ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

মওদুদের মতো আমাকেও এক কাপড়ে বের করেছিলো

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪৮ ঘণ্টা, জুন ৭, ২০১৭
মওদুদের মতো আমাকেও এক কাপড়ে বের করেছিলো অ্যাবের ইফতারে খালেদা জিয়া

ঢাকা: ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের মতো আমাকেও এই সরকার এক কাপড়ে বাড়ি থেকে বের করেছিলো বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
 

বুধবার ( ০৭ জুন) সন্ধ্যায় ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি, বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) অ্যাসোসিয়শন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (অ্যাব) আয়োজিত ইফতার ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।  
 
খালেদা জিয়া বলেন, মওদুদ দীর্ঘ ৩৬ বছর ধরে ওই বাড়িতে বসবাস করছেন।

আজ তাকে এই সরকার জোর করে এক কাপড়ে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। শুধু তাই নয়, আমিও দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে ক্যান্টনমেন্টের বাসভবনে বসবাস করেছি, কিন্তু মওদুদের মতো আমাকেও এই সরকার এক কাপড়ে বের করেছিলো। এই অত্যাচার আল্লাহ সইবে না। জনগণ একদিন অবশ্যই তাদেরও এক কাপড়ে বাড়ি থেকে বের করবে।
খালেদা জিয়া বলেন, এখন যাকে ইচ্ছা এই সরকার বাড়ি থেকে বের করে দিচ্ছে। গতকালও ছাত্রলীগ একটি হিন্দু পরিবারের সম্পত্তি দখল করেছে। অথচ তাদের নেতাকর্মীরা বাড়ি জবর দখল করছে। কিন্তু সেই বাড়ি যে প্রকৃত মালিকদের ফিরিয়ে দেওয়া দায়িত্ব সেটা তারা মনে করছে না। প্রতিনিয়ত সাধারণ মানুষসহ সাংবাদিকদের মারধর করা হচ্ছে। মনে হচ্ছে তারা সবকিছুর ক্ষমতা রাখে। আওয়ামী লীগ দলের লোকজনের উপর কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। সরকার নিজেরা অবাধে লুটপাট করছে। প্রশাসনের মধ্যেও বর্তমানে একই অবস্থা চলছে। রমজান মাসেও চলছে লুটপাট, জবরদখল করে মানুষের কাছ থেকে টাকা আদায় করা হচ্ছে।
 
তিনি আরও বলেন, সারা বাংলাদেশের মানুষ আজ অসহায়ের মতো। কিন্তু এই অসহায়ত্ব বেশি দিন থাকবে না। আল্লাহ তায়ালা মানুষকে সুযোগ দেয় দেখি সে কতো অপরাধ, জুলুম করতে পারে। এমন এক সময় আসবে যখন আল্লাহ তায়ালা রশি টান দেবে তাদের পাশে কেউ থাকবে না। তাই আমি বলব, মানুষের সঙ্গে মানুষের মতো ব্যবহার করেন অন্যায় অত্যাচার জুলুম নয়। এছাড়া আজকে যে আমরা অসহায়, এর জন্যে যে বিচার চাইব সেই কোর্টে গেলেও বিচার নেই। কারণ সেখানেও আওয়ামী লীগের হাতে খামি।

আপন জুয়েলার্স নিয়েও খেলা হচ্ছে জানিয়ে খালেদা বলেন, টাকা পয়সার লেনদেন হলেই কোনো সমস্যা নেই। আমরা দেখেছি শাহজালাল বিমানবন্দর ও সিলেট দিয়ে একের পর এক সোনা পাচার হচ্ছে। যেখানে অবাধে সোনা দেশে আসছে তার মধ্যে অল্প কিছু সোনা ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে লোক দেখানোর জন্য।

‘যুদ্ধের মাধ্যমে যেখানে একটি দেশ স্বাধীন ও মাতৃভাষাকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। সেই দেশ আজ নিজের ভাষা ও সংস্কৃতিকে হারিয়ে ফেলছে। ‍শুধু তাই নয়, আমাদের স্বাধীনতা আজ অন্যের হাতে জিম্মি হতে চলেছে। এ অবস্থা কোনোভাবেই চলতে পারে না। চলতে দেয়া যায় না’।

বিএনপি চেয়ারপারসন আরও বলেন, এভাবে লুটপাট করে ব্যাংক খালি করা হবে সেটা আগে কখনো দেখিনি। কিন্তু কিছু ব্যাংক ডাকাতি হয়েছে আওয়ামী লীগের আমলে। এজন্য মানুষ আর এই অবস্থা দেখতে চায় না। মানুষ চায় পরিবর্তন, সু্ষ্ঠু ও অবাধ নিরপেক্ষ একটি নির্বাচন। কিন্তু এ নির্বাচন হাসিনার অধীনে হলে সবার অংশগ্রহণও হবে না, আবার সুষ্ঠু নির্বাচনও হবে না। এমনকি নির্বাচন কমিশন চাইলেও সুষ্ঠু হবে না। এজন্য হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়া ইসির কাজ সরকারের চাটুকারিতা করা নয়, জনগণ কি চায় সেটা করা। যেখানে জনগণের আশা আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অ্যাবের সভাপতি মাহমুদুর রহমান। অন্যদের মধ্যে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খোন্দকার মোশাররফ হোসেন, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, গাজীপুরের মেয়র এমএ মান্নানসহ পেশাজীবী বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৪ ঘণ্টা, জুন ০৭, ২০১৭
এসজে/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।