বরিশাল: বরিশালে ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিল করে ফেরার পথে বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী ও সাবেক সংসদ সদস্য মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলিবর্ষণ ও বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় মামলা হয়েছে।
ঘটনার প্রায় ছয় বছর পর হামলার শিকার বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদ বাদী হয়ে মেহেন্দীগঞ্জ থানায় আওয়ামী লীগের ৪১ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন।
এর মধ্যে মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা এবং পৌর আওয়ামী লীগের ১১ নেতার নাম এবং অজ্ঞাতনামা আরও ২০-৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে। গত ৩ নভেম্বর মেহেন্দীগঞ্জ থানা পুলিশ মামলাটি নথিভুক্ত করেন।
আসামিরা হলেন- মেহেন্দীগঞ্জ পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর মো. মনির জমাদ্দার, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল কাদের মিন্টু জমাদ্দার, গনি জমাদ্দার ও জাকির জমাদ্দার। এরা চারজন আপন ভাই। এছাড়া আমির চৌকিদার, রাকিব পোদ্দার, মো. আলী সরদার. বাহাউদ্দিন ঢালী, হারুন মোল্লা, মো. মনির ও মো. হাসান জোমাদ্দার। এরা সবাই উপজেলার চুনারচর, চাঁনপুর, শ্রীপুর, চরহোগলা, মিয়ারচর এলাকার বাসিন্দা এবং আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরিশাল-৪ (হিজলা-মেহেন্দীগঞ্জ) আসনে বিএনপি মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী ও উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদ ২০১৮ সালের ২৮ নভেম্বর দুপুর আড়াইটার দিকে নেতাকর্মীদের নিয়ে মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। ফেরার পথে উপজেলা পরিষদের দক্ষিণ পার্শ্বের রাস্তায় পৌঁছানো মাত্রই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সংসদ সদস্য প্রার্থী মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদের ওপর অতর্কিত হামলা করে। এসময় তারা পিস্তল দিয়ে গুলিবর্ষণ ও বোমা বিস্ফোরণ করে আতঙ্কের সৃষ্টি করে। বোমার স্প্লিন্টারে সংসদ সদস্য প্রার্থীর সঙ্গে থাকা বিএনপি নেতাকর্মী এবং সমর্থকরা গুরুতর আহত হন।
গুলিবিদ্ধ এবং কুপিয়ে জখম করা হয় মামলার সাক্ষী মো. জামাল নলী, মোহাম্মদ আমজাদ পোদ্দার, ইউনুস হাওলাদার, কাজী জহির উদ্দিন ও কাজী মাকসুদকে। তাছাড়া নেতাকর্মীদের কাছে থাকা টাকা, মোবাইল সেট ছিনতাই করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।
বাদী মামলায় দাবি করেছেন, ঘটনার সময় হামলাকারীরা সরকার দলীয় প্রভাবশালী লোক ছিলেন। এজন্য তারা হামলার ঘটনায় কোনো প্রকার মামলা না করার জন্য হুমকি দেন। তাছাড়া আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে রাজনৈতিক প্রতিবন্ধকতা থাকায় মামলা দায়ের করতে বিলম্ব হয়েছে।
মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে মেহেন্দীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাবুবুর রহমান বলেন, গত ৩ নভেম্বর মামলাটি রেকর্ড করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৬, ২০২৪
এমএস/এইচএ/