ঢাকা, শনিবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

বাড়ি সংক্রান্ত মওদুদের দুর্নীতি মামলার চার্জ শুনানি ৩০ আগস্ট

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০১৫
বাড়ি সংক্রান্ত মওদুদের দুর্নীতি মামলার চার্জ শুনানি ৩০ আগস্ট ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ

ঢাকা: সরকারি বাড়ি আত্মসাতের দুর্নীতি মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ও তার ভাই মনজুর আহমদের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠনের শুনানির জন্য আগামী ৩০ আগস্ট দিন ধার্য করেছেন আদালত।

৩শ’ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের সরকারি বাড়ি আত্মসাতের অভিযোগে গুলশান থানায় দুর্নীতি মামলাটি দায়ের করে দুর্র্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।



বৃহস্পতিবার (১৩ আগস্ট) মওদুদের আইনজীবী তাহেরুল ইসলাম তৌহিদের আবেদনের প্রেক্ষিতে ঢাকার সিনিয়র স্পেশাল জজ কামরুল হোসেন মোল্লা এ দিন ধার্য করেন।

২০১৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর গুলশান থানায় মওদুদ আহমদ ও তার ভাই মনজুর আহমদের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন দুদকের উপ-পরিচালক হারুনুর রশীদ।

মামলায় বলা হয়, ১৯৬০ সালের ২৪ আগস্ট গুলশান আবাসিক এলাকায় অবস্থিত এক বিঘা ১৩ কাঠা আয়তনের (হোল্ডিং নং ১৫৯) প্লটটি পাকিস্তানি নাগরিক মো. এহসানকে হস্তান্তর করে তৎকালীন ডিআইটি (বর্তমানে রাজউক)।

পরবর্তীতে লিজ গ্রহীতার প্রত্যর্পণ সংক্রান্ত আবেদনের ভিত্তিতে তার স্ত্রী ইনজে মারিয়া প্ল্যাজ (অস্ট্রেলিয়ান) এর নামে ওই প্লটটি ১৯৬৫ সালে লিজ দলিল হিসাবে রেজিস্ট্রি করে দেওয়া হয়।

সরকারি পরিত্যক্ত সম্পত্তি তালিকা প্রণয়ন সংক্রান্ত ‘মিনিস্ট্রি অব ক্যাবিনেট অ্যাফেয়ার্স’ জারির আগেই ইনজে মারিয়া ফ্ল্যাজ ও  মুক্তিযুদ্ধের পরপরই তার স্বামী মো. এহসানের দেশত্যাগের কারণে প্লটটি পরিত্যক্ত হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়।

এজাহারে বলা হয়েছে, মওদুদ আহমদ ওই সম্পত্তি আত্মসাতের অসৎ উদ্দেশ্যে নিজেকে ইনজে মারিয়া ফ্ল্যাজ প্রদত্ত আম মোক্তারনামার (পাওয়ার অব অ্যাটর্নি) দাবিদার দেখানোর জন্য ১৯৭৩ সালের ২ আগস্ট একটি আম মোক্তারনামা তৈরি করেন এবং তা তার সুবিধামতো সময়ে ব্যবহার করেন। পরবর্তীতে নানা কৌশলে বাড়িটি দখলে নিয়ে নিজেকে ইনজে মারিয়া ফ্ল্যাজের ভাড়াটিয়া হিসেবে দেখিয়ে বাড়িটিতে বসবাস করে আসছেন তিনি।

এজাহারে আরও উল্লেখ রয়েছে, এ নারীর (ইনজে মারিয়া) স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে আসার কোনো দালিলিক প্রমাণ না থাকলেও মওদুদ আহমদ তার পাওয়ার অব অ্যাটর্নিতে তা দেখান। পরবর্তীতে ১৯৭৮ সালে তৎকালীন সরকারে যোগদান করে প্রথমে সরকারের মন্ত্রী এবং ১৯৭৯ সালে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে মন্ত্রিসভায় উপ প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে নিজের ক্ষমতার অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে বাড়িটিকে পরিত্যক্ত সম্পত্তির তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার অপচেষ্টা করেন। এরই ধারাবাহিকতায় হোল্ডিং নং ১৫৯নং এর  প্লটটির মূল্য মাত্র ১০০ টাকা  দেখিয়ে বরাদ্দ নেন তিনি। ১৯৮০ সালে প্লটটি রেজিস্ট্রি করা হয়।

পরবর্তীতে ১৯৮৪ সালে ইনজে মারিয়া কর্তৃক জনৈক মহসিন দরবার বরাবরে একটি আম মোক্তারনামা সম্পাদন দেখানো হয়। ইনজে মারিয়া ১৯৮৫ সালে মারা যান। এটা জানা সত্ত্বেও মহসিন দরবার নামের ব্যক্তিকে দিয়ে মৃত ব্যক্তির আম মোক্তার হিসেবে ১৯৮৫ সালে বাড়িটি মওদুদের সহোদর ভাই মনজুর আহমদ বরাবর চুক্তি সম্পাদনা দেখানো হয়।

এজাহারে বলা হয়েছে, মওদুদ তার ভাই মনজুর আহমদকে অবৈধভাবে ওই বাড়ির কথিত মালিক বানানোর কাজে একে অন্যকে সহায়তা করার মাধ্যমে ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় অপরাধ করেছেন।
 
তবে মওদুদ আহমদের পক্ষে দাবি করা হয়, বাড়িটি সরকারি সম্পত্তি নয়, ব্যক্তিগত সম্পত্তি। আর মওদুদ আহমদের ভাই ব্যক্তি মালিকের কাছ থেকেই বাড়িটি ক্রয় করেছেন।

মওদুদের ভাই মনজুর আহমদ পলাতক থাকায় আগেই তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। তিনি বর্তমানে লন্ডনে রয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০১৫
এমআই/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।