ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

হাসিনা নয়, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই নির্বাচন চান খালেদা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২০৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১, ২০১৫
হাসিনা নয়, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই নির্বাচন চান খালেদা ছবি: দেলোয়ার হোসেন বাদল / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে নয়, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই নির্বাচন চান বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
 
শনিবার (০১ আগস্ট) রাতে গুলশানে তার রাজনৈতিক কার্যালয়ে রাজশাহী জেলা আইনজীবী সমিতির নবনির্বাচিত প্রতিনিধি ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম রাজশাহী জেলা শাখার নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ দাবি জানান।


 
খালেদা জিয়া বলেন, আমরা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন চাই। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, কয়েকটি সংবাদপত্র আমার বক্তব্য ভুলভাবে উপস্থাপন করেছে। আমরা নাকি নিরপেক্ষ সরকারের দাবি থেকে সরে এসেছি।
 
তিনি বলেন, নির্বাচন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই হতে হবে। ‘হাসিনা মার্কা’ সরকারের অধীনে কোনো নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে না।
 
শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার যৌক্তিকতা তুলে ধরে খালেদা জিয়া বলেন, বিএনপিকে ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে নেওয়ার জন্য তারা (আওয়ামী লীগ) অনেক চেষ্টা করেছিল। তারা ভেবেছিল, আমাদেরকে নির্বাচনে নিয়ে ক্ষমতা জায়েজ করে নেবে। কিন্তু আমরা জানতাম, তারা সব ম্যাকানিজম পাকা করে রেখেছে। ভোটের আগের দিনই তারা ব্যালটবক্স ভর্তি করে রাখবে। এ কারণেই আমরা ২০ দলসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো ভোট বর্জন করি।
 
এ বিষয়টি প্রথমে বিদেশিরা বোঝেনি। তারা বলেছিল, নির্বাচনে না গিয়ে বিএনপি ভুল করেছে। নির্বাচনে গেলেই বিএনপি জিতে যেত। কিন্তু সিটি নির্বাচনে বিদেশিরাও বুঝেছে, বিএনপিকে নির্বাচনে জিততে দেওয়া হতো না। এখন তারা বলছে, নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত ঠিক ছিল- বলেন বিএনপির চেয়ারপারসন।
 
দেশের নির্বাচিত সরকার নেই উল্লেখ করে খালেদা জিয়া বলেন, দেশে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি নেই। অথচ যারা নির্বাচিত ছিল, তাদেরকে একে একে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাজশাহী, সিলেট, গাজীপুর সিটি মেয়রকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
 
নতুন ধারার রাজনীতির প্রতিশ্রুতি দিয়ে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিশোধ-প্রতিহিংসার রাজনীতি আমরা চাই না। কল্যাণের রাজনীতি চাই। এ কারণে ক্ষমতায় গেলেও প্রশাসন, বিচার বিভাগ ও পুলিশ প্রশাসনে এই আওয়ামী লীগ সরকার যাদের নিয়োগ দিয়েছে তাদেরকে আমরা সরিয়ে দেবোনা। ভালো কাজ করলে, যোগ্যতা থাকলেও তাদেরকেও রেখে দেবো।
 
তিনি বলেন, আমরা জানি বিচার বিভাগ ও পুলিশ ডিপার্টমেন্টে দলীয় বিবেচনায় যাদের চাকরি দেওয়া হয়েছে, তাদের ভয় দেখানো হয়, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে কারও চাকরি থাকবে না। আমরা পরিস্কারভাবে বলতে চাই, বিএনপি কারও চাকরি খাবে না। আমরা জানি আপনারা যে কাজগুলো করছেন, তা সরকারের চাপে পড়েই করছেন। সুতরাং আমরা ক্ষমতায় গেলেও আপনাদের চাকরি থাকবে।
 
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোটে থাকা কয়েকটি দলকে ইঙ্গিত করে খালেদা জিয়া বলেন, এরা হলো পরগাছা। শেখ মুজিব বেঁচে থাকতে এরা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নানা কথা বলেছে।
 
তিনি বলেন, এরা যতবার নির্বাচনে দাঁড়িয়েছে জামানত পর্যন্ত বাঁচাতে পারেনি। এখন বড় বড় কথা বলে। এরাই মূলত আওয়ামী লীগকে শেষ করে দিচ্ছে।
 
তিনি আরো বলেন, তারা মনে করে বিএনপিকে শেষ করে, দেশকে ফোঁকলা করে চিরদিন ক্ষমতায় থেকে যাবে। কিন্তু সেটি তারা পারবে না। জনগণের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। তারা আর সহ্য করবে না।
 
মতবিনিময় সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দীন সরকার, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার মাহবুব হোসেন, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দীন খোকন, গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাক অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া, রাজশাহী জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি নাজমুস সাদাত, রাজশাহী জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি এরশাদ আলী প্রমুখ।
 
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৮ ঘণ্টা, আগস্ট ০১, ২০১৫/আপডেট: ২৩২৪ ঘণ্টা
এজেড/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।