ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

প্রজ্ঞা-অভিজ্ঞতায় এগিয়ে মোস্তফা-রেদোয়ান

আসাদ জামান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৩৪ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০১৭
প্রজ্ঞা-অভিজ্ঞতায় এগিয়ে মোস্তফা-রেদোয়ান

ঢাকা: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২০ দলীয় জোট থেকে মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে আছেন জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার ও লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমদ।
 
 

রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, সাংগঠনিক বিচক্ষণতা, নেতৃত্বগুণ ও বয়োজ্যেষ্ঠতায় এগিয়ে মোস্তফা জামাল হায়দার। আর কয়েকবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ায় অভিজ্ঞতায় এগিয়ে সাবেক দুই বারের মন্ত্রী রেদোয়ান আহমেদ।

দুই দলের এ দুই মহাসচিবের মনোনয়ন প্রায় নিশ্চিতই বলা যায়।
 
সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পিরোজপুর-১ (নাজিরপুর, পিরোজপুর সদর, ইন্দুরকানী) আসন থেকে ধানের শীষ প্রতীকে লড়বেন মোস্তফা জামাল হায়দার। আর কুমিল্লা-৭ (বড়ুরা-চান্দিনা) থেকে ধানের শীষ প্রতীকে ভোটযুদ্ধে অবতীর্ণ হবেন ড. রেদোয়ান আহমেদ।
 
প্রাপ্ত তথ্য মতে, ১৯৬৯’র গণঅভ্যুত্থানের ‘মহানায়কদের’ একজন মোস্তফা জামাল হায়দার। ১৯৮৬ সালে অনুষ্ঠিত তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পিরোজপুর-১ আসন থেকে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। সাংগঠনিক দক্ষতা, নেতৃত্বগুণ ও বিচক্ষণতায় মুগ্ধ হয়ে ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক এ সভাপতিকে মন্ত্রিপরিষদে স্থান দেন জাপা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।
 
এরপর ১৯৮৮ সালের নির্বাচনে ফের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন মোস্তফা জামাল হায়দার। এবারও মন্ত্রিপরিষদে জায়গা পান তিনি। এরশাদ পতনের আগ পযর্ন্ত গণপূর্ত মন্ত্রী হিসেবে বিশেষ সাফল্য দেখান ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে আসা বিচক্ষণ এ রাজনীতিবিদ।
 
রাজনীতির ভাঙা-গড়ার খেলায় এরশাদের জাতীয় পার্টি থেকে বেশিরভাগ ‘লিজেন্ড’ অনেক আগে বেরিয়ে গেলেও প্রয়াত কাজী জাফর আহমেদ ও মোস্তফা জামাল হায়দার ২০১৪ সাল পযর্ন্ত এরশাদের সঙ্গেই ছিলেন।
 
কিন্তু ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ‘সার্কাস’ খেলা শুরু করলে যারপরনাই ক্ষুব্ধ হন সাবেক প্রধানমন্ত্রী কাজী জাফর আহমেদ। নির্বাচনের পর বেরিয়ে আসেন এরশাদের জাপা থেকে। কাজী জাফরের সঙ্গে মোস্তফা জামাল হায়দারও জাপা ত্যাগ করেন। যোগ দেন বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটে।
 
গত বছর কাজী জাফরের মৃত্যুতে জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) দায়িত্ব বর্তায় মোস্তফা জামাল হায়দারের ওপর। দলের আরেক বর্ষীয়ান নেতা ডা. টি আই এম ফজলে রাব্বিকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি করে নিজে মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করছেন। সুতরাং জাতীয় পার্টিকে যদি একটি মাত্র আসন ছেড়ে দেওয়ার চিন্তা করে বিএনপি, সেটি মোস্তফা জামাল হায়দারই পাবেন বলে সবার বিশ্বাস।
 
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মোস্তফা জামাল হায়দার বাংলানিউজকে বলেন, নির্বাচন করার মতো নেতা আমার দলে বেশ কয়েকজন আছেন। এদের মধ্যে জোট প্রধান যাকে মনোনয়ন দেন, তিনিই নির্বাচন করবেন। নির্বাচনের জন্য আমি নিজেও প্রস্তুতি নিচ্ছি। দেখা যাক কী হয়।
 
এদিকে জিয়াউর রহমানের আমল থেকে বিএনপি করে আসা এলডিপির মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ বিভিন্ন বিচারেই মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে আছেন। ১৯৭৯ সালে দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জিয়াউর রহমান যে ক’জন সম্ভাবনাময় তরুণ রাজনীতিবিদকে ডেকে মনোনয়ন দিয়েছিলেন, তাদের মধ্যে রেদোয়ান একজন।
 
সে বছর কুমিল্লা-৭ আসন থেকে বিজয়ী হয়ে জিয়াউর রহমানে আস্থার প্রতিদান দিয়েছিলেন রেদোয়ান আহমেদ। এরপর ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে আবারও কুমিল্লা-৭ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
 
১৯৯১ সালের নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে কুমিল্লা-৭  আসন থেকে ফের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন রেদোয়ান আহমেদ। ঠাঁই পান খালেদা জিয়ার মন্ত্রিসভায়। পালন করেন পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব।
 
২০০১ সালে ওই আসন থেকে আবারও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন রেদোয়ান আহমেদ। এবার তিনি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান।
 
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, বার বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া সাবেক দুই বারের মন্ত্রী রেদোয়ানকে আবারও জাতীয় সংসদে নেওয়ার চিন্তা করছেন খালেদা জিয়া। তাই জামায়াত-বিএনপি বাদে জোটের বাকি ১৮টি দল থেকে যে ৮/১০ জনকে মনোনয় দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে, তাদের মধ্যে রেদোয়ান আহমেদ অন্যতম।
 
এ প্রসঙ্গে ড. রেদোয়ান আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, আন্দোলন, নির্বাচন, সরকার গঠন- এ তিন লক্ষ্যকে সামনে রেখে জোট গঠন করা হয়েছিল। সুতরাং নির্বাচনে জোটের তৃতীয় বৃহৎ দল হিসেবে এলডিপি একাধিক আসন আশা করতেই পারে। সেখানে চেয়ারম্যান-মহাসচিবের মনোনয়ন পাওয়াটা স্বাভাবিক।
 
এছাড়া দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুল করিম আব্বাসী ও আবু ইউসুফ খলিলুর রহমানসহ মোট ১০ জন সাবেক এমপি-মন্ত্রী আছেন- যারা প্রত্যেকেই  মনোনয়ন পাওয়ার দাবিদার।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৯৩৩ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০১৭
এজেড/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।