ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে কঠোর নয় বাম-গণতান্ত্রিক দল

শামীম খান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০১৮
নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে কঠোর নয় বাম-গণতান্ত্রিক দল

ঢাকা: নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে কঠোর অবস্থানে যাবে না গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জন করা বাম-গণতান্ত্রিক দলগুলো। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনের নিশ্চয়তা পেলেই আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবে তারা।

সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দল এবং বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের বাইরে থাকা এসব দল নির্বাচনকালীন সরকারকে খুব বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে না। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনকে নির্বাচনের প্রধান শক্তি হিসেবে মনে করছে দলগুলো।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), গণফোরাম, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), আ স ম আব্দুর রবের জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), কাদের সিদ্দিকীর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও বিকল্প ধারা অংশগ্রহণ করেনি।

নির্বাচন বর্জনের কারণ হিসেবে এসব দলের অন্যান্য দাবির মধ্যে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি ছিলো অন্যতম। তবে এই দাবিতে আগামী নির্বাচনও বর্জনের অবস্থানে নেই দলগুলো।

এসব দলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের প্রধান দাবি হচ্ছে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করা। এজন্য সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশনের হাতে সকল ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়া। নির্বাচনের সময় যে সরকার থাকবে গতানুগতিক কাজের বাইরে নির্বাচন সংক্রান্ত কোনো কাজ তারা করবে না- এই নিশ্চয়তা দেওয়া। আগামী নির্বাচনের আগে এ বিষয়গুলো নিশ্চিত হতে চায় বাম-গণতান্ত্রিক দলগুলো।

নেতারা আরও জানান, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনের সময় দলীয় সরকার থাকা না থাকার বিষয়ে তাদের তেমন একটা মাথাব্যথা নেই। সংবিধানের নিদের্শনা অনুযায়ী নির্বাচনের সময় এ সংক্রান্ত সকল ক্ষমতা থাকবে ইসির হাতে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল নেতারাও এ কথা বলে আসছেন। কিন্তু এর বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা থাকতে হবে। নির্বাচন কমিশন সরকারের প্রভাব ও হস্তক্ষেপমুক্ত হয়ে কাজ করতে পারবে তার নিশ্চয়তা জরুরি।

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বাংলানিউজকে বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা না করা যথাসময়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। যেটা জরুরি সেটা হলো নির্বাচনে টাকা, পেশি শক্তি, প্রশাসনিক কারসাজি, সাম্প্রদায়িকতা- এই বিষয়গুলোর একটা সমাধান হতে হবে। এর থেকে নির্বাচনী ব্যবস্থাকে মুক্ত করতে হবে। তা না হলে শেখ হাসিনার অধীনেও নির্বাচন অবাধ হবে না, নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনেও হবে না। নির্বাচন হতে হবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে, কোনো সরকারের অধীনে না। আমাদের সংবিধানেই সেটা বলা আছে। অথচ দুই পক্ষই পছন্দ মতো সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্য চিৎকার করছে।

বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ থাকলে, নির্বাচনের পরিবেশের উপর জনসাধারণের আস্থা তৈরি হলে নির্বাচন পরিহার করার বিষয় ওঠে না। বিএনপির নির্বাচন বর্জন আর আমাদের নির্বাচন বর্জন এক না। তাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের সঙ্গে আমাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের মৌলিক পার্থক্য আছে।

গণফোরামের কার্যকরী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, আমরা সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ দেখতে চাই। এখন কৌশলের নির্বাচন করলে তো সমস্যা। যেভাবে বলা হচ্ছে সরকারের পক্ষ থেকে, প্রধানমন্ত্রী বলছেন একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করবেন দেখা যাক। তবে সকলেই আমরা নির্বাচনের কথা বলছি, আমরা অংশগ্রহণ করবো। শেখ হাসিনা নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান থাকুক সেটা বিষয় না, তার ক্ষমতা কতটুকু থাকবে সেটা দেখার বিষয়।

এ বিষয়ে জাসদ (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতন বাংলানিউজকে বলেন, নির্বাচন যদি নির্বাচনের মতো হয় কারো দ্বারা সিলেকশন না হয় তা হলে আমরা অবশ্যই নির্বাচনে যাবো। আমরা পরিস্থিতির উন্নতিটা  দেখতে চাই। এখনও তো এক জায়গার মধ্যেই আছে। আমরা আমাদের অবস্থান থেকে গত নির্বাচন বর্জন করেছিলাম। এবারও যে সিদ্ধান্ত নেব সেটা নিজস্ব দলীয় অবস্থান থেকেই নেবো।

বাংলাদেশ সময়: ০০২৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০১৮
এসকে/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।