ঢাকা: পৌরসভা নির্বাচন থেকে বিএনপি শেষ মুহূর্তেও সরে যেতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।
সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর ধানমন্ডিতে দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আশরাফুল ইসলাম বলেন, এখনও তারা (বিএনপি) নির্বাচনে থাকবে কিনা সেটি নিয়ে আমাদের সন্দেহ আছে। কারণ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সেদিকেই এগিয়ে যাচ্ছেন। শুরু থেকেই তিনি নির্বাচন নিয়ে নানা বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিয়ে আসছেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে আমরা এই সন্দেহ প্রকাশ করছি। তারা বেশিরভাগ সময়ই নির্বাচন থেকে শেষ মুহূর্তে সরে দাঁড়িয়েছে। নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচন, ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনের শেষ মুহূর্তে নির্বাচন বর্জন করেছিল দলটি।
তিনি আরও বলেন, তবে আমরা আশা করছি- এবার তারা নির্বাচনে থাকবেন শেষ সময় পর্যন্ত। শেষ ভোট গণনা পর্যন্ত তারা নির্বাচনে থাকবেন বলে আমরা প্রত্যাশা করি।
নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও অভাবনীয় নিরপেক্ষ হবে বলেও মন্তব্য করেন সৈয়দ আশরাফ।
তিনি বলেন, অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে বলা যায়- বিএনপি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে থাকবে কিনা এ নিয়ে এখনও সন্দেহ আছে। বিএনপি জিতলে নির্বাচন নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠ হবে, আওয়ামী লীগ জিতলে নির্বাচন নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠ হবে না সেটা বলছি না। নির্বাচন কেমন হয়েছে সেটি মানুষ দেখবে। নির্বাচনের সুষ্ঠুতা নির্ণয়ে রেফারি হলো জনগণ ও সংবাদমাধ্যম।
বিএনপি শুরু থেকেই নির্বাচনকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছে অভিযোগ করে সৈয়দ আশরাফ বলেন, তারা বিভিন্ন সময় নানা অভিযোগ করে থাকে। আমরা তদন্ত করে তাদের অভিযোগের কোনো সত্যতা পাইনি। খালেদা জিয়া স্থানীয় নির্বাচন চলাকালে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের বিতর্কিত করেছেন, বুদ্ধিজীবীদের কটাক্ষ করেছেন। তার এই বক্তব্য তো স্থানীয় সরকার নির্বাচনের অংশ না। উনি এসব কথা বলেন কারণ দেশকে ভালোবাসেন না। বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেন না।
‘খালেদা জিয়ার যে মানসিক অবস্থা; উনি কিন্তু এক লাইন লিখতে পারেন না, সুস্থভাবে চিন্তাও করতে পারেন না। কেন এই বক্তব্য উপস্থাপন করলেন? নিশ্চয়ই তার কোনো ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা আছে। আমি খালেদা জিয়াকে অনুরোধ করবো- নির্বাচনের শেষ ভোট গণনা পর্যন্ত নির্বাচনে থাকুন। নির্বাচন বয়কটের মতো কিছু করবেন না’।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন বিতর্কিত হলে খালেদা জিয়ার লাভ কী। নির্বাচন বিতর্কিত হলে খালেদা জিয়ার কোনো লাভ হবে না। নির্বাচন বিতর্কিত হলে গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আমরা গণতন্ত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে দিতে পারি না। এটি এমন কোনো নির্বাচন না যে, আওয়ামী লীগ না জিতলে কালই সরকার পরিবর্তন হয়ে যাবে। আওয়ামী লীগ সব পৌরসভায় জিতলেও কিছু হবে না। আওয়ামী লীগ যদি এক জায়গাতেও না জেতে তাও কিছু হবে না। কারণ এটি স্থানীয় সরকার নির্বাচন মাত্র। সরকার পরিবর্তন হবে পাঁচ বছর মেয়াদ শেষে। এ নির্বাচন অবাধ-নিরপেক্ষ-সুষ্ঠু হবে। গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা বিতর্কিত করলে আবার তা ফিরিয়ে আনা অনেক সময়ের বিষয়।
বিএনপির সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি নাকচ করে দিয়ে সৈয়দ আশরাফ বলেন, বাংলাদেশে অতীতে কোনো দিন স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সেনা মোতায়েন প্রয়োজন হয়নি। আগামীতেও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের প্রয়োজন নেই। নারায়ণঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সেনা মোতায়েন না করলে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্য কমিশনাররা পদত্যাগ করবে এই পরিস্থিতিতেও সেনাবাহিনী সেখানে মোতায়েন করা হয়নি। সেই নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। সে নির্বাচন নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলতে পারেনি।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ড. আব্দুর রাজ্জাক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহম্মদ হোসেন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, আল মাহমুদ স্বপন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্য-নির্বাহী সংসদের সদস্য এনামুল হক শামীম প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০১৫/আপডেট: ২১৪২ ঘণ্টা
এসকে/আরএইচএস/আইএ