ঢাকা: বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ১৮ বছরের সবাইকে সামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম।
তিনি বলেন, জনগণের সরকারই পারে একাত্তরের চেতনার বাস্তবায়ন করতে।
হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, এ সরকারের (অন্তর্বর্তী সরকার) উচিত ছিল একটি ভালো নির্বাচন কমিশন গঠন করা। কিন্তু তারা সেটি করেনি। কোনো রোডম্যাপ দেয়নি। শুধু ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠন করেছে। সেনানিবাসে আওয়ামী লীগের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও পুলিশ অফিসারদের আশ্রয় দেওয়া উচিত হয়নি।
রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীতে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
‘বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে রাষ্ট্র বিনির্মাণে মুক্তিযোদ্ধাদের করণীয় শীর্ষক’ আলোচনা সভার আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল। মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মুক্তিযোদ্ধা দলের জয়নুল আবদীন, এবি পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ প্রমুখ।
গত জুলাই-আগস্টে আন্দোলন প্রসঙ্গে হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, শুধু ছাত্রদের আন্দোলনে বিপ্লব হয়নি। বিএনপি ১৭ বছর ধরে আন্দোলন করছে। তারই ধারাবাহিকতায় স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পালিয়েছে। আমি বলবো- সবাইকে স্মরণ করবেন। ড. ইউনূস একজন মুক্তিযোদ্ধা। তিনি আমেরিকায় মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কথা বলেছেন। কাজ করেছেন। আমি বলবো- ছাত্র-জনতা সবার সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিন।
তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, অনেকেই মনে করে আপনারা দুর্বল সরকার। সেজন্য আনসার বাহিনী দিয়ে প্রতিবিপ্লবের ষড়যন্ত্র করেছে। সুতরাং আমি বলবো- আপনারা যে দুর্বল নন, সেটি প্রমাণ করতে সবার সঙ্গে মতবিনিময় করেন। মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা নিন।
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, আমাদের সবার রোগ হলো দুর্নীতি। এর বিরুদ্ধে আমাদের ব্যবস্থা নিতে হবে। পাশের দেশ ভারত থেকে সেটা শিখতে পারি। তাদের দেশে আইন করা আছে যে প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতি কারও বিরুদ্ধে দুর্নীতি প্রমাণিত হলে তাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে সরাসরি জেলখানায় নিয়ে যাওয়া যায়। সে ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ আমাদেরও দিতে হবে। দুদককে শক্তিশালী করতে হবে। সংসদ নেতা, বিরোধী দলীয় নেতা ও প্রধান বিচারপতি দুদক চেয়ারম্যানের নিয়োগ দেবেন। যেটি ভারতে রয়েছে।
হাফিজ উদ্দিন বলেন, যারা স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে জীবনবাজি রেখেছেন সেই আহত ব্যক্তিরা হাসপাতালে বিনা চিকিৎসায় কাতরাচ্ছেন। এতো সহজেই তাদের ভুলে গেছেন? আমরা যতদিন বাঁচবো ততদিন আগস্টের আন্দোলনের চেতনা নিয়ে বাঁচতে চাই। এ অধিকার যেন কেউ নষ্ট করতে না পারে, আমরা সজাগ থাকবো। কেননা, শেখ হাসিনা সবাইকে ঢালাওভাবে রাজাকার বলার কারণে দেশের সব শ্রেণি পেশার মানুষ ফুঁসে উঠেছে।
পার্বত্যাঞ্চলে অস্থিরতা প্রসঙ্গে হাফিজ উদ্দিন আরও বলেন, পাহাড়ের লোকজন সহজ সরল। তাদের ভুল পথে পরিচালিত করার ষড়যন্ত্র হয়। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের শক্ত পদক্ষেপের কারণে পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। আমি প্রতিবেশী দেশ ভারতকে বলবো তাদের অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ দিয়ে উসকানি দেবেন না। যুদ্ধ করতে হলে বাংলাদেশের সব মানুষ কিন্তু যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। আগামীতে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ১৮ বছরের সবাইকে সামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হবে। বিশেষ করে ছাত্র-ছাত্রীদের কে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। যা বিশ্বের অনেক দেশে আছে। প্রত্যেক নাগরিক ১/২ বছরের সামরিক প্রশিক্ষণ নিয়ে থাকেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২৪
টিএ/আরআইএস