ঢাকা: মোস্তাক মীর জাফরের ভূমিকা পালন করেন, তেমনি জিয়াউর রহমান লর্ড ক্লাইভের ভূমিকা পালন করেছেন বলে মন্তব্য আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু’র।
তিনি বলেন, ‘মোস্তাককে টোপ দিয়ে বিশ্বাসঘাতক বানিয়ে মীর জাফরের মতো ছুড়ে ফেলে ক্ষমতা দখল করে আসল নায়ক হন জিয়াউর রহমান।
মঙ্গলবার (০৪ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় আমির হোসেন আমু এসব কথা বলেন।
আমু বলেন, ‘৭৫’র ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে প্রমাণ করার চেষ্টা করা হয়েছে এ হত্যাকাণ্ড পারিবারিক হত্যা কাণ্ড... আওয়ামী লীগকে বোঝানোর চেষ্টা করা হলো সব ঠিক আছে। নেতাকর্মীরা যেন বিদ্রোহ না করে’।
তিনি বলেন, ‘এরপর আড়াই মাসের মাথায় যখন বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে তার নির্দেশনায় যারা মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করেছে সেই চার নেতাকে হত্যা করা হলো। তখন বাঙালি জাতি বুঝতে পারলো এ হত্যাকাণ্ড একটি পরিবারের বিরুদ্ধে ছিল না। এটি ছিল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতার বিরুদ্ধে, বাঙালি জাতির আশা আকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে’।
‘এরপর থেকে চার মূলনীতিকে ছুড়ে ফেলা হলো। অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির পরিবর্তে সাম্প্রদায়িকতা সৃষ্টি করা হলো। গোলাম আযমকে দেশে ফিরিয়ে এনে রাজনীতি করার সুযোগ করে দেওয়া হলো। বাংলাদেশকে নব্য পাকিস্তান বানানোর সব ষড়যন্ত্র এগিয়ে আসলো’।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ১৫ আগস্ট জন্মদিন উদযাপন করায় তার সমালোচনা করে আমির হোসেন আমু বলেছেন, ‘খালেদা জিয়া ১৫ আগস্ট মিথ্যা জন্মদিন পালন করার অর্থ হলো তিনি হত্যাকারীদের ‘ওন’ করেন। হত্যাকারীদের বোঝাতে চান তিনি তাদের সঙ্গে এখনও আছেন’।
আমু আরও বলেন, ‘তিনি তাদের সঙ্গে সরকার গঠন করে, তাদের মন্ত্রিত্ব দিয়ে, তাদের সঙ্গে রাজনীতি করে, রাজনৈতিক জোট করে প্রমাণ করেছেন তাদের সঙ্গেই রয়েছেন’।
বাংলাদেশ সাংবিধানিকভাবে সামনে এগিয়ে যাবে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের এ সিনিয়র নেতা বলেন, ‘শেখ হাসিনার সঙ্গে জনগণ ঐক্যবদ্ধ আছে। সুতরাং কোনো ষড়যন্ত্র টিকবে না’।
এদিকে, বিকেল থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন ওর্য়াড, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগসহ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে জড়ো হতে থাকেন। বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে উৎসবের আমেজ বয়ে যায়। তবে অনুষ্ঠানে নেতাকর্মীদের মধ্যে বসা নিয়ে কয়েক দফা উত্তেজনা, হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র সাঈদ খোকনের সভাপতিত্বে-সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, সাংগঠনিক সম্পাদক আফম বাহাউদ্দিন নাছিম, ঢাকা মহানগরীর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এমএ আজিজ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম, সংসদ সদস্য ফজলে নূর তাপস, সাগুপতা ইয়াসমিন এমিলি, সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক, স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি মোল্লা আবু কাওছার, ছাত্রলীগ সাবেক সভাপতি বদিউজ্জামান সোহাগ, বর্তমান ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ, সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন প্রমুখ।
এতে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা উত্তরের সিটি মেয়র আনিসুল হক।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪১ ঘণ্টা, আগস্ট ০৪, ২০১৫
এমইউএম/আইএ