ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

‘আম’ নিয়ে শুনানি: নিলুর পাল্লা ভারী!

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০১৬
‘আম’ নিয়ে শুনানি: নিলুর পাল্লা ভারী!

ঢাকা: ন্যাশনাল পিপলস পার্টি-এনপিপি’র ‘আম’ প্রতীক নিয়ে বিরোধ উত্থাপনের পর দু’পক্ষের শুনানি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এক্ষেত্রে শেখ শওকত হোসেন নিলু এবং ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ এই দুই পক্ষের কাছ থেকেই প্রয়োজনীয় দলিল-পত্র নিয়েছে সংস্থাটি।

এতে নিলুর পাল্লা ভারী বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
 
সূত্র জানিয়েছে, গত ডিসেম্বরে ‘আম’ প্রতীক চেয়ে ফরহাদ ইসিতে দাবি জানালে বিরোধটি আমলে নেয় নির্বাচন কমিশন। এরপর বিরোধ মিমাংসায় গত ১৫ এপ্রিল দু’পক্ষের শুনানি নির্ধারণ করা হয়। তবে ওই সময় নিলু শুনানিতে এলেও ফরহাদ সময় চেয়ে আবেদন করেন। পরবর্তীতে ২৫ এপ্রিল তাকে শুনানির জন্য সময় দেওয়া হয়। সে মোতাবেক সোমবার (২৫ এপ্রিল) ফরহাদের শুনানিও সম্পন্ন হলো।
 
জানা যায়, ২০১৪ সালে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ড. ফরহাদকে মহাসচিব পদ থেকে বহিষ্কার করে এনপিপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি। কিন্তু সম্প্রতি সে নিজেকে দলটির কর্ণধার দাবি করে ‘আম’ প্রতীক চায়। তবে এ নিয়ে নিলু কোনো অভিযোগ করেননি।
 
ইসি কর্মকর্তারা জানান, দু’পক্ষের শুনানি সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে দলিল-পত্র বিশ্লেষণ করে দেখা হচ্ছে। দু’পক্ষের যুক্তি অনুযায়ী, দু’পক্ষই গঠণতন্ত্র লঙ্ঘন করেছেন। কেননা, দলটির গঠনতন্ত্রে পরপর দু’বারের বেশি সভাপতি, মহাসচিব পদে থাকার বিধান নেই। কিন্তু নিলু ও ফরহাদ দু’জনই দু’বার সভাপতি, মহাসচিব পদে ছিলেন।
 
তবে ফরহাদ ইসিতে অভিযোগ দায়েরের এক বছর আগেই দলের গঠনতন্ত্র সংশোধন করে ওই বিধানটি তুলে দেওয়া হয়। তাই দু’বারের বেশি সভাপতি পদে থাকতে বাধা নেই।
 
এ বিষয়ে নিলু বাংলানিউজকে বলেন, বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পোস্টার ছাপানোর অভিযোগে ড. ফরহাদকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল ২০১৪ সালের ১৮ জুলাই। এরপর একই বছর ২২ অক্টোবর দলের কাউন্সিল করে নতুন কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু এর প্রায় দেড় বছর পর তিনি ইসিতে বিরোধ উত্থাপন করেছেন। অথচ এই কমিটির মাধ্যমে আমরা বেশ কয়েকটি নির্বাচনেও অংশ নিয়েছি।
 
তিনি বলেন, এনপিপি’র নির্বাহী কমিটির সদস্য সংখ্যা ১৫১ জন। কিন্তু ড. ফরহাদ ইসিতে যে কমিটি জমা দিয়েছেন তাতে ২১ জনের নাম দিয়েছেন। যেখানে ১৪ জনই ভুয়া। এমনকি অন্য দল করেন, এমন নেতাকেও তিনি এনপিপি’র সদস্য হিসেবে দেখিয়েছেন। আর নিলুর পক্ষেই রয়েছেন অবশিষ্টরা।
 
এ বিষয়ে জানতে ড. ফরহাদের মোবাইলে বেশ কয়েকবার ফোন দিয়ে তা খোলা পাওয়া যায়নি।
 
ইসির সংশ্লিষ্ট শাখার প্রশাসনিক কর্মকর্তা রুমান মাহবুব চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, ড. ফরহাদ যে কমিটি জমা দিয়েছেন, তাতে তিনি নিজেকে এনপিপি’র বর্তমান সভাপতি হিসেবে উল্লেখ করেছেন। এর যুক্তি হিসেবে তিনি শুনানিতে বলেছেন, সে আগে মহাসচিব পদে দুইবার দায়িত্ব পালন করেছেন। আর এখন সভাপতি হয়েছেন।
 
নিলু বলছেন, এনপিপি’র নির্বাহী কমিটি তাকে বহিষ্কার করেছে। তিনি কী করে সভাপতি হন।
 
তবে সব বিষয় পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত দেবে নির্বাচন কমিশন। তবে সবকিছু বিবেচনায় রায় নিলুর পক্ষেই যেতে পারে বলে জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা।

সম্প্রতি জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের ‘মশাল’ প্রতীক নিয়েও বিরোধ উত্থাপন হলে হাসানুল হক ইনুর নেতৃত্বাধীন অংশটির পক্ষেই রায় দেয় ইসি। তবে সে সিদ্ধান্ত বাতিল করতে অপর পক্ষের সভাপতি শরিফ নুরুল আম্বিয়া, কার্যকরী সভাপতি মঈনুদ্দীন খান বাদল ইসিকে উকিল নোটিশ দিয়েছে।
 
বর্তমানে ইসিতে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৪০টি।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০১৬
ইইউডি/আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।