গৌরীপুর, ময়মনসিংহ থেকে: মুখে হাসি নেই চা দোকানি খোকন মিয়ার। পঁয়ত্রিশের কোটায় বয়স।
কিন্তু উপ-নির্বাচনে ভোট উৎসব না থাকায় তার চায়ের দোকানে ভিড় নেই। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রের মতোই মন্দাবস্থা তার দোকানেও।
ফাঁকা দোকান দেখিয়ে ভার মুখ নিয়ে খোকন মিয়া বললেন, ‘মানুষ নাই। চা বেচতে পারতাছি না। মনে করছিলাম বাম্পার ব্যবসা অইবো। অহন দেহি ব্যবসা একবারে মন্দা। ’
সোমবার (১৮ জুলাই) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে গৌরীপুর উপজেলার রাজেন্দ্র কিশোর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র লাগোয়া চায়ের দোকানে বসে আলাপ হচ্ছিল খোকনের সঙ্গে।
তার বাড়ি স্থানীয় পশ্চিম দাপুনিয়া এলাকায়। খোকন জানান, প্রায় পৌনে ৩ ঘণ্টায় ২শ’ টাকার মতো বিক্রি করেছেন।
শুধু খোকন মিয়ার চায়ের দোকান নয়, স্থানীয় আরো বেশ কয়েকটি ভোটকেন্দ্রের চায়ের দোকানগুলোতেও একই রকম চিত্রের দেখা মেলে।
ইউনিয়ন পরিষদ কিংবা পৌরসভা নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রগুলোর আশেপাশে মেলার মতো রকমারি পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেন ক্ষুদে ব্যবসায়ীরা।
কিন্তু ময়মনসিংহ-৩ (গৌরীপুর) আসনের উপ-নির্বাচনে গ্রামীণ এসব পণ্যের দোকান বসেনি। নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও অন্যান্য দলের প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদেরও ভিড় নেই ভোটকেন্দ্রের আশেপাশে।
ভোটের দিনে বেলা বাড়ছে। আকাশ থেকে সরে যাচ্ছে গুচ্ছ গুচ্ছ কালো মেঘ। প্রখর হচ্ছে রোদ। বিক্রি-বাট্টায় ভাটা কেন জানতে চাইলে রাজেন্দ্র কিশোর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র’র ঠিক সামনের চা-বিস্কুটের দোকানি আব্দুর রশিদ (৫০) উল্টো প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘এইড্যা কী নির্বাচন। প্রার্থীরা কোনো পয়সা-পাতি খরচা করে নাই। কর্মী-সমর্থকরা দোকানে ভিড়বো কেমনে?’
এ উপ-নির্বাচনে প্রার্থীদের ভ্যানে কিংবা মাইলের পর মাইল গ্রামের মেঠোপথ হেঁটে ভোটকেন্দ্রে পাড়ি জমানোর দৃশ্যও চোখে পড়লো না।
সকাল থেকে দুপুর নাগাদ ভোটকেন্দ্রগুলোতে ভোটার উপস্থিতি একেবারে কম। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও অলস বসে সময় কাটাচ্ছেন।
ময়মনসিংহ-৩ (গৌরীপুর) আসনে মোট ভোটার ২ লাখ ৬২ হাজার ২শ’ ৩৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ১৩ হাজার ও নারী ভোটার ১ লাখ ১২ হাজার ৩শ’ ৪৩ জন।
এখানে আ’লীগ প্রার্থী নাজিম উদ্দিনসহ মোট ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
আরও পড়ুন.. ** ভোটকেন্দ্রে হাহাকার!
বাংলাদেশ সময়: ১২২১ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০১৬
এমএএএম/জেডএস