ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

নারায়ণ-পরওয়ারে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৮
নারায়ণ-পরওয়ারে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই মিয়া গোলাম পরওয়ার

খুলনা: খুলনা-৫ (ডুমুরিয়া-ফুলতলা) আসনে এবার নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ। আর ধানের শীষ প্রতীকে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির মিয়া গোলাম পরওয়ার।

এর মাধ্যমে আসনটিতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে লড়াইয়ের পুরনো চিত্র ফিরে এসেছে। এবারও সেই পরিচিত দুই মুখের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা দেখছেন স্থানীয় ভোটাররা।

এ দুই প্রার্থী ছাড়াও আসনটিতে রয়েছেন ইসলামী আন্দোলন মনোনীত পাখা প্রতীকের প্রার্থী শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় পার্টির মনোনীত লাঙলের প্রার্থী মো. শহীদ আলম ও সিপিবির কাস্তে মাকার্র প্রার্থী চিত্তরঞ্জন গোলদার।

আসন্ন নির্বাচন ঘিরে প্রচার-প্রচারণায় নৌকা প্রার্থী এগিয়ে থাকলেও কৌশলে এগোচ্ছেন ধানের শীষের প্রার্থী। গ্রেফতার-মামলা এড়াতে তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচারণা চালাচ্ছেন।

খুলনা জেলা নির্বাচন অফিসের তথ্যানুযায়ী, খুলনা-৫ আসনের ডুমুরিয়া উপজেলায় মোট ভোটার দু’লাখ ৪২ হাজার ১৯৭ জন। আর ফুলতলা উপজেলায় মোট ভোটার এক লাখ ২৯ হাজার ৩ জন।

খুলনা-৫ আসন ডুমুরিয়া ও ফুলতলা উপজেলা নিয়ে গঠিত। বরাবরই এ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীরাই এগিয়ে ছিলেন। ১৯৭৩ সালের প্রথম সংসদ নির্বাচনে এই আসন থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী এনায়েত আলী সানা। ৭৯’র নির্বাচনে বিজয়ী হন আওয়ামী লীগ নেতা সালাউদ্দিন ইউসুফ। ৮৬ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টির আবদুল গফফার নির্বাচিত হন। ১৯৯১ সালে ফের আওয়ামী লীগের সালাউদ্দিন ইউসুফ নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালে এ আসনে পুনরায় নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের সালাউদ্দিন ইউসুফ। কিছুদিন পর সালাউদ্দিন ইউসুফ মারা গেলে উপ-নির্বাচনে জয়লাভ করেন ডুমুরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নারায়ণ চন্দ্র চন্দ। ২০০১ সালের নির্বাচনে এ আসনে জামায়াতের মিয়া গোলাম পরওয়ার ১ লাখ ৫ হাজার ৭৪০ ভোট পেয়ে জয়লাভ করেন। ১ লাখ ১ হাজার ১৯২ ভোট পেয়ে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হন আওয়ামী লীগের নারায়ণ চন্দ্র চন্দ।

২০০৮ সালের নির্বাচনেও বিজয়ী হন নারায়ণ চন্দ্র চন্দ। তিনি পেয়েছিলেন ১ লাখ ৪৪ হাজার ৬০০ ভোট। আর জামায়াতের গোলাম পরওয়ার পেয়েছিলেন ১ লাখ ৫ হাজার ৩২২ ভোট। ২০১৪ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন নারায়ণ চন্দ্র চন্দ।

আসনটিতে আওয়ামী লীগের আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, নারায়ণ চন্দ্রের সঙ্গে ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব মনোনয়নবঞ্চিতরা নির্বাচনী মাঠে তেমন সক্রিয় না থাকায় কিছুটা বেকায়দায় পড়েছেন নৌকার এ বর্ষীয়াণ প্রার্থী। দলের অনেক নেতা-কর্মী কিছুটা চুপ থাকায় মৎস্যমন্ত্রীকে ভোটের মাঠে কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে।

এছাড়া জামায়াতের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত এ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর গলার কাঁটা মহাজোটের অংশ জাতীয় পার্টির প্রার্থী।

তবে আওয়ামী লীগ সরকার এলাকার অনেক উন্নয়ন করেছে এমন দাবি করে নারায়ণ চন্দ ভোটারদের মন জয় করতে চূড়ান্ত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি ও তার সমর্থকরা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন। অন্যদিকে আগামী নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আসনটি পুনরুদ্ধার করতে চায় ২০ দলীয় জোট। কিন্তু মামলা ও গ্রেফতারে প্রচার-প্রচারণায় কোনঠাসা হয়ে পড়েছেন ধানের শীষের প্রার্থী ও সমর্থকরা।

বাংলাদেশ সময়: ১০৫০ ঘণ্টা,  ডিসেম্বর ২৫, ২০১৮
এমআরএম/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।