ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

মঞ্জুর হত্যা মামলায় প্রতিবেদন পিছিয়ে ১৭ সেপ্টেম্বর

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫৯ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০১৭
মঞ্জুর হত্যা মামলায় প্রতিবেদন পিছিয়ে ১৭ সেপ্টেম্বর

ঢাকা: সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের বিরুদ্ধে বহুল আলোচিত মেজর জেনারেল মঞ্জুর আহমেদ হত্যা মামলায় অধিকতর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল পিছিয়ে আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর পুনর্নির্ধারণ করেছেন আদালত।

রোববার (১৮ জুন) মামলাটিতে প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য ছিল। তবে তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার আবদুল কাহার আকন্দ কোনো প্রতিবেদন দাখিল না করে সময়ের আবেদন জানান।

পরে ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এসএম সাইফুল ইসলামের আদালত নতুন দিন ধার্য করেন।

২০১৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি মামলাটির পুনরায় যুক্তিতর্ক (আর্গুমেন্ট) উপস্থাপনের ধার্য দিনে মামলাটির অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত। রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে সিআইডিকে অধিকতর তদন্ত করে ওই বছরের ২২ এপ্রিলের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার আদেশ দিয়েছিলেন তৎকালীন বিচারক হাসান মাহমুদ ফিরোজের আদালত।

এরপর থেকে তদন্তকারী কর্মকর্তা গত ৪০ মাসে বেশ কয়েকবার আবেদন জানিয়ে দিন পিছিয়ে নেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সংশ্লিষ্ট আদালতের পিপি আসাদুজ্জামান খান রচি তখন জানিয়েছিলেন, জেনারেল মঞ্জুরের স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে। এখনও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তাই তদন্ত শেষ করতে আরও সময়ের প্রয়োজন।

মামলায় এরশাদ ছাড়াও মেজর (অব.) কাজী এমদাদুল হক, লে. কর্নেল (অব.) মোস্তফা কামাল উদ্দিন ভূঁইয়া, মেজর জেনারেল (অব) আব্দুল লতিফ ও লে. কর্নেল (অব) শামসুর রহমান শামস আসামি।

আসামি আব্দুল লতিফ ও  শামসুর রহমান শামসের বিচারের বিষয়ে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ থাকায় এরশাদ, কাজী এমদাদুল হক ও মোস্তফা কামাল উদ্দিন ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে বিচারিক কার্যক্রম চলছে। এরশাদের ব্যক্তিগত হাজিরা মওকুফ করেছেন আদালত, অন্য দু’জন হাজির ছিলেন।

উভয়পক্ষের সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ ও যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে ২০১৪ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি মামলাটির রায়ের জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু আগের বিচারক হোসনে আরা আক্তার বদলি হওয়ায় নতুন বিচারক খন্দকার হাসান মো. ফিরোজ ফের যুক্তিতর্ক শোনার সিদ্ধান্ত নেন। ওই দিন তিনি যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের নতুন দিন ধার্য করেন ২৭ ফেব্রুয়ারি।

কিন্তু ২৭ ফেব্রুয়ারি সকালে মামলাটির পুন:তদন্তের আবেদন জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সংশ্লিষ্ট আদালতের পিপি আসাদুজ্জামান খান রচি। তিনি আবেদনের পক্ষে শুনানিতে বলেন, এ মামলায় সঠিকভাবে তদন্ত হয়নি। ফলে আরো অনেককে সাক্ষী করা যায়নি। সঠিকভাবে তদন্ত হলে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনসহ ওই সাক্ষীদের আদালতে হাজির করা যেতো। তাদের সাক্ষ্য-প্রমাণে মামলাটি সঠিকভাবে প্রমাণ করা যেতো।

চট্টগ্রামে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়া হত্যার পর ১৯৮১ সালের ০১ জুন মেজর জেনারেল মঞ্জুরকে পুলিশ হেফাজত থেকে চট্টগ্রাম সেনানিবাসে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর সেখানেই তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

হত্যাকাণ্ডের ১৪ বছর পর ১৯৯৫ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি জেনারেল মঞ্জুরের বড় ভাই ব্যারিস্টার আবুল মনসুর আহমেদ বাদী হয়ে চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানায় এ হত্যা মামলা দায়ের করেন।

ওই বছরের ১৫ জুলাই আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন সহকারী পুলিশ সুপার আবদুল কাহহার আকন্দ। এর আগে ০১ মার্চ আসামি এমদাদুল হক, ১২ মার্চ মোহাম্মদ আবদুল লতিফ ও শামসুর রহমান এবং ১৮ জুন মোস্তফা কামালকে গ্রেফতার করা হয়। একই বছরের ১১ জুন কারাগারে থাকা এরশাদকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।

বর্তমানে আসামিরা সবাই জামিনে রয়েছেন।

মামলা দায়েরের ১৯ বছর পর মামলাটি শেষ পর্যায়ে পৌঁছালেও বিচারক বদলি হওয়ায় তা আবার পিছিয়ে যায়। গত ২২ জানুয়ারি এ মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে হোসনে আরা আকতারের আদালত ১০ ফেব্রুয়ারি রায়ের জন্য দিন ধার্য করেছিলেন। কিন্তু রায়ের মাত্র ১৩ দিন আগে ২৯ জানুয়ারি তিনি পরিবর্তন হওয়ায় মামলাটির বিচারের দায়িত্ব পান দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা জজ হাসান মাহমুদ ফিরোজ।

হাসান মাহমুদ ফিরোজের আগেও ১৯ বছরে বিভিন্ন সময়ে ২২ জন বিচারক এ মামলাটিতে বিচারক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

মঞ্জুর হত্যা মামলায় মোট ৪৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হওয়ার পর ২০১২ সালের ০২ অক্টোবর আত্মপক্ষ সমর্থন করে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন এরশাদ। এর সমর্থনে আদালতে লিখিত বক্তব্যও দাখিল করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০০ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০১৭
এমআই/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।