ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরও অস্থায়ী কার্যালয়ে সিলেট আ’লীগ!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৩৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০১৮
স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরও অস্থায়ী কার্যালয়ে সিলেট আ’লীগ! সিলেট আওয়ামী লীগ কার্যালয়। ছবি: বাংলানিউজ

সিলেট: রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের হাত ধরে দেশের স্বাধীনতা অর্জন ও স্বাধীন রাষ্ট্রের যাত্রা। দেশ স্বাধীনের ৪৭ বছর পরও সিলেটে দলের স্থায়ী ঠিকানা খোঁজে পায়নি প্রভাবশালী এই রাজনৈতিক সংগঠন।

যুগের পর যুগ কেটেছে অস্থায়ী কার্যালয়ে। কখনো হোটেল-মোটেলে হয়েছে দলীয় সভা-সমাবেশ।

যুগের পর যুগ হাত বদল হয়েছে নেতৃত্বের। নিচু তলার নেতাকর্মীদের বসবাস হয়েছে উঁচু তলায়। কিন্তু যে দলের কারণে এতোকিছু! সেই দলের একটি কার্যালয় করতে পারেননি কমিটির নেতারা।
 
সম্প্রতি সিলেট সফর করেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তার সফরের পর সিলেটের চার আওয়ামী লীগ নেতাকে শোকজ করা হয়। সিলেট সিটি করপোরেশনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পরাজয়, ৮টি ওয়ার্ডে দলীয় কাউন্সিলর না দিতে পারা ও বিভাগীয় শহর সিলেটে আওয়ামী লীগের কার্যালয় না করতে পারার ব্যর্থতার কারণ দর্শানোর জন্য বলা হয়।
 
শোকজ নোটিশের পর অনেকটা নড়ে-চড়ে বসেন সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা। তড়িগড়ি করে তারা শোকজের জবাব দেন এবং নগরের সুবহানীঘাট ইব্রাহিম স্মৃতি সংসদে আওয়ামী লীগের অস্থায়ী কার্যালয় করার উদ্যোগ নেন।
 
শুক্রবার (২৮ সেপ্টেম্বর) আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিনে অস্থায়ী এই কার্যালয়ের উদ্বোধন করা হবে। এদিন বিকেল ৩টায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর জন্মদিন ও কার্যালয় উদ্বোধন উপলক্ষে মিলাদ মাহফিল ও দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে।
 
এরইমধ্যে হাজার বর্গফুটের কার্যালয় হিসেবে ইব্রাহিম স্মৃতি সংসদকে ব্যবহার উপযোগী করা হয়েছে। অস্থায়ী এই কার্যালয়ে যুক্ত করা হয়েছে নতুন চেয়ার-টেবিলসহ প্রয়োজনীয় আসবাপত্র। যুক্ত করা হয়েছে বাথরুম।
 
নেতাকর্মীরা জানান, এখন অস্থায়ী হলেও কার্যালয় করা হয়েছে। এখানে নেতাকর্মীদের সমাগম হবে। কার্যালয়হীন থাকার কারণে নেতাকর্মীরাও মিটিং-মিছিল ছাড়া একত্রিত হওয়ার সুযোগ পেতেন না। ফলে নেতাকর্মীদের মধ্যেও সমন্বয়হীনতা ছিলো। যার প্রভাব সিটি করপোরেশন নির্বাচনে পড়ে এবং আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পরাজয় ঘটে।
 
অবশ্য খুব শিগগিরই সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ পৃথকভাবে স্থায়ী কার্যালয়ে যাবে এমন আশাবাদী কর্মী-সমর্থকরা। কর্মী-সমর্থকদের মতে, দলীয় কার্যালয় থাকলে নেতাকর্মীরা দলকে সুসংগঠিত করতে আড্ডায় মিলিত হতেন, নিজেদের সুখ-দুঃখ ভাগাভাগি করতেন।
 
এ ব্যাপারে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরান বাংলানিউজকে বলেন, কেন্দ্রের নির্দেশে দ্রুততম সময়ে আমরা অস্থায়ী কার্যালয় প্রস্তুত করেছি। দেশরত্ম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিনে কার্যালয়ের কার্যক্রম শুরু করবো।
 
তিনি বলেন, আপাতত আমরা অস্থায়ী কার্যালয়ে দলের কার্যক্রম শুরু করছি। স্থায়ী কার্যালয়ের জন্য জায়গা দেখছি। ভূমির ব্যবস্থা হলে অফিস করা হবে।
 
সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, আগেও সিলেটে দলের কোনো স্থায়ী অফিস ছিলো না। বিভিন্ন সময় অস্থায়ী কার্যালয়ে দলের কার্যক্রম চলেছে। এবার জেলা ও মহানগরের কার্যালয় একসঙ্গে ইব্রাহিম স্মৃতি সংসদে হচ্ছে। অফিসের জন্য জায়গা পেলে জেলা আওয়ামী লীগের স্থায়ী অফিস হবে।

২০০৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি গ্রেনেড হামলায় নিহত হন মহানগর আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ইব্রাহিম আলী। বদর উদ্দিন আহমদ কামরান মেয়র থাকাকালে নগরের সুবহানীঘাটে সিটি করপোরেশনের ভবন বন্দোবস্ত নিয়ে তার নামে করা হয় ইব্রাহিম স্মৃতি সংসদ।
 
ভবনটির উদ্বোধন করেছিলেন তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। এরপর কিছুদিন সরব ছিল ইব্রাহিম স্মৃতি সংসদ। উদ্বোধনের পর থেকে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছিলো এখানে। সময়ের বিবর্তনে এ কার্যালয় অবহেলায় পড়েছিলো। এখন থেকে এখানে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের অস্থায়ী কার্যালয় হিসেবে কার্যক্রম পরিচালিত হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০১৮
এনইউ/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।