রোববার (৬ জানুয়ারি) দুপুর ১টার ২০ মিনিটে শহরের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা খলিলুর রহমানের ইমামতিতে সৈয়দ আশরাফের নামাজে জানাজা শেষ হওয়ার পর সর্বস্তরের জনগণ তার কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এরআগে যথাযথ মর্যাদায় তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।
এরপর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সমবেত লাখো জনতার উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন- কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এমপি, মরহুমের পরিবারের পক্ষ থেকে ছোট ভাই ড. সৈয়দ মুঞ্জুরুল ইসলাম, চাচাতো ভাই জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটু।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- কিশোরগঞ্জ-৪ (ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম) আসনের সংসদ সদস্য ও রাষ্ট্রপতির বড় ছেলে রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক, কিশোরগঞ্জ-৫ (বাজিতপুর-নিকলী) আসনের সংসদ সদস্য মো. আফজাল কিশোরগঞ্জ-৬ (ভৈরব-কুলিয়ারচর) আসনের সংসদ সদস্য মো. নাজমুল হাসান পাপন, জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী, পুলিশ সুপার মো. মাশরুকুর রহমান খালেদ, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক কৃষিবিদ মো. মশিউর রহমান হুমায়ুন, মো. আনোয়ারুল কবির, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট কামরুল আহসান শাহজাহান, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এম এ আফজল প্রমুখ।
এদিকে, শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে আশরাফের নির্বাচনী এলাকাসহ জেলা আওয়ামী লীগ ও সর্বস্তরের জনতার অংশগ্রহণে জানাজা সম্পন্ন হয়। এজন্য ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে করে শোলাকিয়ায় নেওয়া হয় মরহুমের মরদেহ।
তার জানাজায় অংশ নেওয়ার জন্য সকাল থেকেই শোলাকিয়া ময়দানে জনসমাগম বাড়তে থাকে। বেলা ১২টা নাগাদ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় শোলাকিয়া ময়দান।
এখানে আগত শোকাহত নেতাকর্মী ও জনতা বলছেন, তারা সৈয়দ আশরাফকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে এবং তার জানাজায় অংশ নিতে এসেছেন শোলাকিয়ায়। প্রিয় নেতার স্মরণে কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের সব দোকান-পাট বন্ধ রয়েছে আগে থেকে। কালো ব্যাজ ধারণ করেছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ আশরাফের শুভানুধ্যায়ীরা।
জানাজা শেষে তার মরদেহ হেলিকপ্টারে করে কিশোরগঞ্জ থেকে ময়মনসিংহে নেওয়া হয়।
এর আগে, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় সম্পন্ন হয়েছে সৈয়দ আশরাফের প্রথম নামাজে জানাজা। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদসহ সর্বস্তরের জনতার অংশগ্রহণে এ জানাজা শেষে মরহুমকে সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ‘গার্ড অব অনার’ দেওয়া হয়।
এরপর তার মরদেহে শ্রদ্ধাঞ্জলি দেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। তারপর মরহুমের মরদেহে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
সংসদ ভবন প্লাজায় জানাজা শেষে সৈয়দ আশরাফের মরদেহ হেলিকপ্টারে রওয়ানা করা হয় কিশোরগঞ্জে। শোলাকিয়া ঈদগাঁহ ময়দানে দ্বিতীয় নামাজে জানাজার পর তার তৃতীয় জানাজা হবে দুপুর ২টায় ময়মনসিংহের আঞ্জুমান ঈদগাঁহ মাঠে। সেখান থেকে ফের ঢাকায় এনে বাদ আসর বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে সৈয়দ আশরাফকে।
দীর্ঘদিন ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করে গত ৩ জানুয়ারি রাতে ব্যাংককের একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামের সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ আশরাফ।
ব্যাংকক থেকে ৪ জানুয়ারি একটি ফ্লাইটে ঢাকায় আনা হয় তার মরদেহ। বিমানবন্দর থেকে সৈয়দ আশরাফের মরদেহ অ্যাম্বুলেন্সযোগে নিয়ে যাওয়া হয় তার বেইলি রোডের বাসায়। সেখানে মরহুমকে শেষশ্রদ্ধা নিবেদন করেন দীর্ঘদিনের সহযোদ্ধা-সহকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীরা।
এরপর তার মরদেহ নিয়ে রাখা হয় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) হিমঘরে। সেখান থেকেই সকালে সৈয়দ আশরাফের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৬, ২০১৮
এইচএ/এসআই
** আশরাফের জানাজা শেষ, রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
** সৈয়দ আশরাফের জানাজায় জনতার ঢল
** সাড়ে ১০টায় সৈয়দ আশরাফের জানাজা, সবার জন্য উন্মুক্ত
** শোলাকিয়া মাঠে সৈয়দ আশরাফের জানাজায় জনসমুদ্র