ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

নির্বাচনের আগে বিএনপিকে আন্দোলনের সুযোগ দেবে না আ’লীগ-সরকার

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৪৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৭
নির্বাচনের আগে বিএনপিকে আন্দোলনের সুযোগ দেবে না আ’লীগ-সরকার

ঢাকা: নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে নতুন কোনো দাবি তুলে বিএনপিকে কোনো ধরনের আন্দোলেনে নামার সুযোগ দেবে না সরকার। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় আগে থেকেই প্রস্তুত রয়েছে আওয়ামী লীগও।

নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আগামী নির্বাচনে প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিএনপির অংশগ্রহণ চায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। তবে নির্বাচনে আসার শর্ত হিসেবে বিএনপির কোনো দাবি বা প্রস্তাব সরকার মানবে না।

বিশেষ করে নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে বিএনপি কিছু প্রস্তাব উপস্থাপন করতে পারে বলে মনে করছে আওয়ামী লীগ। তবে এসব ক্ষেত্রে সরকার কোনো ছাড় দেবে না। বিএনপিকে নির্বাচনে আসতে হলে বর্তমান পদ্ধতি মেনেই আসতে হবে। এর বিকল্প কোনো প্রস্তাব, চিন্তা বা শর্ত দাঁড় করানোর সুযোগও দেবে না সরকার।

নির্বাচনকে সামনে রেখে কিছু দাবি উপস্থাপন ও ওইসব দাবি আদায়ে বিএনপি আবারও আন্দোলনের নামে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করতে পারে- এ বিষয়টিও সরকারের মাথায় আছে। তেমন কিছু হলে তা মোকাবেলার কৌশলও হাতে রেখেছে সরকার।

আওয়ামী লীগ ও সরকার সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, বিএনপির আন্দোলন দমনের অনেক রাজনৈতিক অস্ত্র সরকারের হাতে রয়েছে। বিএনপিকে চাপের রাখতে এ অস্ত্রগুলো যথেষ্ঠ বলেও মনে করছেন নীতিনির্ধারকরা।

ওই সূত্রগুলো জানায়, রাজনৈতিক দল হিসেবে টিকে থাকতে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ ছাড়া বিএনপির অন্য কোনো বিকল্প নেই। গত নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা তৈরি হয়েছে, দলটির সাংগঠনিক তৎপরতার স্থবিরতার মধ্য দিয়ে যেটির বহির্প্রকাশ ঘটছে। এরপর এবারও যদি নির্বাচনে অংশ না নেয়, তাহলে সাংগঠনিক দিক থেকে অস্তিত্বের সংকটে পড়বে দলটি। আর পর পর দু’বার নির্বাচনে অংশ না নিলে নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন নিয়েও জটিলতায় পড়তে হবে বিএনপিকে।

সম্প্রতি বিএনপিকে কানাডার ফেডারেল কোর্টের সন্ত্রাসী সংগঠন আখ্যা দেওয়ার বিষয়টিও এ দলটিকে বেকায়দায় ফেলবে। নির্বাচনে অংশ না নিয়ে গতবারের মতো এবার অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে গেলে সন্ত্রাসী দলের অভিযোগটি আন্তর্জাতিকভাবেও জোরালো হয়ে উঠবে। যার ফলে বিএনপিকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে আরও প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হবে।

তাছাড়া কানাডার কোর্টের রায়ের পর ইতোমধ্যে জাতীয় সংসদে বিএনপির নিবন্ধন বাতিলের দাবি উঠেছে। গত বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) তরিকত ফেডারেশনের সভাপতি নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী ‘সন্ত্রাসী দল’ হিসেবে বিএনপির নিবন্ধন বাতিলের দাবি জানিয়েছেন। এ তরিকত ফেডারেশনের করা মামলায়ই নির্বাচন কমিশনে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল হয়েছে। বিএনপি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির মতো কোনো অবস্থানে গেলে বিভিন্ন দিক থেকে এ দাবি আরও জোরালো হতে পারে।

এদিকে দু’টি ট্রাস্টের দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিচার চলছে। বিচারের রায়ে খালেদা জিয়ার সাজা হতে পারে। এতে করে আগামী নির্বাচনে খালেদা জিয়ার অংশগ্রহণও অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। আর এটি হলে আরও প্রতিকূল পরিস্থিতিতে পড়বে বিএনপি।

বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে শুরু করে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের বিরুদ্ধেও অনেক মামলা রয়েছে। নির্বাচন নিয়ে কোনো ইস্যু দাঁড় করানোর চেষ্টা করলে ওই নেতারাও ওইসব মামলায় আটকা পড়বেন।

সূত্র জানায়, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি অতীতের মতো কোনো অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করলে সরকার এ কৌশলগুলোকেও কাজে লাগাবে।

আবার অতীতের মতো আন্তর্জাতিক দিক থেকেও চাপ সৃষ্টির চেষ্টায় সুবিধা করতে পারবে না বিএনপি। এ ব্যাপারেও সরকার আগে থেকেই শক্ত অবস্থান নিয়েছে। নির্বাচন কমিশন গঠনের আগে বিদেশি কূটনীতিকরা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করতে চাইলে সরকার অনুমতি দেয়নি। আগামীতেও এ অবস্থান অব্যাহত থাকবে।

ওই সূত্রগুলো জানায়, বিএনপিকে চাপে রাখা এবং নির্বাচনে আনতে এ বিষয়গুলো সরকারের জন্য ইতিবাচক হবে বলেও মনে করছেন নীতিনির্ধাকরা।

বাংলাদেশ সময়:০৬৪৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৭
এসকে/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।