ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

ছাত্রলীগের সম্মেলন: সমঝোতা, না ভোট?

সাখাওয়াত আমিন, ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০৬ ঘণ্টা, জুলাই ২৪, ২০১৫
ছাত্রলীগের সম্মেলন: সমঝোতা, না ভোট?

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: আগামী ২৫-২৬ জুলাই অনুষ্ঠেয় ছাত্রলীগের ২৮তম সম্মেলনে নতুন নেতা নির্বাচনের প্রক্রিয়া নিয়ে অন্ধকারে রয়েছেন সংগঠনটির পদপ্রত্যশীসহ শীর্ষ নেতারাও। গোপন ব্যালটের মাধ্যমে কাউন্সিলরদের ভোটে সংগঠনটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হবে, নাকি দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা নিজেই কাউকে মনোনীত করবেন, এ নিয়ে ধোঁয়াশা কাটছে না সম্মেলনের একদিন আগেও।



আগামী শনি ও রোববার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। প্রধান অতিথি থাকবেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

বর্তমান ও সাবেক একাধিক ছাত্রলীগ নেতা বাংলানিউজকে এ বিষয়ে বলেন, ছাত্রলীগের প্রতিটি সম্মেলনে আওয়ামী লীগের একজন জ্যেষ্ঠ নেতাকে দায়িত্ব দেওয়া হতো। কিন্তু সম্মেলনের বাকি মাত্র একদিন। অথচ এখনো কাউকেই সে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। তাই ঠিক বোঝা যাচ্ছে না যে, কী হবে। কারণ নেত্রী (শেখ হাসিনা) খোল‍াসা করে এখনো কাউকেই কিছু বলেননি।

প্রক্রিয়া সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা নেই সংগঠনটির শীর্ষ নেতাদেরও। এ ব্যাপারে ছাত্রলীগ সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ বাংলানিউজকে বলেন, নেত্রী যেভাবে চাইবেন, সেভাবেই নেতা নির্বাচিত হবে। তবে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, আমরা সম্মেলনের প্রস্তুতি নিয়ে রাখবো। তারপরও কাউন্সিলরদের ভোটে নেতা নির্বাচিত হবে, নাকি নেত্রী নিজেই কাউকে মনোনীত করবেন, সে সিদ্ধান্ত তিনিই নেবেন।

ছাত্রলীগের নেতা নির্বাচনের পদ্ধতি সম্পর্কে জানা যায়, পদপ্রত্যাশীরা প্রার্থিতার শর্ত পূরণ সাপেক্ষে কাঙ্ক্ষিত পদের জন্য মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। এরপর যাচাই-বাছাই শেষে বৈধ প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হয়। বৈধ প্রার্থীদের মধ্য থেকে কাউন্সিলররা তাদের প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করেন। আর প্রতিটি সাংগঠনিক জেলা থেকে ২৫ জন করে কাউন্সিলর মনোনীত করেন ওই ইউনিটের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।

এর আগে ২০০২, ২০০৬ ও ২০১১ সালের সম্মেলনে গোপন ব্যালটে কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করা হয়।  

তবে সংগঠনটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নির্বাচনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের সময় আর্থিক লেনদেন ও কথিত সিন্ডিকেটের প্রভাবসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। এ প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্নও তুলেছেন অনেক সাবেক ও বর্তমান নেতা। তাই আগের অবস্থায় ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর এ উদ্যোগে শেখ হাসিনারও সায় রয়েছে। তবে শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে এখনও কিছু খোলাসা না করায় সংগঠনটি তাদের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সম্মেলনের সব প্রস্তুতি নিচ্ছে।

ছাত্রলীগের দফতর সূত্রে জানা যায়, ১০১টি সাংগঠনিক জেলা ইউনিট ও দেশের বাইরের ১১টি ইউনিটসহ মোট ১১২টি ইউনিট থেকে কাউন্সিলর তালিকা এবং ছবিসহ ভোটার তালিকার কাজ চূড়ান্ত করা হয়েছে। এবারই প্রথম ছবিসহ ভোটার তালিকা ও বিদেশি ইউনিটগুলোকে ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।

গত ১২ জুলাই থেকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থীদের জন্য মনোনয়ন ফরম বিক্রি করা হয়। গত বুধবার (২২ জুলাই) ছিলো ফরম জমা দেওয়ার শেষ দিন। এদিন সভাপতি পদে ৭৮টি ও সাধারণ সম্পাদক পদে ১৬০টিসহ মোট ২৩৮টি মনোনয়নপত্র জমা পড়ে।

তবে নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে ধোঁয়াশা থাকলেও পদপ্রত্যাশীদের ভিড়ে দিনভর সরগরম থাকছে জাতীয় রাজনীতির সূতিকাগারখ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যবাহী মধুর ক্যান্টিন। সময় যতোই ঘনিয়ে আসছে, বাড়ছে পদপ্রত্যাশীদের দৌড়-ঝাঁপ। ঈদের ছুটি শেষ হতে না হতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, পার্টি অফিসে সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত পদপ্রত্যাশী ও তাদের সমর্থকরা উপস্থিত থাকছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১২০৬ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০১৫
এসএ/আরএম/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।