ঢাকা: তৃতীয় ধাপের ৬শ ১৬টি ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে শনিবার (২৩ এপ্রিল)। তবে সব পদেই প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় দু’টি ইউপিতে কোনো ভোটগ্রহণ হচ্ছে না।
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব মো. ফরহাদ হোসেন বাংলানিউজকে জানান, শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত হিসাব অনুযায়ী, শনিবার ৬শ ১৬ ইউপির নির্বাচন। তবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ৬১৪ ইউপিতে।
৬১৬ ইউপির মধ্যে আওয়ামী লীগের ২৫ প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। আর দু’টি ইউপিতে সব প্রার্থীই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় ভোটগ্রহণ হবে ৬১৪টিতে। ওই দুই ইউপির একটি হচ্ছে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার চরমোহনা ইউপি। অপরটি একই উপজেলার চরবংশী (উত্তর) ইউপি। এ দু’টি ইউপির প্রতিটিতে একজন করে দু’জন চেয়ারম্যান প্রার্থী, সংরক্ষিত ওয়ার্ডের ছয় নারী সদস্য প্রার্থী ও ১৮ জন সাধারণ ওয়ার্ডের প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
২৩ এপ্রিল ভোটের জন্য প্রথমে ৬৮৫টি ইউপির তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। তবে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন পর্যন্ত প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পারায় রাঙামাটি ও বান্দরবানের ৫৩ ইউপির নির্বাচিন বাতিল করে ইসি। এরপর আরও কিছু ইউপিতে আইনি জটিলতার কারণে শেষ পর্যন্ত শনিবার (২৩ এপ্রিল) ৬১৬টির নির্বাচন হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) ইসির জনসংযোগ পরিচালক এসএম আসাদুজ্জামান ৬২০ ইউপিতে নির্বাচন হচ্ছে জানালেও শুক্রবার চারটি ইউপি নির্বাচন স্থগিত করা হয়।
তৃতীয় ধাপে নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী রয়েছে ২ হাজার ৬৭০ জনের মতো। সাধারণ সদস্য পদে রয়েছে প্রায় ২১ হাজার জন। আর সংরক্ষিত সদস্য পদে রয়েছে প্রায় ৬ হাজার ৩শ জন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী।
এ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের ২৫ জন, সাধারণ সদস্য পদে ১৭৪ জন ও সংরক্ষিত সদস্য পদে ৭৯ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে ১ কোটি ৯ লাখ ৮০ হাজার ৩৫৫ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাচ্ছেন। ছয় হাজারের বেশি ভোটকেন্দ্রে লক্ষাধিক ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ও দুই লাখের মতো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত থাকবে।
নির্বাচনে ১৪টি রাজনৈতিক দল চেয়ারম্যান পদে ১ হাজার ৪৮৭ জন প্রার্থী দিয়েছে। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন ১ হাজার ১৮৫ জন। দলীয় প্রার্থীদের মধ্যে আওয়ামী লীগের রয়েছে ৬২০ জন, বিএনপির ৫৩৯ জন, জাতীয় পার্টির ১৬৭ জন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ’র ২৬ জন, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির ১২ জন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ’র ৯২ জন, জাতীয় পার্টি-জেপি’র ৩ জন। এছাড়া খেলাফত মজলিসের ২ জন প্রার্থী, বিকল্পধারার ৩ জন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির ৫ জন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ’র ১০ জন, ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশ’র ৩ জন, বাসদ ১ জন ও অন্যান্য ৪ জন।
ইসির সংশ্লিষ্ট শাখার উপ-সচিব মো. সামসুল আলম বলেন, কেন্দ্রে কেন্দ্রে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ও নির্বাচনী মালামাল পৌঁছে গেছে। শনিবার (২৩ এপ্রিল) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচনী এলাকায় ইতোমধ্যে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
দেশের প্রায় সাড়ে চার হাজার ইউপিতে এবার ছয় ধাপে ভোটগ্রহণ করছে ইসি। দুই ধাপের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আগামী ৭ মে অনুষ্ঠিত হবে চতুর্থ ধাপের নির্বাচন। এরপর ২৮ মে পঞ্চম ধাপ ও ৪ জুন ষষ্ঠ ধাপের ভোটগ্রহণের মাধ্য দিয়ে শেষ হবে ইউপি নির্বাচন।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০১৬
ইইউডি/এএ