ঢাকা: বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক বলেছেন, এখনো সময় চলে যায়নি। নির্বাচনের সঠিক তারিখ নির্ধারণ করুন।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের প্রধান শরিক ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) উদ্যোগে ‘গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে ডেমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক মরহুম সাইফুদ্দিন আহমেদ মনির ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এ সব কথা বলেন।
জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, জনগণের মনের আশা পূর্ণ করার জন্যই তো আজকের এই অন্তর্বর্তী সরকার। সেটা কি পূরণ হচ্ছে? সংস্কারের নামে যদি আবার বিলম্ব হয়, সংস্কারের নামে যদি আবার আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মারা এসে বসে যায়, তাহলে তো আমাদের আবার রাস্তায় নামতে হবে। আমরা আর রাস্তায় নামতে চাই না। আমরা মানুষকে শান্তিতে রাখতে চাই। আমরা মানুষকে গণতন্ত্র ফেরত দিতে চাই। আমরা শেখ হাসিনার প্রেতাত্মাদের বাংলাদেশের ক্ষমতায় দেখতে চাই না।
তিনি বলেন, বিএনপি নেতাদের বেলায় মামলা হওয়ার আগেই পুলিশ চলে যায় বাসায়, আর এখন আওয়ামী লীগের গ্রেপ্তার আসামিরা কেন জামিন পায়- জনগণ তা জানতে চায়?
বিএনপির এই নেতা বলেন, এখন মামলা হলে পুলিশ বলে তদন্ত করে দেখব মামলা সঠিক কিনা? কোথায় হারুন? কোথায় বিপ্লব? কোথায় মেহেদী? যারা বিএনপির অফিসকে তছনছ করেছে। নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করেছে, এখন কেন তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হচ্ছে? কেন এখনো আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মাদের টিভি মিডিয়ার সামনে বসতে দেওয়া হচ্ছে? কেন চিনি, পেঁয়াজ, ডিমের দাম বাড়ছে- মানুষ তা জানতে চায়?
ফারুক বলেন, এসব প্রশ্ন শোনার জন্য তো দেশের জনগণ ড. ইউনূসকে সম্মান দেয়নি। বাংলাদেশে যারা আওয়ামী লীগের মতো ষড়যন্ত্র করে দেশের গণতন্ত্রকে হরণ করেছে, দেশের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে যারা ধ্বংস করেছে, যারা হাজার হাজার মায়ের বুক খালি করেছে, আয়না ঘর তৈরি করেছে- তাদের বিচারের আওতায় আনার জন্যই আপনাকে গদিতে বসানো হয়েছে। সংস্কারের নামে কেন দেরি হচ্ছে? সংস্কারও চলবে, গ্রেপ্তারও চলবে। হাসিনাকে আনার ব্যবস্থাও করতে হবে।
বিএনপির সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, গত ১৭ বছরে আওয়ামী লীগের নামে, শেখ হাসিনার নামে, শেখ মুজিবুর রহমানের নামে অনেকগুলো নামকরণ করা হয়েছে। অবিলম্বে এগুলো বাতিল করতে হবে। যারা আত্মাহতি দিয়েছে ছাত্রসমাজ, তাদের নামে নামকরণ করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলেও তাদের দোসররা এখনো প্রশাসনের বিভিন্ন জায়গায় বসে রয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে তারা নানা ষড়যন্ত্র করছে। সুতরাং জনআকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী অবিলম্বে তাদের অপসারণ করতে হবে। এছাড়া নিত্যপণ্যের দাম কমাতে হবে। প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। কারণ, মানুষ ভোট দিতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। আর ওই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দেশে জনগণের পার্লামেন্ট ও জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে।
এনপিপির যুগ্ম মহাসচিব মো. ফরিদ উদ্দিনের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটভুক্ত জাগপার সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান, গণদলের চেয়ারম্যান এটিএম গোলাম মওলা চৌধুরী, এনডিপির চেয়ারম্যান কারী আবু তাহের, মহাসচিব আব্দুল্লাহ আল হারুন সোহেল, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক পার্টির চেয়ারম্যান এস এম শাহাদাত হোসেন, এনপিপির মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল বারিক প্রমুখ।
সভায় সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০২৪
টিএ/আরআইএস