ঢাকা: দেশে চলমান ‘তামাশার’ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন বায়স্কোপ দেখাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ্ আল নোমান।
সাংবাদিক শফিক রেহমান, মাহমুদুর রহমান ও শওকত মাহমুদসহ গ্রেফতারকৃত সকলের মুক্তির দাবি ও জিয়াউর রহমানের মাজার স্থানান্তরের ‘চক্রান্তের’ প্রতিবাদে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
রোববার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে জাতীয়তাবাদী জিয়া সমাজ কল্যাণ পরিষদ এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
‘এর আগে ছোট বেলায় মার কাছ থেকে আট আনা নিয়ে যে বায়স্কোপ দেখেছিলাম, আজকে নির্বাচনের নামে একই দেখছি। বায়স্কোপে ছিল, ‘আখার দেখো-বাখার দেখো জার্মানির যুদ্ধ দেখো’। আজকে নির্বাচনের নামে বন্দুক নিয়ে লড়াই দেখছি। এমন কোনো ভোটকেন্দ্র দেখিনি, যেখানে যুদ্ধ হয়নি। এটা একটি ‘প্রহসন ও ডাকাতির’ নির্বাচন। এই নির্বাচনকে নির্বাচন বলা যাবে না’- বলেন আব্দুল্লাহ্ আল নোমান।
চলমান নির্বাচনে ইসির সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বিএনপির পক্ষ থেকে কিছু দাবি নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে দেখা করেছিলাম। কিছু দাবিও উপস্থাপন করেছিলাম। কিন্তু ইসি আমাদের কোনো দাবি রাখেননি। আমরা ইসিকে প্রস্তাব দিয়েছিলাম, ভোটের আগে যেখানে গুণ্ডারা অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেবে, সেখানকার নির্বাচন বন্ধ করতে হবে। এতে করে সন্ত্রাসীরা আর ভোটকেন্দ্র দখলের চিন্তা করবে না। কিন্তু আমরা কি দেখছি? ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের একটি কেন্দ্রও নেই, যেখানে বন্দুকযুদ্ধ হয় নি। চর দখলের মতো ভোটকেন্দ্রও দখল হয়ে যাচ্ছে। প্রহসনের নির্বাচনে প্রতিনিয়তই প্রাণ ঝরছে’।
‘এখনও নির্বাচন কমিশন কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। মানুষকে মেরে হত্যা করে সবাই নির্বাচিত হচ্ছেন। এ নির্বাচন দেখে আমারও লজ্জা লেগেছে। জানি না, প্রধান নির্বাচন কমিশনারের লজ্জা লেগেছে কি-না’।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আর মার খাবো না। আঘাত এলে প্রত্যাঘাত করবো। আমাদের কৌশল নিতে হবে, আর মার খাওয়া যাবে না’।
রানা প্লাজা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের প্রসঙ্গে নোমান বলেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশের অর্ধেকেরও বেশি গার্মেন্টস বন্ধ হয়ে গেছে। এ খাত ধ্বংসের মুখে। আমরা দেখেছি, তিনটি বছর পার হয়ে গেলেও রানা প্লাজার ক্ষতিগ্রস্তরা এখনও ক্ষতিপূরণ পাননি। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো আজকে অসহায়’।
দেশে ডলার সংকটের বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা তিন শতাংশ হারে যে ঋণ নিচ্ছি, তা অদূর ভবিষ্যতে পরিশোধ করতে পারবো না। কারণ, দেশে ডলার সংকট। আমরা এর আগে বলেছি, রিজার্ভ গলার ওপরে উঠে গেছে। আজকে কি দেখলাম, ডলার ছিনতাই হয়ে গেছে’।
সংগঠনের সভাপতি এম গিয়াস উদ্দিন খোকনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সুকোমল বড়ুয়া, ব্যারিস্টার পারভেজ আহমেদ, ‘দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও’ আন্দোলনের সভাপতি কে এম রাকিবুল ইসলাম রিপন প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০১৬
এমআইএস/আরআইএস/এএসআর