ঢাকা: ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে পৌরসভা নির্বাচনে বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে আওয়ামী লীগ। বিদ্রোহীদের চূড়ান্তভাবে কেন বহিষ্কার করা হবে না তা জানতে চেয়ে চিঠি পাঠাতে শুরু করেছে দলটি।
রোববার (২৪ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর ধানমণ্ডি আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে বৈঠক শেষে চিঠি পাঠানো শুরু করে দলটি।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
১৫ কার্যদিবসের মধ্যে জবাব দেওয়ার সময়সীমা বেঁধে দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এসব কারণ দর্শানোর চিঠি পাঠানো হয়।
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কেউ উপযুক্ত জবাব দিতে না পারলে বহিষ্কার করা হবে। যারা কোনো জবাব দেবেন না তাদের ক্ষেত্রে বহিষ্কার আদেশ স্বয়ংক্রিয় ভাবে কার্যকর হয়ে যাবে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বাংলানিউজকে বলেন, পৌর নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্যকারী বিদ্রোহী প্রার্থীদের কেন চূড়ান্তভাবে বহিষ্কার করা হবে না, তা জানতে চেয়ে চিঠি পাঠানো শুরু হয়েছে। ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে জবাব দিতে হবে।
তিনি বলেন, চিঠির জবাব আসার পর তা পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। যারা কোনো জবাব দেবেন না তাদের ক্ষেত্রে বহিষ্কারাদেশ অটোমেটিক্যালি কার্যকর হয়ে যাবে।
পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের কতোজন বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন? জানতে চাইলে হানিফ বলেন, ৬০ থেকে ৬৫ জনের মতো হবেন।
গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর ২৩৪টি পৌরসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
সাংগঠনিক সম্পাদকদের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল আওয়ামী লীগের দেওয়া প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে বিদ্রোহী প্রার্থীদের চিহ্নিত করে স্থানীয় সরকার/পৌরসভা নির্বাচন মনোনয়ন বোর্ড।
নির্বাচন চলাকালে বিদ্রোহী প্রার্থীদের সাময়িক বহিষ্কারের পর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির গত বৈঠকে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্যকারীদের বহিস্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়েছিলো। তার ধারাবাহিকতায় রোববার থেকে চিঠি দিতে শুরু করেছে দলটি।
বৈঠকে উপস্থিত এক নেতা বাংলানিউজকে বলেন, দলের সাংবিধানিক নিয়ম অনুযায়ী কাউকে দল থেকে বহিষ্কারের আগে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়। যদি কারো শৃঙ্খলা ভঙ্গের বিষয়ে দল নিশ্চিতভাবে জানে এবং তার বহিষ্কার অবধারিত হয়, তাদের ক্ষেত্রেও আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। যদি কেউ অন্যায় করেন, সেক্ষেত্রে উপযুক্ত জবাব আসে না। ফলে শেষ পর্যন্ত তাদের জন্য বহিষ্কারাদেশই কার্যকর হয়।
আওয়ামী লীগের একজন কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনসহ আগামী দিনগুলোতে আওয়ামী লীগের কেউ যেন বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার সাহস না পান, সেজন্য পৌর নির্বাচনের বিদ্রোহীদের বিষয়ে কঠোর থাকবে আওয়ামী লীগ।
আগামী মার্চে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। পৌর নির্বাচনে মেয়র পদের মতো ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হবে।
সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, দফতর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৬
এমইউএম/এএসআর