ঢাকা, শুক্রবার, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

অবরোধের তৃতীয় দিন রাজধানীতে পুড়লো ৫টি গাড়ি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৮, ২০১৫
অবরোধের তৃতীয় দিন রাজধানীতে পুড়লো ৫টি গাড়ি ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: বিএনপির ডাকা অবরোধের তৃতীয় দিন বৃহস্পতিবার (০৮ জানুয়ারি) সকাল থেকে ৫টি গাড়ি পোড়ালো দুর্বৃত্তরা।

বৃহস্পতিবার সারা দিনই ঢাকার পৃথক পৃথক স্থানে গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।

ঘটানো হয়েছে ককটেল বিস্ফোরণও। এতে বিশ্ব ইজতেমার আগে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।

এরমধ্যে প্রথমটি, রাজধানীর বনশ্রীতে রবরব পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন।

বৃহস্পতিবার (০৮ জনুয়ারি) বেলা পৌনে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী সুমন বাংলানিউজকে জানান, ৪/৫ জনের একটি দল রবরব পরিবহনের একটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। এছাড়া কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।

দ্বিতীয়টি, রাজধানীর মহাখালীতে সম্রাট পরিববনের একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেয় অবরোধ সমর্থনকারীরা। এদিন সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

ফায়ার সদর দফতরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনায়েত হোসন বাংলানিউজকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বাসে আগুনের সংবাদ শুনে তেজগাঁও ফায়ার স্টেশন থেকে ২টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভাতে চেষ্টা করে। এ ঘটনায় কোনো হতাহতের সংবাদ পাওয়া যায়নি।

তৃতীয়টি, রাজধানীর মতিঝিল আরামবাগে একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটে এ ঘটনা ঘটে।

ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার নিলুফার ইয়াসিন বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, স্থানীয় লোকজনের দেওয়া খবরের ভিত্তিতে সেখানে একটি ইউনিট পাঠানো হয়। পরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

চতুর্থটি, রাজধানীর শান্তিনগরে তরঙ্গ পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। বিএনপির টানা অবরোধ চলাকালে বৃহস্পতিবার রাতে শান্তিনগর চৌরাস্তা মোড়ে এই আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে।

দুর্বৃত্তরা বাসটিতে আগুন ধরিয়ে দিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। এতে বাস ও আশপাশের এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে কিছু যাত্রী আহত হন। দ্রুত ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে আগুন নেভানো শুরু করে।

পঞ্চমটি, রাজধানীর গুলিস্তান এলাকায় একটি যাত্রীবাহী মিনিবাসে অবরোধকারীরা আগুন দেয়। আগুনে মো. শহীদুল্লাহ (৫২) নামের এক কাফনের কাপড় বিক্রেতা দগ্ধ হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে দুর্বৃত্তরা বাসটিতে আগুন দেয়। শহীদুল্লাহ টাঙ্গাইল জেলার ধনবাড়ি থানার কদমতলী গ্রামে বসবাস করেন।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শহীদুল্লাহ বাংলানিউজকে জানান, আমি কাফনের কাপড় বিক্রি করি। কাপড় কিনতে নারায়ণগঞ্জ যাচ্ছিলাম। টাঙ্গাইল থেকে গাজীপুর এসে গুলিস্তানগামী একটি মিনিবাসে উঠি। ৭টার দিকে বাসটি গুলিস্তান পৌঁছালে জানালা দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দেয় অবরোধকারীরা। তিনি আরও জানান, বাস থেকে নামতে নামতেই আমার বাম হাতের কব্জি পর্যন্ত ও ডান পায়ের হাঁটু পুড়ে যায়। পরে আমার নাতি মোস্তফা আমাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) নিয়ে আসে।

হাসপাতাল বার্ন ইউনিটে কর্তব্যরত চিকিৎসক আগুনে শহীদুল্লাহর শতকরা তিন ভাগ পুড়ে গেছে বলে জানান।

এছাড়া, রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে পরপর ৫টি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।

বৃহস্পতিবার রাত ৮টা ৩৮ মিনিটে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার সময় রাস্তায় পুলিশের উপস্থিতি থাকলেও এর সঙ্গে জড়িত কাউকে তারা আটক করতে পারেনি। এছাড়া প্রাথমিকভাবে এ ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

এদিকে, এ দিন দুপুর সোয়া ১টার দিকে রাজধানীর গেণ্ডারিয়া থানার ধোলাইখাল এলাকার মুরগীটোলায় ঝটিকা মিছিল করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার শিবির কর্মীরা। এ সময় তারা বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটনায়।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, অবরোধের সমর্থনে আকস্মিকভাবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার শিবির কর্মীরা একটি ঝটিকা মিছিল বের করে।   এ সময় তারা পরপর সাত-আটটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ ফাঁকা গুলি চালালে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় তারা।

গেণ্ডারিয়া থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) শফিক বাংলানিউজকে  বলেন, এ বিষয়ে থানায় কোনো খবর আসেনি।

বাংলাদেশ সময়: ২১৫৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৮, ২০১৫

** শান্তিনগরে তরঙ্গ পরিবহনের বাসে আগুন
** গুলিস্তানে বাসে আগুন, কাফনের কাপড় বিক্রেতা দগ্ধ
** নয়াপল্টনে পরপর ৫টি ককটেল বিস্ফোরণ
** আরামবাগে যাত্রীবাহী বাসে আগুন
** মহাখালীতে যাত্রীবাহী বাসে আগুন

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।