ঢাকা: ভারতের আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্প চালুর উদ্যোগে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
বৃহস্পতিবার (২৩ জুলাই) বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমাদ এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
বিবৃতিতে মকুবল আহমাদ বলেন, ভারত আমাদের বৃহৎ প্রতিবেশী দেশ। ভারত ও বাংলাদেশের ওপর দিয়ে ৫৪টি অভিন্ন নদী প্রবাহিত হচ্ছে এবং এসব নদীর পানি বাংলাদেশ হয়ে বঙ্গোপসাগরে গিয়ে পড়ে। ভারত আন্তর্জাতিক আইন-কানুন উপক্ষো করে বিভিন্ন নদীতে বাঁধ দেওয়ায় বাংলাদেশ তার ন্যায্য পানি পাচ্ছে না। আপাতত: ৩টি অভিন্ন নদী নিয়ে আন্ত:নদী সংযোগ প্রকল্প চালুর উদ্যোগ নিলেও পর্যায়ক্রমে পুরো প্রকল্পই বাস্তবায়ন করবে ভারত। উজানের দেশ হিসেবে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী যৌথ নদীর পানি ভাগাভাগির ব্যাপারে আলাপ আলোচনা করা জরুরি। কিন্তু ভারত আলোচনা ছাড়াই বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
মকবুল আহমেদ বলেন, পরীক্ষামূলকভাবে ফারাক্কা বাঁধ চালুর কথা বলা হলেও আজ পর্যন্ত পরীক্ষা শেষ হয়নি। ফলে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় ৬ কোটি মানুষকে এর খেসারত দিতে হচ্ছে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গঙ্গা পানি চুক্তি করা হলেও গ্যারান্টি ক্লজ না থাকায় বাংলাদেশ চুক্তি অনুযায়ী পানি পাচ্ছে না এবং বাংলাদেশ মরুভূমিতে পরিণত হচ্ছে। প্রমত্তা পদ্মা এখন ধু ধু বালুচরে পরিণত হয়েছে। অন্যদিকে বর্ষার সময় ফারাক্কা গেট খুলে দেওয়ার কারণে বাংলাদেশ প্রতিবছরই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
মকবুল আহমাদ বলেন, ভারত সরকার বরাবরই বলে আসছে তারা এমন কোনো প্রকল্প বা বাঁধ দিবে না যাতে বাংলাদেশের জনগণের জন্য ক্ষতির কারণ হয়। বাংলাদেশের জনগণ ভারতের প্রতি এ আস্থা রাখতে আগ্রহী কিন্তু বাস্তবে বাংলাদেশের জনগণ বরাবরই হতাশ হচ্ছে। ফারাক্কা বাঁধের সমস্যার কোনো সমাধান হয়নি। তিস্তা নদীর পানি বন্টন চুক্তি এখনও হয়নি। টিপাইমুখ বাঁধ দেয়া হলে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের প্রায় ৪ কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সর্বশেষ আন্ত:নদী সংযোগ প্রকল্প চালু হলে বাংলাদেশ প্রকৃতপক্ষেই মরুভূমিতে পরিণত হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, এ বিষয়গুলো বাংলাদেশের মানুষের বাঁচা-মরার সাথে জড়িত হলেও সরকারের কোনো উদ্যোগ এবং কার্যকরী পদক্ষেপ নেই।
ভারতের সাথে বিরাজমান অভিন্ন নদীর পানির সমস্যা সমাধানে সরকার কোনে সহযোগিতা চাইলে সরকারকে জামায়াতে ইসলামী সহযোগিতা করতে প্রস্তুত বলেও বিবৃতিতে সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত আমির উল্লেখ করেন।
বিবৃতিতে তিনি সরকারকে যৌথ নদী কমিশনের যৌথ বৈঠকের জন্য ভারতকে চাপ দেওয়ার জন্য আহ্বান জানান।
১৩ জুলাই ভারতের সেচমন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে গণমাধ্যমে ভারত কর্তৃক আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্প চালুর এ খবর প্রকাশিত হয়েছে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৯ ঘণ্টা, জুলাই ২৩,২০১৫
এলকে/আরআই