জাতীয় চিত্রশালায় সোমবার (১৬ জানুয়ারি) আয়োজিত এক খণ্ডচিত্র প্রদর্শনীতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি-জামায়াতের বর্বরোচিত তান্ডব ও অগ্নিসন্ত্রাসের এ খণ্ডচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা উপ-পরিষদ।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বেশিদিন আগের কথা নয়, আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুর কথা শুনে শোকার্ত মা খালেদা জিয়াকে সমবেদনা জানাতে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অথচ খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রীকে সমবেদনা জানানোর সুযোগ না দিয়ে ঘরের দরজা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী তাকে নৈশভোজের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি অশ্রাব্য ভাষায় প্রধানমন্ত্রীর সে আমন্ত্রণও প্রত্যাখ্যান করেছেন। কাজেই ঘরের দরজা বন্ধ করে সংলাপের দরজা বন্ধ করে দিয়েছেন খালেদা জিয়া। আমন্ত্রণ প্রত্যাখান করে সংলাপের পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, এখন যারা গণতন্ত্রের কথা বলে মায়াকান্না করেন, তারা গণতন্ত্র হত্যার শিকারী। সে শিকারী এখন উদ্ধারের জন্য মায়াকান্না করছে। আন্দোলনের নামে তারা নিরপরাধ শিশু, শ্রমিক, রিকশা চালক, ট্রাক ড্রাইভার, শিক্ষককে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। দগ্ধ করেছে। কাজেই তাদের কান্নার জবাব কে দেবে? আজ গণতন্ত্রের জন্য, সংলাপের জন্য মায়াকান্না করছেন? আপনাদের সহিংস আন্দোলনের বেদী সাধারণ খেটে খাওয়া নিরপরাধ মানুষকে আত্মহুতি দিতে বাধ্য করেছে।
মন্ত্রী বলেন, আমরা সব সময় তাদের বর্বরোচিত হামলার শিকার। আমরা কখনো ষড়যন্ত্র করিনা। বরং শিকার হই। কখনো হত্যা করতে চাইনি। কিন্তু হত্যার শিকার হয়েছি। ১৫ আগস্টের নেপথ্যে কারা ছিল? আত্মস্বীকৃত খুনিরাই তা বলে গেছে। কিন্তু খুনি মঞ্চের নেপথ্যে কারা ছিল? যারা খুনিদের দেশ থেকে পলায়নে সহায়তা করেছে, যারা খুনিদের পুরস্কৃত করে বিদেশে দূতাবাতে চাকরি দিয়েছে, তারাই।
তিনি আরো বলেন, ৪ নভেম্বর আমরা শিকার হয়েছি। এছাড়া ২১ আগস্টেও শিকার হয়েছি। যার প্রাইম টার্গেট ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সে সময় এফবিআই দিয়ে তদন্ত করতে দেওয়া হয়নি। মামলার আলামত নষ্ট করা হয়েছে। জজ মিয়া নাটক সাজানো হয়েছে। তারপরও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন নৈশভোজের। ছেলে হারানো শোকার্ত মাকে সমবেদনা জানবাতে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাকে প্রত্যাখান করে সব পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, নির্বাচন হবে। তবে সংবিধানে যেভাবে বলা আছে সেভাবেই হবে। সংবিধান অনুযায়ী গণতন্ত্রের স্বার্থে যা করা দরকার তাই করা হবে। সংলাপ রাষ্ট্রপতি করেছেন। সেখানে আওয়ামী লীগ নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য আইনের প্রস্তাব দিয়েছে। বিএনপি তাও করেনি। এছাড়া আমরা সে প্রস্তাবে নির্বাচনকালীন সময়ে সরকার রুটিন দায়িত্ব পালন করবে, এমন প্রস্তাবও দিয়েছি।
তিনি বলেন, গণতন্ত্রের লেবাস পড়া তারা আসলে গণতন্ত্র হত্যার শিকারী। সে উগ্রবাদী বিষকৃক্ষটির কিন্তু শাখা-প্রশাখা ছড়িয়ে পড়েছে। রাতারাতি তা উপড়ে ফেলা যাবে, এমন ভাবা ঠিক হবে না। সকল বিশ্বাসের ঠিকানা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করতে হবে। খণ্ডখণ্ড আন্দোলন করে এ বিষবৃক্ষ উপড়ে ফেলা যাবে না।
আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহামুদের সভাপতিত্বে প্রদর্শনীতে অন্যদের মধ্যে নির্বাচন পর্যবেক্ষক নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, সাংবাদিক মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল এবং ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের সময় অগ্নিসন্ত্রাসের সাত ক্ষতিগ্রস্ত বক্তব্য রাখেন।
দলের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত নায়েক দুলু মিয়া, নিহত মায়শার মা, পিয়ারুল ইসলাম, ট্রাক চালক পটল মিয়া, আলু ব্যবসায়ী রেজাউল করিম, কার্ভাড ভ্যান চালক মিষ্টি মিয়া ও রিকশা চালক অমূল্য চন্দ্র বর্মনকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়।
এরপর মন্ত্রী দু’দিনব্যাপী প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন এবং বিভিন্ন আলোকচিত্র ঘুরে ঘুরে দেখেন। এসময় তার সঙ্গে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবীর নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, একেএম এনামুল হক, অসীম কুমার উকিল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০১৭
ইইউডি/বিএস