ঢাকা: বিএনপির সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনায় আগ্রহী নয় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলটির নেতারা বলছেন এই মুহূর্তে দেশে এমন কোনো সংকট নেই যে, তা নিয়ে বিএনপির সঙ্গে আলোচনা করতে হবে।
মঙ্গলবার (৫ জানুয়ারি) বিএনপির সমাবেশে দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সংকট সমাধানের জন্য আওয়ামী লীগের প্রতি আহ্বান জানান। তবে, খালেদা জিয়ার এই বক্তব্যের মধ্যে তিনি যে ‘সংকট’ শব্দটি উচ্চারণ করেছেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আওয়ামী লীগ নেতারা।
আওয়ামী লীগ নেতারা বলেন, সংকটা কী সেটা স্পষ্ট করে উল্লেখ করতে হবে। দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেছেন, দেশে সংকটা কী সেটাই আমি বুঝছি না। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেছেন, দেশে কোনো সংকট নেই। সংকট পাকিস্তানি খালেদা জিয়ার।
এভাবেই আওয়ামী লীগ নেতারা খালেদা জিয়ার আলোচনার প্রস্তাব উড়িয়ে দেন। তাদের মতে, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে বিএনপির সঙ্গে আলোচনার জন্য অনেক চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু তারা রাজি হয়নি। আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ছাড়া আলোচনার কোনো সুযোগ নেই।
বিএনপিকে আলোচনায় আসতে হলে যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত জামায়াতের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করার শর্ত দিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। সেই সঙ্গে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে এবং ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি থেকে হরতাল-অবরোধে যে মানুষ হত্যা হয়েছে তার জন্য জাতির কাছে বিএনপিকে ক্ষমা চাওয়ার শর্তও দিয়েছেন তারা।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, আসলে কীসের জন্য আলোচনা? দেশে সংকটা কী সেটা আগে খালেদা জিয়া স্পষ্ট করুক। দেশে তো কোনো সংকট নেই। দেশে নির্বাচন হচ্ছে, উন্নয়ন কার্যক্রম এগিয়ে যাচ্ছে। এই মুহূর্তে তাদের সঙ্গে কীসের আলোচনা? এটার প্রয়োজন ছিলো দশম সংসদ নির্বাচনের আগে। আগামী ২০১৯ সালে নির্বাচনের আগে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিয়ে আলোচনা হতে পারে। আগামীতে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন আছে। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়ে তো আর আলোচনার দরকার নেই।
বুধবার (০৬ জানুয়ারি) আওয়ামী লীগের যৌথসভা শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলের যুগ্ম সধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, কার সঙ্গে আলোচনা, যারা ১৪৭ জন মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেছে তাদের সঙ্গে? আলোচনার কথা বলার আগে তাদের এজন্য জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত। আগে ক্ষমতা চাইতে হবে তারপর অন্য কথা বলতে পারে। যারা যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গে আছে, যারা মানুষ পুড়িয়ে মারে, দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত তাদের সঙ্গে আলোচনা বাংলাদেশের মানুষ পছন্দ করে না।
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, দুই বছর আগে তাদের আলোচনার জন্য ডাকা হয়েছিলো। তখন তারা আলোচনায় আসেননি। উল্টো মানুষ পুড়িয়ে মেরেছেন। এখন মনে করছেন আলোচনা করতে হবে। যদি তাই হয়, তাহলে আগে তাদের জাতির কাছে অপরাধের জন্য ক্ষমা চাইতে হবে। তারপর জামায়াত-শিবিরের সঙ্গ ত্যাগ করতে হবে, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে ধারণ করতে হবে। তারপর আলোচনা হতে পারে।
বাংলাদেশ সময়: ০০৩৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৭, ২০১৬
এসকে/এমজেএফ/