ঢাকা, শনিবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটিতে চলছে আ’লীগের সহযোগী সংগঠন

শামীম খান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৩১ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০১৫
মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটিতে চলছে আ’লীগের সহযোগী সংগঠন

ঢাকা: বছরের পর বছর ধরে মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটি দিয়ে চলছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অধিকাংশ সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন। এই সংগঠনগুলোর কোনো কোনোটির কমিটির মেয়াদ ১০-১২ বছর পার হয়ে গেলেও সম্মেলন হচ্ছে না।

এর ফলে সংগঠনগুলোর মধ্যে এক ধরনের স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।

আওয়ামী লীগের ১০টি সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের মধ্যে ৯টিরই কেন্দ্রীয় কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ। এর মধ্যে ৫টি চলছে দীর্ঘদিনের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি দিয়ে। বাকি চারটি সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির মেয়াদ সম্প্রতি শেষ হয়েছে।

তবে এসব সংগঠনের সম্মেলন কবে হবে সে ব্যাপারে নির্দিষ্ট করে কেউ কিছু বলতে পারছেন। অক্টোবর নভেম্বরে সম্মেলনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে কেউ কেউ জানিয়েছেন।

আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ৭টি সংগঠন সহযোগী এবং ৩টি ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন রয়েছে। সহযোগী সংগঠনগুলো হলো, যুব লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, কৃষক লীগ, আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ ও তাঁতি লীগ। ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলো হলো, ছাত্রলীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ ও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ।

এসব সংগঠনের মধ্যে মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ এবং তাঁতী লীগের কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে দীর্ঘ দিন আগে।

২০০৩ সালের ১২ জুলাই মহিলা আওয়ামী লীগ, ২০০৪ সালের ১৫ মার্চ যুব মহিলা লীগ, ২০০৪ সালের ৫ সেপ্টেম্বর স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ, ২০০০ সালের ২০ জুলাই আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ এবং ২০০৪ সালের ৮ আগস্ট তাঁতী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

এছাড়া ২০১২ সালের ১১ জুলাই স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ১৪ জুলাই যুবলীগ, ১৭ জুলাই জাতীয় শ্রমিক লীগ এবং ১৯ জুলাই কৃষক লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

দুই বছর কমিটির মেয়াদ পার হওয়ার পর গত ২৫ ও ২৬ জুলাই ছাত্রলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ছাত্রলীগ ছাড়া অন্য সংগঠনগুলোর গঠনতন্ত্র অনুযায়ী প্রতি তিন বছর পর সম্মেলনের কথা রয়েছে।

কিন্তু বছরের পর বছর সম্মেলন না হওয়ায় পুরোনো কমিটি দিয়েই চলছে এই সংগঠনগুলো। এতে সংগঠনের কার্যক্রমও গতানুগতিক হয়ে পড়েছে। নিয়মিত সম্মেলন এবং নতুন নেতৃত্ব না আসায় সাধারণ নেতাকর্মীদের মধ্যে এক ধরনের হতাশা ও ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।

আর এ্ই হতাশা ও ক্ষোভে অনেকেই সাংগঠনিক কার্যক্রম থেকে নিজেদের গুটিয়ে নিচ্ছেন। ফলে সংগঠনের কার্যক্রম সীমিত হয়ে পড়ছে ও সাংগঠনিক স্থবিরতা তৈরি হয়েছে।

আওয়ামী লীগের কর্মসূচিতে অংশ নেয়া ছাড়া আর দিবস ভিত্তিক কিছু কর্মসূচি ছাড়া নিজস্ব তেমন কোনো কর্মসূচি নেই এই সংগঠনগুলোর।

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আক্তার বাংলানিউজকে বলেন, সম্মেলনের জন্য আমাদের সংগঠনের প্রস্তুতি রয়েছে। নেত্রীর(আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা) অনুমতি পেলে যে কোনো সময় আমরা সম্মেলন করতে পারবো। আগামী অক্টোবর-নভেম্বরে সম্মেলনের সম্ভাবনা রয়েছে।

স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা মোহাম্মদ আবু কাউসার বাংলানিউজকে বলেন, সম্মেলন দ্রুতই করে ফেলবো। সম্মেলনের প্রস্তুতি আছে। নেত্রী সময় দিলেই সম্মেলন হবে।

স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের মহাসচিব ইকবাল আরসালান বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের সংগঠনের সাংগঠনিক নেত্রী শেখ হাসিনা সম্মেলনের কথা বলেছেন। অক্টোবরে সম্মেলনের সম্ভাবনা রয়েছে।

তবে আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এই সম্মেলনের আগে সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠগুলোর সম্মেলন করা হবে। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ প্রস্তুতি নিচ্ছে।

সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর সম্মেলন সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, এ সব সংগঠনের সম্মেলনের প্রস্তুতি চলছে। নানা প্রতিকুলতার কারণে সম্মেলন হয়নি। আশা করি দ্রুতই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০০৩১ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০১৫
এসকে/এনএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।