ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

ইউপি নির্বাচনে বিএনপির গরজ নেই

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১১৪ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০১৬
ইউপি নির্বাচনে বিএনপির গরজ নেই

ঢাকা: ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়ে বিএনপির ‘গরজ নেই’ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিএনপি নির্বাচনী কর্মকাণ্ড না চালিয়ে নালিশ করে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।


 
রোববার (২৭ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর খামারবাড়িতে কৃষিবিদ ইন্সিটিটিউট মিলনায়তনে আওয়ামী লীগের স্বাধীনতা দিবসের আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
 
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘ইউনিয়ন কাউন্সিল নির্বাচন হচ্ছে। যার যার প্রতীক নিয়ে ইলেকশন। সেই ইলেকশনে তাদের (বিএনপি) খুব একটা গরজ দেখি না’।
 
‘কেমন জানি একটা ভাসা ভাসা ভাব। শুধু বিরোধী বক্তব্য দিয়েই যাচ্ছে, এটা হবে না ওটা হবে না’।
 
ইলেকশনে বিএনপির কর্মকাণ্ডটা কোথায়? প্রশ্ন রেখে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘শুধু নালিশ করা, নালিশ করে কি পায়? শুধু নালিশ করে যাচ্ছে। কাদের কাছে নালিশ করছে?, কোথাকার কোন ব্রিটিশ এমপি।
 
খালেদার মুখে হাসি নাই
 
বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার প্রতি ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মুখটা করুণ। মুখে কোনো হাসি নাই’।
 
‘হাসি আসবে কোথা থেকে? তার যে পেয়ারের লোকগুলো একে একে ফাঁসি হচ্ছে। একে একে যুদ্ধাপরাধে তাদের শাস্তি হচ্ছে। তাদের প্রতি জনগণের সমর্থন নাই’।
 
মানুষ পোড়ালে খালেদা জিয়ার মুখে হায়েনার হাসি থাকে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘মানুষকে পুড়িয়ে জ্বালিয়ে হত্যা করেন, যখন মানুষ পুড়েছে তখন তার মুখে হাসি ছিলো। নিজেই নিজেকে অবরুদ্ধ করে রেখেছিলেন। তখন তার মুখে নিশ্চয়ই হায়েনার হাসি ছিলো’।
 
‘মানুষ মারতে পারলে তার মুখে হাসি ফোটে। মানুষের ভালো দেখে হাসি ফোটে না। মানুষের হাসি দেখলে তার হাসি মিলিয়ে যায়’।
 
খালেদা জিয়ার ভেতরে পেয়ারে পাকিস্তান মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘পেয়ারে পাকিস্তানের যখন নাস্তানাবুদ অবস্থা দেখে তখন তার খারাপ লাগে’।
 
‘আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি, যারা পরাজিত শক্তির দোসর ছিলো, তাদের এটা ভালো লাগবে না। ভালো না লাগারই কথা। ’
 
বিগত সময়ে বিএনপি আন্দোলনের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মানুষ পুড়িয়ে কোনো আন্দোলন হয় না, এটা হত্যাকাণ্ড। কাজেই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে মানুষের সমর্থন আদায় করা যায় না’। ’
 
সরকারকে হেয় বা ব্যতিব্যস্ত করার চেষ্টা চলছে
সরকারের বিরুদ্ধে অপতৎপরতা অব্যহত রয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে অর্থনীতি মুজবুত ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে, আমরা যখন স্বাধীনতা চেতনায় দেশকে এগিয়ে নিচ্ছি, দেশ যখন উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে পাশাপাশি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আমরা করছি। তখন নানাভাবে আমাদের সরকারকে হেয় করার বা ব্যতিব্যস্ত করার চেষ্টা অব্যহত রয়েছে’।
 
তিনি বলেন, ‘ওই পরাজিত শক্তির দোসররা তো এমনিতেই থেমে যাবে না। তারা সব সময় সক্রিয় থাকবে। এটা মাথায় রেখে চলতে হবে। তাদের মোকাবেলা করে আমাদের জয়ী হতে হবে’।
 
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা শত প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলা করে এগিয়ে যাচ্ছি। এই প্রতিবন্ধকতা দেশের ভেতরে, বাইরে। বার বার বাধা আসে, সেই বাধাগুলো অতিক্রম করেই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি’।
 
গোটা বিশ্বে বাংলাদেশের মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানের কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এগিয়ে যাচ্ছি বলেই আজকে সারা বিশ্বের দৃষ্টি বাংলাদেশের প্রতি। উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে তারা বাংলাদেশকে দেখছে। অনেকের কাছে এ বিষ্ময় বাংলাদেশ কিভাবে পারে?
 
সরকার সেবার মনোভাব নিয়ে কাজ করছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা একটা নীতি আর্দশ নিয়ে চলি। সেই নীতি আদর্শ নিয়ে দেশের মানুষের সেবা করবো। সেবার মনোভাব নিয়ে আমরা কাজ করি’।
 
‘ক্ষমতা মানে নিজের ভাগ্য গড়া নয়, ক্ষমতা আমাদের কাছে হচ্ছে, দেশের মানুষের ভাগ্য গড়ে তোলা। মানুষের কল্যান করা। এটা জাতির পিতা আমাদের শিখিয়ে দিয়ে গেছেন’।
 
তিনি বলেন, ‘শোষিত বঞ্চিত মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা। এটাই আমাদের লক্ষ্য। সে লক্ষ্যে নিয়ে আমরা কাজ করছি’।
 
স্বাধীনতার সুফল মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছাতে শুরু করেছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যখনই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে, তখন দেশের মানুষ আস্থা ফিরে পায়, বিশ্বাস ফিরে পায় আর দেশের মানুষের মঙ্গল হয়’।
 
আওয়ামী লীগের নীতির কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসে তখন আমরা মনে করি, আমরা ভিক্ষে করে চলবো না, নিজের পায়ে দাঁড়াবো। আর বিএনপি যখন ক্ষমতায় থাকে তখন তাদের বক্তব্য হলো বাংলাদেশ যদি খাদ্যে ঘাটতি থাকে, অর্থনৈতিকভাবে দূর্বল হয় তাহলে ভিক্ষে পাওয়া যায়, অনুদান পাওয়া যায়’।
 
আত্মমর্যাদা ও সততার সঙ্গে চলার ওপর গুরুত্ব দিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমরা নিজেদের ঘাম, নিজেদের রক্ত, শ্রম দিয়ে যা কামাই করবো তা দিয়ে, সৎ পথে কামাই করে যদি নুন ভাত খাই, তা আমাদের কাছে অনেক মূল্যবান। চুরি করে, ভিক্ষে করে বিরানি খাওয়ার চেয়ে’।
 
‘এই নীতিতে বিশ্বাস করি। বঙ্গবন্ধুর আর্দশে বির্শ্বাসী তাদের এই নীতিতে থাকা উচিত। সেভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। ’
 
আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি প্রমুখ।
 
সভা পরিচালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
 
বাংলাদেশ সময়: ২১৪২ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০১৬
এমইউএম/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।