৩০ জানুয়ারি একাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হবে। এ অধিবেশন শুরুর আগেই সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্যরা নির্বাচিত হতে পারেন।
জাতীয় সংসদ (সংরক্ষিত মহিলা আসন) নির্বাচন আইন অনুযায়ী গ্রেজেট প্রকাশের পর ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে সংরক্ষিত আসনের নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন (ইসি) ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে। সংসদের ৩০০ আসনে সরাসরি ভোটে নির্বাচিত দল ও জোটের এমপিরা সংরক্ষিত আসনের ভোটার হবেন। গত ১ জানুয়ারি একাদশ জাতীয় সংসদে ৩০০ আসনে নির্বাচিত এমপিদের গ্রেজেট প্রকাশ করা হয়েছে।
এবার সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচনের জন্য আগামী সপ্তাহে তফসিল ঘোষণা করা হবে বলে বৃহস্পতিবার(১০ জানুয়ারি) ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। এ সময়ের মধ্যে তফসিল ঘোষণা হলে ৩০ জানুয়ারি সংসদ অধিবেশন শুরুর আগেই সংরক্ষিত আসনের নির্বাচন শেষ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রাপ্ত আসন অনুযায়ী সংরক্ষিত ৫০টি আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ পাবে ৪৩টি। এরপর বিরোধীদল জাতীয় পার্টি ৪টি, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ১টি এবং স্বতন্ত্র ও অন্যান্য দল মিলে ২টি আসন পাবে। নিয়ম অনুযায়ী প্রতি ৬টি আসনের বিপরীতে যে কোনো দল বা জোট ১টি সংরক্ষিত আসন পাবে। সে হিসেবে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ, বিকল্পধারাসহ অন্যান্যদের কোনো সংরক্ষিত আসন পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে জোটের শরিক হিসেবে নৌকা মার্কা নিয়ে নির্বাচন করায় আওয়ামী লীগ দুই-একটি আসন ছেড়ে দিতে পারে। সেটা আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে।
দশম সংসদে ১৪ দলের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টি ৬টি আসনে নির্বাচিত হওয়ায় একটি সংরক্ষিত আসন পায়। জাসদ ৫টি আসনে নির্বাচিত হলেও আওয়ামী লীগ একটি সংরক্ষিত আসন ছেড়ে দেয়। এছাড়া ন্যাপের কোনো সংসদ সদস্য না থাকলেও আওয়ামী লীগের কোটায় এ দল থেকে একজনকে সংরক্ষিত এমপি করা হয়েছিলো। এবার ওয়ার্কার্স পার্টি থেকে ৩টি, জাসদ (ইনু) ২টি এবং জোটের অন্যান্যরা ১টি করে আসনে নির্বাচিত হয়েছে। এছাড়া মহাজোটের শরিক বিকল্পধারা ৩টি আসন পেয়েছে।
এদিকে একাদশ জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে এমপি হতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা ইতোমধ্যেই তৎপর হয়েছে উঠেছেন। তারা দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। অনেকেই প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে গিয়ে শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করছেন। আবার অনেকে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতা এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আস্থাভাজনদের সঙ্গে দেখা করে মনোনয়ন পাওয়ার চেষ্টা করছেন।
আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নতুন নেতৃত্ব তৈরি এবং সুযোগ দেওয়ার জন্য এবার সংরক্ষিত আসনে নতুন মুখ প্রাধান্য পাবেন। নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে সংরক্ষিত আসনগুলো পূরণ করা হবে। ফলে দশম সংসদে যারা এমপি রয়েছেন তাদের অধিকাংশ একাদশ সংসদে বাদ পড়বেন। সরাসরি দলের রাজপথের নেতাকর্মীর পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণীয় পেশার সঙ্গে যুক্ত থেকে যারা দলের জন্য অবদান রেখে যাচ্ছেন তাদের মধ্যে থেকেও সংরক্ষিত আসনের এমপি করার সম্ভাবনা রয়েছে। এদের মধ্যে দলের অঙ্গ-সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বিশেষ করে ছাত্রলীগের সাবেক নেত্রী, মহিলা আওয়ামী লীগ ও যুব মহিলা লীগের নেত্রীরাও থাকবেন। এ সংগঠনগুলোর কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের নেত্রীরা মনোনয়নের জন্য জোর তৎপরতা শুরু করেছেন। এদের পাশাপাশি সামাজিক, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত নারী নেত্রীরাও তৎপরতা রয়েছেন। দশম সংসদের এমপিরও চেষ্টা তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন পুনরায় মনোনয়ন পাওয়ার জন্য।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০১৯
এসকে/এসএইচ