ঢাকা: বিজয়কে সুসংহত করতে সাম্প্রদায়িকতা প্রতিহত করার শপথ নিয়ে রাজধানীতে বর্ণাঢ্য বিজয় র্যালি করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। লাখো জনতার অংশগ্রহণে এ র্যালি অনুষ্ঠিত হয়।
শুক্রবার (১৬ ডিসম্বর) বিকেলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান সংলগ্ন ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটশনের সামনে র্যালি পূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশ থেকে সাম্প্রদায়িকতা প্রতিহত করার শপথ নেওয়া হয়।
সমাবেশ থেকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিজয় র্যালির উদ্বোধন ঘোষণা করে বলেন, বিজয়কে সুসংহত করার প্রধান বিপদ সাম্প্রদায়িকতা। আজকের শপথ- শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সাম্প্রদায়িকতাকে প্রতিরোধ, প্রতিহত করবো। সাম্প্রদায়িকতাকে পরাজিত করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করবো এটাই আজকের দিনের শপথ।
র্যালিতে অংশ নিতে দুপুর থেকে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতা-কর্মীরা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটশনের সামনের রাস্তায় সমবেত হতে থাকেন। নেতা-কর্মীরা ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন থানা, ওয়ার্ড, মহল্লা থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশে আসেন। বিকেল ৩টায় সমাবেশ শুরু হওয়ার আগেই মৎস্য ভবন থেকে শাহবাগ পর্যন্ত রাস্তা লোকে লোকারণ্য হয়ে পড়ে। ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত এ র্যালিতে শিশু, কিশোর, ছাত্র, যুবাসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।
বিকেল সোয়া ৩টায় ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনের উদ্দেশে র্যালি শুরু হয়। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর নেতৃবৃন্দ র্যালির নেতৃত্ব দেন। র্যালিটি শাহবাগ, অ্যালিফ্যান্ট রোড, সায়েন্সল্যাবরেটরি, মিরপুর রোড ধরে কলাবাগান, রাসেল স্কয়ার হয়ে বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
র্যালিতে নেতাকর্মীরা বিভিন্ন আকৃতির জাতীয় পতাকা, ব্যানার, ফেস্টুন বহন করেন। তারা জাতীয় পতাকা মাথায় বেঁধে এবং লাঠির মাথায় বাঁধা ছোট ছোট জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে র্যালিতে স্লোগান দেন এবং আনন্দ উল্লাস করতে থাকেন। হাজারো জনতার এই র্যালিতে শত শত ট্রাক, পিকাপ ভ্যান, বাসে চড়ে, পায়ে হেঁটে নেতাকর্মীরা র্যালি নিয়ে এগিয়ে চলে।
এ বছার র্যালিতে গাড়ির সংখ্যা অনেক বেশি লক্ষ্য করা যায়। এ সময় র্যালিতে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ, দেশাত্ববোধক গান, ব্যান্ড, ঢাক-ঢোল বাজতে থাকে।
অনেকে মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহ্য ধারণ করে নানা সাজে সজ্জিত হয়ে আসেন। গায়ে কাদা-মাটি মেখে হাতে কাঠের বন্দুক নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা সাজেন অনেকে। ট্রাকের উপর কলাগাছ, গাছের ডাল-পালা দিয়ে যুদ্ধক্ষেত্রও তৈরি করা হয়। র্যালিতে ঘোড়ার গাড়ি, হাতিও শোভা পায়। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক বিশাল বিশাল নৌকা নিয়ে আসা হয় র্যালিতে। নেতাকর্মীরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের ছবি বহন করেন। র্যালি ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের পৌঁছানোর পরও মৎস্য ভবন এলাকা থেকে র্যালি আগাতে থাকে। র্যালির শেষ প্রান্ত ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে পৌছাতে প্রায় দুই ঘণ্টা সময় লাগে।
এদিকে আওয়ামী লীগের এ বিজয় র্যালি শুরু হওয়ার আগেই বিকেল ৩টার আগ থেকে মৎস্য ভবন, শাহবাগ এলাকায় যানজট তৈরি হয়। এক পর্যায় এ যানজট বাংলামোটর পর্যন্ত চলে যায় এবং রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদের সভাপতিত্বে র্যালি পূর্ব সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেনসহ অন্যান্য নেতারা।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৬
এসকে/এমজেএফ