাসচিব বলেন, একটা কথা বলতে চাই, নির্বাচনের যে পদ্ধতিটা সেই পদ্ধতিতেই গলদ। বর্তমানে যে নির্বাচনী সিস্টেম এতে শতভাগ নির্বাচন ফেয়ার করা কোনো পক্ষে সম্ভব নয়। আধুনিক যুগে নির্বাচন নিয়ে অনেক দেশে অনেক পরিবর্তন এনেছে। হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ আজ থেকে ২০ বছর আগে বলেছিলেন বর্তমান সিস্টেমে নির্বাচন শতভাগ ফেয়ার করা সম্ভব নয়, একমাত্র যদি আনুপাতিক হারে নির্বাচন; যে নির্বাচনে কোনো প্রার্থীর স্বক্রিয় ভূমিকা থাকবে না। নির্বাচন শুধু মার্কায় ভোট হবে এবং জাতীয়ভাবে মার্কায় কাস্টিং যত ভাগ যারা ভোট পাবে সেই ততভাগ এমপি পাবে। আমাদের খুব কাছে নেপাল অর্ধেক নির্বাচন এই সিস্টেমে হয়, শ্রীলংকায় হয়, ইউরোপের অনেক দেশে হয়। আমি আমার দলের পক্ষ থেকে সরকারকে বলবো, আগামীতে এই নির্বাচনকে সব কিছুর ঊর্ধ্বে রাখার জন্য। যদি ওই সিস্টেম চালু হয় তাহলে আর তত্ত্বাবধায়ক সরকার কেউ চাইবে না, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন কেউ আপত্তি করবে না যদি আনুপাতিক সিস্টেমে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হয়। সেই ব্যবস্থাটা করার অনুরোধ রাখছি।  

চুন্নু বলেন, যেসব বুদ্ধিজীবী বলেন, জাতীয় পার্টি নির্বাচনে এসেছে আওয়ামী লীগের দালাল হিসেবে। বিএনপির একজন নেতা কয়েকদিন আগে বলেছেন যে, আমরা নাকি আওয়ামী লীগের দালাল। আমার প্রশ্ন হলো বিএনপিও তো নির্বাচনের আগে    সর্বোচ্চ মহল থেকে আমাকে আমার দলের নেতাকে সুপারিশ করেছে নির্বাচনে না যাওয়ার জন্য। নির্বাচনে না এলে তখন বিএনপি বলে ভালো আর নির্বাচনে এলে বলে খারাপ। আবার আওয়ামী লীগ তারাও, নির্বাচনে আসলাম কি হলো নাই বা বললাম। নাই বা বললাম, অভিজ্ঞতা তো হলো। তবে একটা কথা বলতে পারি জাতীয় পার্টি নির্বাচনে আসার কারণে নির্বাচনী ধারাকে আমরা অব্যাহত রাখতে পেরেছি।  

তিনি বলেন, সাংবিধানিক ধারাকে আমরা অক্ষুণ্ন রাখতে পেরেছি। গণতান্ত্রিক সিস্টেমটাকে যাতে এখানে কোনোরকম অন্য কিছু না হয় তার জন্য আমরা নির্বাচনে গিয়েছিলাম। আমরা মনে হয় ভুল করি নাই কারণ গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতাকে অক্ষুণ্ন রাখার জন্য নির্বাচনই পথ।

বাংলাদেশ সময়: ২১১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৯, ২০২৪
এসকে/এসএএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।