ঢাকা, শনিবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

সিরাজগঞ্জে পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষে আহত ৪০

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৭ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০২৪
সিরাজগঞ্জে পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষে আহত ৪০

সিরাজগঞ্জ: কোটা আন্দোলনকারী ছাত্রদের ডাকা সারাদেশে কমপ্লিট শাটডাউনে দিনভর উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করেছে সিরাজগঞ্জে। আন্দোলনকারীদের অবরোধে প্রায় দুই ঘণ্টা বন্ধ ছিল বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম মহাসড়ক।

 

এদিকে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় রণক্ষেত্রে পরিণত হয় সিরাজগঞ্জ শহর। সংঘর্ষে অন্তত যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ও ছাত্রদলের সভাপতিসহ অন্তত ৪০ বিএনপি নেতাকর্মী আহত হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। শহরের দোকানপাট আংশিক খোলা ছিল। থ্রি-হুইলার চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও ভারী যানবাহনের পরিমাণ ছিল কম।   

বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) সকাল থেকে উত্তরের প্রবেশদ্বার বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম মহাসড়ক স্বাভাবিক থাকলেও বেলা ১১টা থেকে ঝঝাঐল ওভারব্রিজ এলাকায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জড়ো হতে থাকেন। এক পর্যায়ে টায়ার জালিয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়ে মহাসড়কে অবরুদ্ধ করে দেন তারা। এ সময় বিএনপি-ছাত্রদল ও শিবিরের অনেক নেতাকর্মীকেও সেখানে দেখা যায়। লাঠিসোটা হাতে নিয়ে সম্পূর্ণ মহাসড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়।  

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাদের মহাসড়ক থেকে সরে যেতে অনুরোধ করে। তবে পুলিশের অনুরোধ উপেক্ষা করেও তারা অবরোধ কর্মসূচি চালিয়ে যায়। দুই ঘণ্টা অবরোধ চলার পর দুপুর ২টার দিকে পুলিশ টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এরপর স্বাভাবিক হয় মহাসড়ক। বিকেলে ছাত্ররা আবারও মহাসড়ক অবরোধের চেষ্টা করলেও পুলিশি অ্যাকশনে তা ব্যর্থ হয়।

সিরাজগঞ্জ সহকারী পুলিশ সুপার (কামারখন্দ সার্কেল) মো. আদনান মুস্তাফিজ জানান, টিয়ারশেল ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম মহাসড়ক এখন স্বাভাবিক আছে।  

এদিকে দলীয় কার্যালয় পোড়ানোর প্রতিবাদে সকালে বিক্ষোভ মিছিল বের করে বিএনপি। এর কিছুক্ষণ পরেই পুলিশের সাথে তাদের সংঘর্ষ শুরু হয়। দিনভর দফায় দফায় সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এতে ৪০ জন আহত হয়েছে বলে দাবী বিএনপি নেতাদের। আহতদের মধ্যে জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মুরাদ, ছাত্রদলের সভাপতি জুনায়েদ আহমেদ সবুজ, শহর ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক আকাশ, জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের যুগ্ম আহবায়ক মানিক রয়েছেন।  

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু জানান, বিনা উসকানিতে মঙ্গলবার রাতে আমাদের পার্টি অফিস পুড়িয়ে দেয় আওয়ামী লীগের লোকজন। এর প্রতিবাদে আমরা সকালে বিক্ষোভ মিছিল বের করি। সেই মিছিলে হামলা চালায় আওয়ামী লীগ কর্মীরা এ থেকেই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পুলিশ টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এতে আমাদের অন্তত ৪০ নেতাকর্মী আহত হয়েছে। এছাড়াও আমাদের বেশ কিছু নেতার বাড়িঘর ভাংচুর করা হয়েছে। আমি এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।  

এদিকে বিএনপির অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ তালুকদার বলেন, আওয়ামীলীগের কোন নেতাকর্মী বিএনপির মিছিলে হামলা চালায়নি।  

সিরাজগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমরা মিছিল করার জন্য বিএনপিকে ইসলামীয়া কলেজ মাঠ পর্যন্ত জায়গা সীমাবদ্ধ করে দিয়েছিলাম। কিন্তু তারা মিছিল নিয়ে এসে আমাদের ২নং পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা চালায়। এ থেকেই সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। তবে এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে, ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ২০০৬ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০২৪
জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।