ঢাকা, সোমবার, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

লক্ষ্মীপুরে আন্দোলনে আ.লীগের ৭ নেতাকর্মী নিহত হওয়ার  ঘটনায় মামলা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০২৪
লক্ষ্মীপুরে আন্দোলনে আ.লীগের ৭ নেতাকর্মী নিহত হওয়ার  ঘটনায় মামলা

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরে গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের।  

সংঘর্ষের সময় আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সাবেক যুবলীগ নেতা একেএম সালাহ উদ্দিন টিপু এবং তার বাহিনীর সদস্যরা।

এতে চার শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান৷

এদিকে একই দিন বিকেলে জেলা শহরের তমিজ মার্কেট এলাকায় গণপিটুনিতে মারা যান সাতজন। যাদের সবাই আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মী।

তারা হলেন- সদর উপজেলার টুমচর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ও ইউপি সদস্য হারুনুর রশিদ (৪৫), বাঙ্গাখাঁ গ্রামের তফিকুল আনোয়ারের ছেলে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রাকিবুল হাসান সিফাত (২৭), উত্তর হামছাদী ইউনিয়নের শ্যামগঞ্জ গ্রামের আওয়ামী লীগ কর্মী মো. ইউসুফ (৫০), লাহারকান্দির সৈয়দপুর গ্রামের আবদুল মালেকের ছেলে যুবলীগ কর্মী আহমেদ শরীফ (৪২), উত্তর হামছাদী গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা তানজিদ হায়দার রিয়াজ (৪২) ও রায়পুর উপজেলার দক্ষিণ কেরোয়া গ্রামের হুমায়ুন কবিরের ছেলে ছাত্রলীগ কর্মী তাওহিদ কবির রাফি (১৭) এবং একই উপজেলার বামনী ইউনিয়নের মধ্যম সাগরদী গ্রামের ছাত্রলীগ কর্মী সুজন (২৪)।

আন্দোলনকারীদের হাতে নিহত এ সাতজনের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো মামলা করা হয়নি। তবে সদর থানা পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছে।

বুধবার (১৪ আগস্ট) রাতে দায়ের করা মামলায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে। মামলার বাদী সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) এমদাদ হোসেন।

মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াছিন ফারুক মজুমদার মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ওসি জানান, ৪ আগস্ট আন্দোলনকারীদের ওপর অতর্কিত হামলা ও নির্বিচারে গুলি চালানোর পর বিক্ষুব্ধ জনতার গণপিটুনিতে সাতজন নিহত হন। তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ মামলা করেননি। এজন্য পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা করেছে।

এদিকে সাবেক যুবলীগ নেতা টিপু ও সহযোগীদের গুলিতে আন্দোলনকারী যে চারজন শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন, তারা হলেন লক্ষ্মীপুর পৌর এলাকার বাস টার্মিনাল সংলগ্ন পাটওয়ারী বাড়ির মৃত সালেহ আহম্মেদের ছেলে আফনান পাটওয়ারী (২২), সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের শরীফপুর গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে সাব্বির হোসেন (২৩), উত্তর জয়পুর ইউনিয়নের ফিরোজ আলমের ছেলে কাউসার (২৩) ও রায়পুর উপজেলার দক্ষিণ রায়পুর গ্রামের আবদুল গণির ছেলে ওসমান গণি (২৩)। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন দেড় শতাধিক মানুষ।

টিপুর ও তার দলবলের হামলার শিকার হওয়ার পর ৪ আগস্ট আন্দোলনকারীরা ক্ষিপ্ত হয়ে টিপুর দুটি বাসভবনে আগুন লাগিয়ে দেন। রাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী টিপুর পিংকী প্লাজার আগুন নিভিয়ে সেখান থেকে ২৭ জনকে উদ্ধার করে। পরদিন পোড়া বাড়ি থেকে ফরিদ আহমেদ (৪৩) নামে এক ব্যক্তির জ্বলসে যাওয়া মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়৷

চার শিক্ষার্থী হত্যার ঘটনায় নিহত আফনান ও সাব্বিরের পরিবারের পক্ষ থেকে বুধবার (১৪ আগস্ট) রাতে সদর থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন ইউনিটের ১৬৬ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৯০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

আগের নিউজ লিংক

লক্ষ্মীপুরে ২ শিক্ষার্থী হত্যা, চেয়ারম্যান টিপুসহ আসামি ১০৬৬

বাংলাদেশ সময়: ১২১৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০২৪
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।