ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

সুন্দরবন রক্ষায় ঐক্যের ডাক জাতীয় কমিটির

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১৬
সুন্দরবন রক্ষায় ঐক্যের ডাক জাতীয় কমিটির ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

সুন্দরবন রক্ষায় জনসাধারণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি। শনিবার (২৬ নভেম্বর) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত মহাসমাবেশে এ আহ্বান জানানো হয়।

ঢাকা: সুন্দরবন রক্ষায় জনসাধারণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি।  

শনিবার (২৬ নভেম্বর) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত মহাসমাবেশে এ আহ্বান জানানো হয়।


 
রামপাল প্রকল্প বাতিলসহ ও ৭ দফা দাবিতে আয়োজিত এ মহাসমাবেশে যোগ দেয় জাতীয় গণফ্রন্ট, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), গণসংহতি আন্দোলনসহ কয়েকটি দল ও সাংস্কৃতিক সংগঠন।
 
সমাবেশে জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আনু মুহাম্মদ বলেন, ৩৫ লাখ মানুষ সুন্দরবনের ওপর সরাসরি নির্ভরশীল। বন ধ্বংস হলে প্রায় পাঁচ কোটি মানুষ সরাসরি প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখে পড়বে। তারপরও এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সরকার। আসলে নামেই বাংলাদেশ সরকার। আসলে তারা ভারত, চীন, যুক্তরাষ্ট্রপন্থি সরকার।
 
বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান বলেন, গদি রক্ষা করতে সাম্রাজ্যবাদের হাতে সকল কর্তৃত্ব সমর্পণ করছে সরকার। রাজধানী শহরে প্রধানমন্ত্রী বসবাস করেন। শহরের এত কাছে বুড়িগঙ্গা নদী তিলে তিলে মরে যাচ্ছে। সরকার তো এ নদী রক্ষা করছে না। ঢাকার চারপাশের নদী দখল হয়ে যাচ্ছে তিনি তো এসব দখলমুক্ত করতে পারছেন  না। আসলে প্রকৃত উন্নয়ন চান না সরকার।  
 
কোনো ধরনের ব্যত্যয় ঘটার আগেই এ ধরনের ধংসাত্মক প্রকল্প থেকে ফিরে আসবেন সরকার বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।  
 
জাতীয় কমিটির সদস্য অর্থনীতিবিদ এম এম আকাশ বলেন, সরকার বলছে রামপাল প্রকল্পে আল্ট্রাসুপার টেকনোলজি ব্যবহার করা হবে। অথচ প্রকল্প ম্যানেজার নাকি এ টেকনোলজির কথা জানেনই না। তাহলে কে মিথ্যা বলছেন, সরকার নাকি প্রকল্প ম্যানেজার। নাকি প্রকল্পের নামে জনগণের সাথে ভাঁওতাবাজি করছেন সরকার।  
 
কলাম লেখক সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, দেশের মালিক জনগণ। আমি নিশ্চিত রামপাল প্রকল্প বাতিল করতে গণভোটের আয়োজন করা হলে ১ শতাংশ মানুষও এর পক্ষে ভোট দেবেন না।
 
জনগণের প্রতি এক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, আমরা সব যুক্তি-তর্ক নিয়ে হাজির হয়েছি। জনগণ আমাদের পক্ষে। এ আন্দোলন আমাদের প্রকৃতি রক্ষার, সার্বভৌমত্ব রক্ষার। সময় থাকতে জনগণের কথা শুনুন। তা না হলে জনস্রোত আপনার গতি নড়িয়ে দেবে।
 
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী বি ডি রহমত উল্লাহ বলেন, যেখানে বিশ্বব্যাপী এ প্রকল্পের বিরোধিতা করা হচ্ছে, সেখানে একমাত্র এ দেশের সরকারই এ প্রকল্প বাস্তবায়নে উঠে পড়ে লেগেছে।  কয়লা হচ্ছে বিষাক্ত জ্বালানি। যা থেকে বের হওয়া কার্বণ প্রাণ, প্রকৃতি, পরিবেশ নষ্ট করে। অথচ দেশের বজ্যপদার্থ থেকে খুলনায় ১০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব। কিন্তু সরকার তা করছে না। কারণ ভারতীয়দের খুশি করতেই এই বন-বিনাশী প্রকল্প তৈরি করছে সরকার।
 
গণফ্রন্টের প্রধান সমন্বয়ক টিপু বিশ্বাস বলেন, সরকারের উন্নয়ন লুটপাটের উন্নয়ন। যদি তারা দেশপ্রেমিক হতেন, তাহলে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্প থেকে অনেক আগেই সরে আসতেন। আইয়ুব খান যেমন ধ্বংস হওয়ার আগে উন্নয়নমুখী নানা লুটপাট প্রকল্প হাতে নিয়েছিল, এই সরকারও তাই করছে। আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি সরকারকে ধ্বংস করতে প্রতিনিয়ত এগিয়ে আসছে জনগণ।

সমাবেশে কিউবার অবিসংবাদিত বিপ্লবী নেতা ফিদেল কাস্ত্রোর মৃত্যুতে ১ মিনিট দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করা হয়।

এর আগে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে সুন্দরবন রক্ষায় সংগীত পরিবেশন করেন কণ্ঠশিল্পী কৃষ্ণকলিসহ বেশ কয়েকটি খ্যাতনামা ব্যান্ডের শিল্পীরা।  

জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি শহীদ মিনার থেকে শুরু হয়ে প্রেসক্লাব চত্বর হয়ে শহীদ মতউল-কাদের চত্বরে এসে শেষ হয়।
 
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১৬
জেডএফ/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।